অন্যরকম ‘প্রথম’ হলো না মাহমুদউল্লাহর
ইনিংসের এক বল বাকি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরির জন্য মাহমুদউল্লাহর দরকার ৩ রান। আজমতউল্লাহ ওমরজাইর করা ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারির খোঁজে থাকা মাহমুদউল্লাহ শাফল করে স্কয়ার লেগে খেলবেন…এমনই অনুমান করা যাচ্ছিল। করেছেনও তাই। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় স্কয়ার লেগে ঠেলে দৌড়ে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট মাহমুদউল্লাহ। সেঞ্চুরি আর পাওয়া গেল না, থামতে হলো ৯৮ রানেই। ৯৮ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ১০০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটির সৌজন্যে ৭২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ করেছে ৮ উইকেটে ২৪৪ রানে।
তবে মাহমুদউল্লাহর আরও একটি ওয়ানডে সেঞ্চুরির আক্ষেপ রয়েই গেল। এর আগে মাহমুদউল্লাহর চারটি ওয়ানডে সেঞ্চুরির সবকটি এসেছে আইসিসি টুর্নামেন্টে। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরির পর ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এসেছে তৃতীয় সেঞ্চুরি। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুম্বাইয়ের মাঠে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিটি ছিল তাঁর সর্বশেষ। আজ তিন অঙ্ক স্পর্শ করলে এটি হতো দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে মাহমুদউল্লাহর ‘প্রথম’ সেঞ্চুরি।
সেটি না হলেও ৯৮ রানের এই ইনিংসটি মাহমুদউল্লাহর জন্য একটা লাইফলাইন। বাজে সময়টাকে পেছনে ফেলে আসার বার্তাও। ভারত সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচ দিয়ে ছোট্ট সংস্করণের ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মাহমুদউল্লাহর সেই সিরিজটি ভালো যায়নি। সেই সিরিজের তিন ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর রান ছিল ১, ৪১ ও ৮। দিল্লিতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে করা ৪১ রানের ইনিংসটি এসেছে ৩৯ বলে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজেও সেই রান খরা থেকে বের হতে পারেননি। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ তাঁর রান ছিল ২ ও ৩। ফিল্ডিংও ভালো হচ্ছিল না।
সাদা বলের ক্রিকেটে টানা ৫ ইনিংসে ব্যর্থ হওয়ায় ৩৮ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহর আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত খেলার স্বপ্ন নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। এত কিছু মাথায় নিয়ে ১৫তম ওভারে তাওহিদ হৃদয় বাংলাদেশ দলের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার পর ক্রিজে নামেন মাহমুদউল্লাহ। দলের রান তখন ৭২। সেখান থেকে মাঝের ওভারের কঠিন সময়টা পার করেছেন। তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ১৪৫ রানের জুটিতে মিরাজ খেলেছেন রয়ে সয়ে, ইনিংস জুড়ে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৫০-৬০ এর ঘরে।
অন্য প্রান্তে মাহমুদউল্লাহর বলের সঙ্গে রানের পার্থক্যটা খুব বেশি ছিল না। আফগান স্পিনারদের বলে প্রচুর এক-দুই রান নিয়েছেন, তাঁর ৯৮ রানের ইনিংসের মধ্যে ৫২ রানই এসেছে দৌড়ে! ইনিংসের শুরুতে পিঠের চোট ও মাঝের ওভারে পায়ে ব্যথা পাওয়ার পরও দৌড়ে রান নিয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ, কমতে দেননি স্ট্রাইক রেট। সব কিছু বিবেচনায় সেঞ্চুরি না পেলেও ইনিংসটি মাহমুদউল্লাহর কাছে স্মরণীয়ই হয়ে থাকবে।