তামিমের ফেরা নিয়ে খালেদ মাহমুদ, ‘শর্ত দিয়ে খেলবে, কথাটা শুনতে যেন কেমন শোনায়’
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে হলে অনেক কিছু ঠিক হতে হবে’—বিপিএল ফাইনালের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম ইকবাল নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে এ কথা বলেছিলেন। তামিমের কথার সূত্র ধরে বিসিবির সর্বশেষ বোর্ড সভায় সভাপতি নাজমুল হাসানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, তামিমের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে কথা বলবে বিসিবি।
এরপর বাংলাদেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তামিমকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—বলা হয়ে থাকে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে থাকলে তামিম ইকবাল ফিরবেন না, এটা কতটুকু সত্যি? এর জবাবে তামিম ইকবাল সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেছেন, ‘আমার ফেরাটা একটু কঠিনই বলব।’
গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা তামিমের ফেরা নিয়ে এত আলোচনায় কিছুটা বিরক্ত মনে হলো আবাহনীর প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদকে। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ককে শর্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিষয়টি বিব্রত করছে।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পারটেক্সের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন মাহমুদ, ‘দেখুন, তামিমের অভিজ্ঞতা নিয়ে, পারফরম্যান্স নিয়ে কারও তো কোনো কথা নেই। মিডিয়ায় আমিও শুনি। তামিমের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছে অনেক দিন ধরে। এবারের বিপিএলে তামিমের সঙ্গে আমার শুধু হাত মেলানো হয়েছে খেলা শেষে। ওইভাবে বসে কথা হয়নি। আমি বলতে পারব না ও কী চাচ্ছে, কী চাচ্ছে না। যেহেতু ও বিশেষভাবে প্রেসিডেন্ট স্যারের সঙ্গেই বসতে চাচ্ছে, এখানে আমার কথা না বলাই ভালো।’
পরে বোর্ড পরিচালক মাহমুদ যোগ করেন, ‘কথা বলুক, কেন খেলতে চাচ্ছে না, কী হলে খেলবে, এটা ওর প্রেসিডেন্ট স্যারকে পরিষ্কার করাটাই ভালো। এটার মধ্যে আমাদের থার্ড পারসন না যাওয়াটাই ভালো। আমরা সবাই চাই, তামিম ফিরে আসুক। খেলতে চাইলে অবশ্যই খেলবে। কিন্তু শর্ত দিয়ে খেলবে, এই কথাটা শুনতে যেন কেমন শোনায়। আমি জাতীয় দলের হয়ে খেলব। দেশ, জাতীয় দল—এসব অনেক আগে, অনেক ঊর্ধ্বে। এখানে আসলে শর্ত থাকবে কী থাকবে না, এই কথাটা শুনতেই খারাপ দেখায়।’
জাতীয় দলে খেলার জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, ‘তামিম এত বছর বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিয়েছে, ওকে আমাদের প্রয়োজন। টিম, সিলেক্টররা আছেন, তাঁরা যদি মনে করেন তামিমকে আমাদের প্রয়োজন…অবশ্যই তামিমকে আমাদের প্রয়োজন। দরকার হলে খেলবে। কিন্তু সেটা কোনো কিছুর বিনিময়ে বা কোন শর্তে, সেটা কতটা যৌক্তিক, আমি নিজেও বলতে পারব না।’
তামিমের সঙ্গে বোর্ডের আলোচনায় বসতে কেন এত সময় লাগছে, সে প্রশ্নও তুলেছেন মাহমুদ, ‘আমি মূলত কোনো মন্তব্যই করতে চাই না এই বিষয়টা নিয়ে। অবশ্যই তামিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সেটা বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেবে। ও যেহেতু বলেছে বোর্ডের সঙ্গে বসবে। পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) যেহেতু কথা বলতে চেয়েছেন। পাপন ভাই সিরাজ ভাই ও জালাল ভাইকে সেই দায়িত্বটা দিয়েছেন। কোনটা ঠিক সময়ে বলবে, কখন বলবে, কখন তাদের সময় হয় বসার, এত দিন সময় লাগছে কেন—কারণ, সবাই তো আমরা বাংলাদেশেই থাকি। সেই সময়টাই–বা কেন হচ্ছে না, সেটা আমি জানি না।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট যে এই বিতর্কের ঊর্ধ্বে, সে কথাও বলেছেন মাহমুদ, ‘আমি মনে করি, যত তাড়াতাড়ি বসে একটা সুরাহা করা যাবে…এটা এমন একটা ব্যাপার যে প্রতিদিন টক অব দ্য টাউন হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ক্রিকেট এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’