ওয়েলিংটনের বাতাস, কিছুটা মেঘলা আকাশ, সঙ্গে বেসিন রিজার্ভের সবুজাভ পিচ—দ্যুতি ছড়ানোর জন্য পেস বোলারদের আর কী লাগে!
নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার তাই টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। কন্ডিশনের পূর্ণ সুবিধা পেয়ে কিউই পেসাররাও তোপ দাগতে ভুল করেননি। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ইনিংসজুড়ে ভুগিয়েছেন ম্যাট হেনরি, জ্যাকব ডাফি ও নাথান স্মিথ। সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন অভিজ্ঞ হেনরি। তাঁর তোপে অল্পতেই গুটিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। রান তাড়ায় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড তুলে নিয়েছে অনায়াস জয়।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩.৪ ওভারে ১৭৮ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। সহজ লক্ষ্যটা ৯ উইকেট ও ১৪২ বল বাকি রেখে টপকে গেছে নিউজিল্যান্ড। একপেশে জয়ের মাঝেও কিউইদের কারও যদি কোনো আক্ষেপ থেকে থাকে, সেটা উইল ইয়াংয়ের। এই ওপেনার অপরাজিত ছিলেন ৯০ রানে। মনে মনে তাই তিনি বলতেই পারেন, শ্রীলঙ্কাকে আরও কিছু রান করতে দিলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরিটা পেয়েই যেতেন!
এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হ্যামিল্টনের বেসিন রিজার্ভে।
নিউজিল্যান্ডকে এর আগেও ওয়ানডেতে চারবার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্যান্টনার। তবে সাদা বলের স্থায়ী অধিনায়ক হওয়ার পর এটিই তাঁর প্রথম ওয়ানডে। আর ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে এটি ছিল ৪ বছর পর প্রথম ওয়ানডে; শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৮ বছর পর প্রথম। ১৯৯৭ সালের সেই ম্যাচে সনাথ জয়াসুরিয়া ছিলেন লঙ্কান দলের ওপেনার, এবার তিনি প্রধান কোচ।
আজ হেনরি, ডাফি, স্মিথদের দারুণ বোলিং ও অধিনায়ক স্যান্টনারের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে ১০ ওভারের মধ্যে ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা।
এরপর পঞ্চম উইকেটে ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্ডো ও ছয়ে নামা জানিত লিয়ানাগের ৮৭ রানের জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার আভাস দেয় সফরকারীরা। কিন্তু স্যান্টনার বোলিংয়ে আসার কিছুক্ষণ পরেই লিয়ানাগেকে ফিরিয়ে ভাঙেন এই জুটি। পরের ওভারে আভিস্কাকে (৫৬) আউট করেন নাথান স্মিথ।
১১০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শ্রীলঙ্কা এরপরও পৌনে দুই শ পেরিয়েছে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও চামিন্দু বিক্রমাসিংহের সৌজন্যে। সপ্তম উইকেটে তাঁরা যোগ করেন ৪৮ রান। দুজনকেই শিকার করেছেন ম্যাট হেনরি। এরপর নিয়েছেন ঈশান মালিঙ্গার উইকেটও। ১০ ওভারে ১৯ রানে ৪ উইকেট; ইকোনমি রেট ১.৯০—সংখ্যাগুলোই বলে দেয় হেনরি আজ কতটা ভয়ংকর ছিলেন।
সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং। ১২.৩ ওভারে দলীয় ৯৩ আর ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হন রবীন্দ্র। তাঁকে ফিরিয়েছেন বিক্রমাসিংহে। এরপর মার্ক চ্যাপম্যানকে (২৯*) নিয়ে বাকিটা পথ হেসেখেলে পাড়ি দেন ইয়াং।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ৪৩.৪ ওভারে ১৭৮ অলআউট
(আভিস্কা ৫৬, লিয়ানাগে ৩৬, হাসারাঙ্গা ৩৫; হেনরি ৪/১৯, ডাফি ২/৩৯, স্মিথ ২/৪৩)।
নিউজিল্যান্ড: ২৬.২ ওভারে ১৮০/১
(ইয়াং ৯০*, রবীন্দ্র ৪৫, চ্যাপম্যান ২৯*; বিক্রমাসিংহে ১/২৮)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ম্যাট হেনরি।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।