বেটউইনার নিউজের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের চুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহে বিসিবির পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রতিষ্ঠানটির নাম বেটউইনার নিউজ, তবে এটি বেটিং (বাজি ধরার) প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের একটি সহপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের আইনে যেকোনো ধরনের বাজি নিষিদ্ধ। দেশের আইন যেখানে এমন, সেখানে দেশের একজন শীর্ষ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কীভাবে একটি বেটিং প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হলেন, সেটি নিয়ে প্রশ্ন সবার। প্রথম আলো অনলাইনে এ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ ও অভিমতে সংখ্যাগরিষ্ঠ পাঠকের মন্তব্য এমনই। অনেকেই এ ব্যাপারে সাকিবের জনসমক্ষে ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত বলে মনে করেন।
বেটিং প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি বেশ কিছুদিন আগেই করেছিলেন সাকিব। বিসিবি ব্যাপারটি জানতে চেয়ে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে। তারা বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি আর জাতীয় ক্রিকেট দলের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার আহ্বান জানায় সাকিবকে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় খবর আসে, বিসিবিকে পাঠানো এক ই-মেইলে বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন সাকিব। একই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে এ-সংক্রান্ত সব ধরনের পোস্ট তিনি সরিয়ে ফেলবেন, নিজেকে উজাড় করে দেবেন দেশের ক্রিকেটের জন্য।
ক্রিকেটপ্রেমী পাঠকেরা সাকিবের এই চুক্তির তীব্র নিন্দাই জানিয়েছেন প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে। অনেকেই মনে করেন, চুক্তিটি যে বাতিল করতে হবে, সেটি সাকিব আগে থেকেই জানতেন। মাঝখান থেকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশে অখ্যাত এই বেটউইনারের একটা বড় প্রচারণা হয়ে গেল। কেউ কেউ মনে করেন, সাকিবের বিরুদ্ধে এই চুক্তির ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে গিয়ে সঠিক কাজটিই করেছে বিসিবি। কিন্তু বেশির ভাগেরই প্রশ্ন, সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার কী জানতেন না, দেশের আইনে যেকোনো ধরনের বাজি ও জুয়া যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে একটি বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা বেআইনি! পাঠকদের অনেকেই সাকিবের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বারবার সাকিবের বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে পড়া নিয়েও পাঠকেরা প্রশ্ন তুলেছেন। একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন, ‘সাকিব অন্যায় করবেন আর বলবেন বুঝতে পারিনি, এভাবে বারবার পার পেয়ে যাবেন, এটা কি ঠিক?’ প্রথম আলোর খবরটি পড়ে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘সাকিবের উচিত এর একটা ব্যাখ্যা জনগণকে জানানো।’
এ ঘটনার পর সাকিবের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বিসিবি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে সেটি বাতিল করতে বাধ্য হওয়া একজন খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে রাখাটা ঠিক হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, তিনি হয়তো এবার সাকিবকে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ দেবেন। পাঠকেরা এই ‘বেনিফিট অব ডাউটে’র ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছেন। একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন, ‘এই “বেনিফিট অব ডাউট” জিনিসটা কী! এটা কি সাকিবের মতো একজন সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সঙ্গে যায়! কত টাকা তাঁর দরকার! সাকিব কখনোই দেশের ক্রিকেট কিংবা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।’