বাংলাদেশের কাছে হেরে জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ
ঘরের মাঠে টানা ১০ টেস্টে জয়হীন পাকিস্তান (৬ হার, ৪ ড্র)। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বাবর আজমের কাছ থেকে টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব গেল শান মাসুদের কাছে। দায়িত্ব নিয়ে নিজের প্রথম সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩ টেস্টেই হারে পাকিস্তান।
দলটি অস্ট্রেলিয়া বলে সমালোচনা তখন কমই হয়েছে। তবে পাকিস্তান এবার সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে, সেটাও ঘরের মাঠে। তাই তীব্র চাপের মুখে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ।
বাংলাদেশ এই সিরিজের আগে কখনোই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জিততে পারেনি। সেই বাংলাদেশ পাকিস্তানের মাটিতে টানা দুটি টেস্ট জিতেছে বড় ব্যবধানেই। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জেতার পর পরের টেস্টে বাংলাদেশের জয় ৬ উইকেটে। যেখানে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল নাজমুল হোসেনের দল। এমন লজ্জার হারের পর শান মাসুদ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাদের সবার উদ্দেশ্য পাকিস্তান ক্রিকেটের ভালোর জন্য কাজ করা।’
পাকিস্তানের এই টেস্ট দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সংখ্যা কম। ৩৪ বছর বয়সী অধিনায়ক মাসুদই টেস্ট খেলেছেন ৩৫টি। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে দলে আছেন বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও সরফরাজ আহমেদ। এঁদের মধ্যে সরফরাজ এই সিরিজে দলে সুযোগ পাননি। আফ্রিদি খেলেননি দ্বিতীয় টেস্টে।
মাসুদ সাকিব–মুশফিকদের উদাহরণ দিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার ঘাটতির কথাও তুলে ধরেছেন, ‘বাংলাদেশের দুজন ক্রিকেটার আছে, যারা ৭০-৯০টি টেস্ট খেলেছে (মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান)। এ ছাড়া লিটন ও মেহেদী (মিরাজ) ৪০টির বেশি টেস্ট খেলেছে। আমাদেরও লাল বলের ক্রিকেটে এমন অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। টেস্ট ম্যাচ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্করণ। এখানে অভিজ্ঞতা লাগবেই। আমাদের আরও টেস্ট ও লাল বলের ক্রিকেট দরকার। আপনি টি-টোয়েন্টি খেলে টেস্টের খেলোয়াড় তৈরি করতে পারবেন না। বিজ্ঞানের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আপনি গণিত পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। গণিত পরীক্ষা দিতে হলে গণিতের প্রস্তুতিই নিতে হবে। লাল বলের ক্রিকেট খেলতে চাইলে, লাল বলের ক্রিকেটই খেলতে হবে।’
মাসুদের টেস্ট ক্যারিয়ারও খুব একটা ভালো নয়। টেস্টে গড়টা এখনো ৩০–এর নিচে—২৮.৫৩। তাঁর অধিনায়কত্ব পাওয়া নিয়েও হয়েছে বিতর্ক। কারণ, দলের তাঁর জায়গা নিয়েও কিছুটা প্রশ্ন ছিল। টানা ৫ টেস্টে হারার পর অধিনায়কত্ব চলেও যেতে পারে মাসুদের। পাকিস্তান ক্রিকেটে বোধ হয় এমনটা না হলেই অবাক হতে হবে!
মাসুদ অবশ্য এসব নিয়ে শঙ্কিত নন, ‘দায়িত্ব হারানো নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। পরিবর্তন আনার জন্য দায়িত্ব নিয়েছি, আমরা বিশ্বাস করেছি এই পরিবর্তন দলের কাজে আসবে। আমার লক্ষ্য হলো যদি বিশ্বাস করি দল কোনো একটি সুনির্দিষ্ট একটা দিকে এগোতে পারে, সেখানে নিজে ব্যর্থ হলেও আমি খুশি হব দলের জন্য। যতটা সময় আমি পাব, কৃতজ্ঞ থাকব ও সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করব।’