সাকিবকে এক ম্যাচের জন্য পেতে যে কারণে মরিয়া ছিল সারে
বাংলাদেশ দল পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করে দেশে ফিরেছে ৩ সেপ্টেম্বর। সামনে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে ঢাকা ছেড়ে যাবে ১৫ সেপ্টেম্বর। মাঝের সময়টা অল্প হলেও কাউন্টি খেলতে ইংল্যান্ডে চলে গেছেন সাকিব আল হাসান। সারের হয়ে খেলবেন একটাই ম্যাচ। যা শুরু হওয়ার কথা আজ।
কিন্তু সাকিবকে মাত্র এক ম্যাচের জন্য লন্ডনে উড়িয়ে নিতে কেন আগ্রহী হলো সারে? সাধারণত পুরো মৌসুম অথবা ৫–৬ ম্যাচের জন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। এক ম্যাচের জন্য খেলোয়াড় নেওয়া মানে দলের সঙ্গে, পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারার ঝুঁকি থাকে। সাকিব অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হলেও তাঁর ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। কিন্তু এ যাত্রায় সারে তাঁকে এক ম্যাচের জন্য হলেও কেন পেতে চাইল?
প্রথমেই দেখে নেওয়া যাক সারে এখন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ডিভিশন ওয়ানে কোথায় অবস্থান করছে। গত দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি এই মুহূর্তে ১১ ম্যাচে ১৯৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় সবার ওপরে আছে। ২৪ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে সমারসেট। আর আজ টন্টনে শুরু ম্যাচে সমারসেটই সারের প্রতিপক্ষ।
শিরোপা লড়াইয়ের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সমারসেটের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সারে সাকিবকে নেওয়ার কারণ খেলোয়াড়–স্বল্পতা। বর্তমানে সারের আটজন খেলোয়াড় ইংল্যান্ড জাতীয় দলের খেলায় ব্যস্ত। কেউ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চলমান টেস্ট সিরিজে, আর কেউবা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের (১১ সেপ্টেম্বর শুরু) প্রস্তুতিতে।
আটজনের মধ্যে আছেন উইল জ্যাকস ও ড্যান লরেন্স, যাঁরা মূলত স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে দলে ছিলেন। এ ছাড়া ওলি পোপ, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি স্মিথ, স্যাম কারেন, রিস টপলি, সাই সুদর্শন এবং জেমি ওভারটনদেরও পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন যে ম্যাচের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াডই গড়া যাচ্ছিল না। যে কারণে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাল বলের ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া টম কারেনকেও দলে ফিরিয়ে আনতে হয়েছে।
খেলোয়াড়–স্বল্পতার বিষয়টি তুলে ধরে সারের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট অ্যালেক স্টুয়ার্ট বলেন, ‘আমরা জানতাম, মৌসুমের একটা নির্দিষ্ট সময়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ক্রিকেটার ইংল্যান্ড দলের দায়িত্বে চলে যাবে। বিশেষ করে দুজন স্পিনিং অলরাউন্ডারকে আমরা মিস করব।’
সাকিবের সঙ্গে সারের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল ৪–৫ ম্যাচ খেলা নিয়ে। ভারত সিরিজে যদি না খেলতেন, সেটিই হয়তো হতো। কিন্তু সাকিব সিরিজটিতে খেলছেন বলে তাঁকে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও পেতে মরিয়া ছিল সারে, ‘যখন আমাদের কাছে সাকিবের মানের একজন খেলোয়াড় আনার সুযোগ হয়েছে, সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ ছিল। সাকিব ব্যাট এবং বল হাতে ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও অসাধারণ স্কিল যোগ করবে, যা সারেতে দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা।’
ইএসপিএনক্রিকইনফোর খবরে বলা হয়, সারে সাকিবকে নিয়েছে সাই সুদর্শনের জায়গায়। ভারতের ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটিং অলরাউন্ডারকে দুলীপ ট্রফিতে ডেকে পাঠিয়েছে বিসিসিআই, যা বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেও দেখছে ভারত।
যার পরিবর্তেই আসুন, সাকিবও চান সারেতে স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতে নিজের সামর্থ্যের ছাপ রাখতে, ‘সারে পৃথিবীর অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ক্লাব। এখানে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি এখানে এসেছি, ছাপ রাখতে চাই এবং দলকে লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করতে চাই।’
সারের হয়ে সাকিব যে মাঠে খেলবেন, সেই টন্টনে তাঁর একটি সেঞ্চুরিও আছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে এ মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এর আগে কাউন্টিতে উস্টারশায়ারের হয়ে ৯টি চার দিনের ম্যাচে খেলেছেন সাকিব। রান করেছেন ৪১২, উইকেট ৪২টি।