‘শর্করা কম, আমিষ বেশি’—ছক্কা মারতে গেলে যা দরকার মনে করেন ইমাম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের সময় পাকিস্তান ওপেনার ইমাম-উল-হকএএফপি

পাকিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ছক্কা মারতে গেলে ‘শর্করার চেয়ে আমিষ বেশি খেতে চাওয়া’র কথা বলেছেন ইমাম-উল-হক। চেন্নাইয়ে আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে এমন বলেন পাকিস্তান ওপেনার।

এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান মিলে ৪ ম্যাচে খেলা মোট ১২ ইনিংস ছয় মেরেছেন মাত্র ৫টি ছক্কা। এ তালিকায় পাকিস্তানের নিচে আছে শুধু নেদারল্যান্ডসের টপ অর্ডার। গত বিশ্বকাপের পর থেকে এবারের আসরে খেলা দলগুলোর মাঝে পাকিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের চেয়ে কম ছক্কা শুধু বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার। অবশ্য শুধু টপ অর্ডার নয়, ছক্কা মারার দিক দিয়েই অনেক পিছিয়ে পাকিস্তান। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত (ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে) সবচেয়ে কম ১৫টি ছক্কা মেরেছে তারা। অবশ্য চারের দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে তারা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৯টি চার পাকিস্তানের। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের চার মারার দিক দিয়ে মাঝামাঝি অবস্থানে আছে তারা।

তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচের পর আবারও পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের ছক্কা না মারার ব্যাপারটি আলোচনায় এসেছে। বেঙ্গালুরুর অপেক্ষাকৃত ছোট মাঠে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ মিলেই সে ম্যাচে মারেন ১৮টি ছক্কা, সেখানে পাকিস্তানের পুরো ইনিংসে ছিল মাত্র ৬টি। এ বছর প্রথম পাওয়ারপ্লেতে (১-১০ ওভারের মধ্যে) এখন পর্যন্ত কোনো ছক্কাই মারতে পারেনি পাকিস্তান।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে অনুশীলনে ইমাম (বাঁয়ে)
এএফপি

ছক্কা মারতে গেলে কী করতে হবে, ইমামকে করা হয়েছিল এমন প্রশ্ন। হাসতে হাসতে তিনি বলেছেন, ‘হয়তো আমাদের আমিষ বেশি খেতে চাইতে হবে, অতটা শর্করা না খাওয়ার চেয়ে। কিন্তু এটি নিয়ে আসলে আমরা তেমন কথা বলতে চাই না। ছক্কা বা চার যদি না মারি, তাহলে দলের জন্য কী করছি—এভাবে ভাবি না। যদি আমরা ম্যাচ জিততে থাকি—যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত দুই ম্যাচে ভালো খেলিনি, সেটি মেনেও নিয়েছি। কিন্তু আমাদের এখনো পাঁচটি ম্যাচ বাকি, (সেগুলো জিতলে) সেমিফাইনালে যাব। এটি আসলে কীভাবে খেলছেন, কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছেন সেটির ব্যাপার। এগুলোই গুরুত্বপূর্ণ।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তান ওপেনিং জুটিতেই তুলেছিল ১৩৪ রান। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়ে আগেভাগেই থামতে হয়েছে তাদের। ইমাম এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘গত দুই ম্যাচে আমাদের শুরু অনেক ভালো ছিল, প্রথম ২০-২৫ ওভারে রান রেট অনেক ভালো ছিল। এরপর হুট করেই ধস নামে। আমরা এ ব্যাপারে কথা বলেছি। এখন আসলে খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়ানোর সময়। কী বদলাতে পারি, কোথায় উন্নতি করতে পারি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।’

আরও পড়ুন

বড় রানের লক্ষ্যে খেললেও পাকিস্তান তাদের ধাঁচেই ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেছে সে দিন—উইকেট ধরে রেখে খেলা। পাকিস্তান শুরুতে চাহিদা মোতাবেক আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে না, এমন সমালোচনাও আছে। তবে নিজেদের খেলার ধরনের পক্ষেই কথা বলেছেন ইমাম, ‘সব দলেরই নিজস্ব পন্থা আছে। অবশ্যই আমরা কথা বলেছি। কিন্তু আমরা দুদিন ৩৫০ তাড়া করেছি। এটিই আমাদের পদ্ধতি। এর আগেও ৩৫০, ৩৬০ রানের মতো স্কোর তাড়া করেছি। গতকাল আমি পড়েছি, ৩৫০-এর বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ডের ক্ষেত্রে আমরা দ্বিতীয়। ফলে আমরা যদি ভালো কিছু করি, তাহলে ৩৫০ তাড়া করতে পারব।’

এরপর তিনি যোগ করেন, ‘আগে যেমন খেলতাম, এখন যেমন খেলছি, এগুলো নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা...প্রতিটি দলেরই নিজস্ব উপায় আছে রান তাড়া করার ক্ষেত্রে। আমরা ভিত গড়তে চাই। এটা নির্ভর করছে আপনি ৩৫০ তাড়া করছেন কি না। গত ৬-৭টা ম্যাচের মধ্যে দুবার ৩৫০ তাড়া করেছি আমরা। ২ ম্যাচ আগেই ৩৫০ তাড়া করেছি, ৪৯ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও। এটা খেয়াল করাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।’