মোস্তাফিজ কেন অটো চয়েস
আফগানিস্তানের ইনিংসের সেটি ১৭তম ওভার। জয়ের জন্য আফগানিস্তানকে করতে হতো ৪ ওভারে ৪৩ রান। সেই সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক বল তুলে দিলেন দলের ‘সেরা’ বোলার মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে। কিন্তু মোস্তাফিজ সেই ওভারে দুটি ছক্কাসহ দিলেন ১৭ রান। আগের দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান দেওয়া মোস্তাফিজকে আর বোলিংয়েই আনলেন না সাকিব।
৯ বল হাতে রেখে আফগানিস্তান ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৭ উইকেটে। এই ম্যাচের পর চলছে বাংলাদেশের ব্যাটিং–বোলিংয়ের কাটাছেঁড়া। ব্যাটসম্যানরা যে ব্যর্থ হয়েছেন, সেটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে মাত্র ১২৭ রান তোলার পর ব্যাটসম্যানদের সমালোচনা তো হবেই। অল্প পুঁজি নিয়েও ভালোই লড়াই করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু মোস্তাফিজের ওই ওভারটি যেন সবকিছু এলোমেলো করে দিল!
ম্যাচ শেষে মোস্তাফিজকেও তাই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন অনেকে। আজ দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমিতে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের আগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল—মোস্তাফিজ কি এখনও দেশসেরা পেসার? তাঁকে যে অটো চয়েজ ধরা হয়, সেই প্রথা কি ভাঙার সময় এসেছে?
এটা খুব উদ্বেগজনক যে, গত ১৫-১৬ ম্যাচে মোস্তাফিজ সেভাবে উইকেট পাচ্ছে না, ইকোনমি রেটও ভালো না। তবে অটো চয়েজ বলে কিছু নেই।’খালেদ মাহমুদ
মাহমুদ এর উত্তরে বলেছেন, ‘হয়তো বা, আমি জানি না। আমরাও এটা নিয়ে একটু উদ্বিগ্ন। আমরাও যে জানি না, তা না। প্রশ্নটা একদম নতুন না আমাদের কাছে। আমরা যে এটা নিয়ে ভাবছি না, তা না।’ এরপর তিনি যোগ করেন, ‘তবে আমি বিশ্বাস করি, সে এখনও সেরাদের একজন। ওর যে বৈচিত্র্য আছে বোলিংয়ে, সেটা হয়তো আমাদের অনেক পেসারের নেই। হয়তো ওই বৈচিত্র্য কাজে লাগছে না বা ও বাস্তবায়ন করতে পারছে না। কিছু একটা হচ্ছে। এটা খুব উদ্বেগজনক যে, গত ১৫-১৬ ম্যাচে মোস্তাফিজ সেভাবে উইকেট পাচ্ছে না, ইকোনমি রেটও ভালো না। তবে অটো চয়েজ বলে কিছু নেই।’
এরপরও দল নির্বাচনের সময় কেন মোস্তাফিজকে এগিয়ে রাখেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মাহমুদ, ‘তারপরও এই সংস্করণে আমরা সব সময় ওকে এগিয়ে রাখি। ওর অভিজ্ঞতা, আইপিএলে খেলে, সব কিছু মিলিয়ে এই সংস্করণে আমাদের ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে মোস্তাফিজই। তো ওই হিসেবে মোস্তাফিজকে এগিয়ে রাখা হয়।’
মাহমুদের কথার শেষ এখানেই নয়। মোস্তাফিজকে নিয়ে এরপর যোগ করেন, ‘গত ২ বছর সে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছে না, এটা আমাদের সবার জন্য উদ্বেগের ব্যাপার। আমি এখনো বিশ্বাস করি, মোস্তাফিজ এখান থেকে বের হয়ে আসবে, দলকে আবার ম্যাচ জেতাবে। এই বিশ্বাসটা আমাদের সবারই আছে।’
জাতীয় দলের প্রতি মোস্তাফিজের নিবেদন নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল মাহমুদকে। এর উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় দলের প্রতি ওর নিবেদন নেই বলে আমি মনে করি না। আমি যখন লাল সবুজের জন্য খেলব, আমার দেশের জন্য খেলব, তখন আমি মনে করি না, কোনো খেলোয়াড়েদের মধ্যে সেই ঘাটতিটা থাকবে। অনুশীলনেও সে খুব সিরিয়াস, হচ্ছে না, কোনো একটা বাধা হয়তো আছে। এখান থেকে মুস্তাফিজ যত তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবে, আমাদের ক্রিকেটের জন্য ততই মঙ্গল।’