হাসারাঙ্গা জানতেন, কীভাবে ফিরে আসতে হবে
বিশ্বকাপ তাঁর কাছে যেন বড় কিছু করারই উপলক্ষ। নিজের খেলা প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই হয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। বিশ্বকাপের পরও শ্রীলঙ্কার পারফরম্যান্স যেমনই হোক না কেন, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ঠিকই তাঁর মতো পারফর্ম করে গেছেন।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপে হাসারাঙ্গা ৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট–সেরা। ছন্দে থেকেই বিশ্বকাপে এসেছেন এই লেগ স্পিনার।
বিশ্বকাপের শুরুটাও করেছেন দুর্দান্ত। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচেও হাসরাঙ্গা পারফর্ম করেছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছেন ২৫ রানে ২ উইকেট।
নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত কিংবা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দারুণ বল করা এই স্পিনার প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হন পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে মার্কাস স্টয়নিস–ঝড়ে ভুলে যাওয়ার মতো কিছু ‘রেকর্ড’ সঙ্গী হয়েছেন হাসারাঙ্গা।
মাত্র ৩ ওভারে ১৭.৬৬ ইকোনমিতে দেন ৫৩ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে ন্যূনতম ৩ ওভার বল করা স্পেলের মধ্যে এর চেয়ে বেশি খরুচে স্পেল আছে একটি। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ওভারে ১৮.৬৬ ইকোনমিতে ৫৬ রান দিয়েছিলেন ইজাতউল্লাহ দৌলতজাই।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ২ ওভার ৫ বলেই ৫০ রানের দিয়েছিলেন হাসারাঙ্গা। এর চেয়ে দ্রুততম ৫০ রান দেওয়ার রেকর্ড ছিল শুধু একজনের, ২০২০ সালে ২.৩ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫০ রান দিয়েছিলেন হামিশ বেনেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৫০ রান দেন হাসারাঙ্গা।
পার্থের বাউন্সি পিচ আর ছোট স্ট্রেট বাউন্ডারির কারণে স্পিনারদের জন্য বল করা কঠিন ছিল, তবে হাসারাঙ্গা এতটা খারাপ করবেন, সেটা হয়তো কেউই ভাবেনি। এমন খরুচে এক স্পেলের পর বড় দলগুলোর বিপক্ষে হাসারাঙ্গা কতটা কার্যকরী, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তবে হাসারাঙ্গা জবাব দিতে খুব একটা সময় নেননি। পরের ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে নেন ১ উইকেট। আর আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ ওভার করে মাত্র ১৩ রান দেন হাসারাঙ্গা। হজম করেননি একটি বাউন্ডারিও। নিয়েছেন ৩ উইকেট।
আফগানিস্তান ম্যাচের জয়ের নায়ক হাসারাঙ্গা নিজেও মনে করেন, তিনি ভালোভাবেই ফিরে এসেছেন। আর কীভাবে ফিরে আসতে হয়, সেটাও তাঁর অজানা নয়, ‘পার্থে আমি বেশ খরুচে ছিলাম। ওই পিচটা ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভালো ছিল। তবে আমি জানতাম, কীভাবে আমি ফিরে আসতে পারি। আমার মনে হয়, আমি সেটা পেরেছি। আমি জানতাম, এই মাঠের বড় বাউন্ডারিতে কীভাবে বল করতে হবে।’
এই জয়ে সেমিফাইনাল–স্বপ্ন এখনো টিকে আছে শ্রীলঙ্কার। এমন বাঁচা–মরার ম্যাচে সেরাটা দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না তাদের কাছে, ‘অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে হেরেছিলাম। আজ আমাদের সেরাটা খেলতেই হতো। সর্বশেষ ম্যাচে এই মাঠে জাম্পা ভালো বল করেছে। তা দেখার পর চেষ্টা করেছি গতির পরিবর্তন করে স্টাম্পে বল করতে।’