দুই বছরে নতুন সাকিব-মুশফিক তৈরি করবেন সিডন্স
একদিন সাদমান ইসলাম, আরেক দিন মুমিনুল হক। জেমি সিডন্সের নেটে প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ আসছেন। লম্বা সময় ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছেন। আর এই অস্ট্রেলীয় কোচ ক্রিকেটারদের সঙ্গে সময় নিয়ে কাজ করার বিষয়টি বেশ উপভোগও করছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফেরা সিডন্স শুরু থেকেই চাইছিলেন জাতীয় দলের পরিধির বাইরে থেকে কাজ করতে। কিন্তু জাতীয় দলের ব্যস্ততায় সেটা আর হচ্ছিল না।
অবশেষে সেই সুযোগ পাচ্ছেন সিডন্স। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ‘এ’ দল ও বাংলাদেশ টাইগার্সের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সিডন্সের প্রতিশ্রুতি, নতুন দায়িত্বে দুই বছর সময় পেলে সাকিব-মুশফিক মানের ক্রিকেটার তৈরি করে দেবেন। আজ প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সময় লাগবে। আমি যদি দুই বছর এই দায়িত্বে থাকি, তাহলে হয়তো সাকিব বা মুশির মানের ক্রিকেটার পেয়ে যাবেন।’
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে মুমিনুলের সঙ্গে তাঁর নেট সেশনের উদাহরণ টানেন, ‘আজ আমরা একটা শট নিয়ে কাজ করেছি। এটা ম্যাচে কাজে লাগাতে ছয়-সাত মাস লেগে যেতে পারে। মাত্র একটা শটের কথা বলছি কিন্তু। মুমিনুলের হাতে পুল শট নেই। আমরা এখনো পুল শটে যাইনি। এসব দক্ষতা ম্যাচে কাজে লাগাতে হয়তো ১২ মাসের মতো সময় লেগে যাবে।’
২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন সিডন্স। সে সময় সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমদের ক্যারিয়ারে বড় ছাপ রেখে গেছেন। আজ সব ধরনের শট খেলার সামর্থ্য প্রসঙ্গেও পুরোনো ছাত্র মুশফিকের উদাহরণ দিলেন এই অভিজ্ঞ কোচ, ‘ধীরে ধীরে ছেলেদের সব দুর্বলতা কমিয়ে আনতে পারলেই ওরা ভালো ক্রিকেটারে পরিণত হবে। মুশি (মুশফিক) সব শট খেলতে পারে। এ কারণে সে ছন্দে থাকলে তাকে থামিয়ে রাখা কঠিন। অন্যদেরও ওই মানে পৌঁছে দিতে হবে। সব শট খেলতে পারতে হবে।’
ক্রিকেটারদের দক্ষতা বাড়ানোর এই প্রক্রিয়ায় যে সময় দরকার, সেটি জাতীয় দলের অনুশীলনে সম্ভব নয়। ক্রিকেটাররা যে সেখানে ম্যাচ খেলার প্রস্তুতি মধ্যেই থাকেন, ‘ওখানে অনুশীলনের সময় সীমিত। আজ মুমিনুলের সঙ্গে যে দুই ঘণ্টা কাজ করলাম, সেটা জাতীয় দলে সম্ভব নয়। কারণ, ওরা সব সময় সফরে ব্যস্ত। আর ম্যাচ বা সিরিজের সময় খেলার ধরনে পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব। জাতীয় দলের নেটে বল এদিক-ওদিক উড়তে থাকে, এক নেট থেকে আরেক নেটে ছেলেরা আসা-যাওয়া করতে থাকে। এটা আসলে কোচিং নয়। আমি এখানে মুমিনুলকে ব্যাকলিফট শেখাতে পারছি। সুইপ শট, পুল শট নিয়ে কাজ করছি। এই শিক্ষা ও টেস্ট ক্রিকেটে কাজে লাগাতে পারলেই আমার ভালো লাগবে। এটাই আসল কোচিং।’
* জেমি সিডন্সের পুরো সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকাল প্রথম আলো পত্রিকা ও অনলাইন সংস্করণে।