বাবরকে চাপে ফেলতে না পারার আক্ষেপ মাশরাফির
‘ভিনি, ভিডি, ভিসি’—এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। কথাটা রোমান নৃপতি জুলিয়াস সিজারের। তবে আজ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্স–রংপুর রাইডার্স ম্যাচ শেষে বাবর আজমও এমন কথা বলতে পারেন।
গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছে আজ মাঠে নেমেই দল জিতিয়েছেন। তাঁর অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংসে সিলেটকে ৪ উইকেটে হারায় রংপুর। তবে ম্যাচ শেষে পাকিস্তানি তারকাকে চাপে না ফেলার আক্ষেপ ঝরেছে সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কণ্ঠে।
মাশরাফির সিলেট আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১২০ রান তুলেছিল। ১০ বল হাতে রেখে ম্যাচটি জিতেছে রংপুর। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আরও ২০–২৫ রান করতে না পারার আক্ষেপ করেছেন মাশরাফি। সেটা করতে পারলে বাবরকে চাপে ফেলা যেত বলে মনে করেন তিনি।
মাশরাফি বলেছেন, ‘ওর (বাবর) জন্য খুব আইডিয়াল ম্যাচ এটা। কারণ, বলে বলে রান করা ওর জন্য খুব সহজ। এই কাজে ও মাস্টার আমার কাছে মনে হয়। তো রানটা যদি ১৪০ হতো তখন ওর জন্য খুব কঠিন হতো। ওর ব্যাটিংয়ের যে ধরন ১২০ বলে ১২০ করা এক হিসাব, ১৪০ করা আরেক হিসাব। এ জন্য বলছিলাম, মাঝের ওভারে ৩-৪ রান করে তিন-চারটা ওভার দেওয়া গেলে ও (বাবর) চাপটা টের পেত। যেটা হয়তো বা আমরা পারিনি।’
৬ চারে ৪৯ বলে ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলেন বাবর। ঘরোয়া টি–টোয়েন্টিতে তাঁর ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ১২৯.১২। আজ তাঁর চেয়েও কম স্ট্রাইক রেটে (১১৪.২৮) ব্যাট করে দল জিতেয়েছেন বাবর। এর অর্থ হলো, ওভারপ্রতি গড়ে ৬ রান করে তোলার লক্ষ্যে ওপেনিংয়ে নেমে তেমন চাপ অনুভব করেননি। কারণ, বলে বলে রান তোলা তাঁর ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি।
এ ম্যাচে এর চেয়ে বেশি কিছু করতে হয়নি বাবরকে। এমনিতে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে বাবরের স্ট্রাইক রেট (১২৯.১২) পাকিস্তানেই মাঝেমধ্যে সমালোচনা হয়। তিনি বড় শট খেলার ব্যাটসম্যান না—এমন একটা মতামতও প্রচলিত আছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। মাশরাফির কথায় প্রচ্ছন্নভাবে হলেও এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
মাশরাফি বলেছেন, ‘(ম্যাচে) যে পরিস্থিতি ছিল, অবশ্যই বাবর আজম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, কিন্তু এমন না যে ও “হিট” (শট খেলা) করে ম্যাচ জেতাবে…আমরা প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ দিতে পারিনি। স্ট্রাইক অদল–বদল করে খেলতে না পারলে তাকে শটস খেলতে হতো, তখন ভুল করত। বাবর আজম ও রকম শটস খেলা প্লেয়ার না, যে শটস খেলে ম্যাচের গতি পাল্টে দেবে। ওই চাপটা আমরা কোনো দিক থেকেই তৈরি করতে পারিনি।’
সিলেট অধিনায়ক বোঝাতে চেয়েছেন, স্কোরবোর্ডে আরও অন্তত ২০ রান যোগ হলে বাবরকে প্রত্যাশিত চাপে ফেলা যেত। তখন শট খেলতে গিয়ে ভুলের খেসারত দিয়ে তিনি আউটও হতে পারতেন আর তাতে ম্যাচের ফলও অন্য রকম হতে পারত।
সিলেটের হয়ে ব্যাটিংয়ে আজ কেউ–ই তেমন ভালো করতে পারেননি। দুই বিদেশি বেনি হাওয়েল ও বেন কাটিং ৩৭ রান করেন। এরপর শুধু নাজমুলই রানসংখ্যা দুই অঙ্কে (১৪) নিতে পেরেছেন।