বাবরকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরামর্শ ইউনিস খানের
বাবর আজমকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়ে শুধু ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইউনিস খান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের মতে, একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের তুলনায় অধিনায়কত্ব খুবই নগণ্য ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন ইউনিস।
মহেন্দ্র সিং ধোনির পর ভারতের তিন সংস্করণের অধিনায়ক হয়েছিলেন কোহলি। একপর্যায়ে বিভিন্ন কারণে তা ছেড়ে দিয়ে শুধুই ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন তিনি। কোহলি আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতেও এখন আর অধিনায়কত্ব করেন না।
বাবর বর্তমানে দ্বিতীয় দফায় অধিনায়কত্ব করছেন। ২০২০ সালে তিন সংস্করণে পাকাপাকিভাবে নেতৃত্ব পাওয়া বাবর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর পিসিবির চাপে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। ছয় মাস পর পিসিবির নতুন প্রধান তাঁকে সাদা বল ক্রিকেটে আবার নেতৃত্বে আনেন। বাবরের অধীন গত এক বছরের মধ্যে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি দুটি বিশ্বকাপেই প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান। পাশাপাশি বাবর ফর্ম হারিয়েছেন ব্যাট হাতেও।
সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজসহ সর্বশেষ ১৬ ইনিংসেই কোনো ফিফটি নেই তাঁর। যে ব্যাটিং সামর্থ্যের কারণে বাবরের তারকা হয়ে ওঠা, সেটিতেও এখন ফর্ম হারিয়ে ফেলায় তাঁর এখন বাড়তি দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া দরকার বলে মনে করেন ইউনিস। ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান দলের অধিনায়ক করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাবরের কাছে প্রত্যাশা অনেক বড়। খেলোয়াড়দের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে। তবে তাদের আসল জবাব আসবে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে। বাবরকে এখন ফিটনেস এবং কর্মনিষ্ঠা মনোযোগ বাড়াতে হবে।’
পাকিস্তানের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ১০ হাজার রান করা ইউনিস মনে করেন, অধিনায়কত্ব বাবরের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছে। এ জন্য কোহলিকে অনুসরণ করতে পারেন তিনি, ‘বাবর অল্প বয়সেই অনেক কিছু অর্জন করেছে। এখন যেটা দরকার, সেটা হচ্ছে ভবিষ্যতে কী পেতে চায়, সেটা ভাবা। অধিনায়কত্ব ছোটখাটো ব্যাপার। পারফরম্যান্সটাই আসল। কোহলির দিকেই তাকান। সে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছে নিজেই। এখন বিশ্বজুড়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে চলেছে। এতে বোঝা যায়, দেশের হয়ে খেলাটাই সবার ওপরে। এরপর পারলে নিজের জন্য খেলা।’
ইউনিস কথা বলেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিয়েও। তাঁর মতে অধিনায়ক ও কোচ নিয়োগ নিয়ে পিসিবির স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই, ‘আমার তো মনে হয় পিসিবি জানেই না তার কী করতে হবে। প্রায়ই দেখা যায় কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই অধিনায়ক–কোচ পাল্টে ফেলা হচ্ছে। এগুলো দলকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়।’
পিসিবির অদক্ষতার সমালোচনা করতে গিয়ে ইউনিস আরও বলেন, ‘এমনকি ফল দোকানদার, মুদিদোকানি, সবজি বিক্রেতাও জানে কাকে অধিনায়ক এবং কোচ করা উচিত। কিন্তু পিসিবি জানে না।’
পাকিস্তান দলের পরবর্তী ব্যস্ততা আগামী মাসে। ৭ অক্টোবর মুলতান টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ।