ভারতের ভিসা না পেয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে গেলেন শোয়েব বশির
ভিসা না পাওয়ায় এখনো ভারতে যেতে পারেননি ইংল্যান্ডের ২০ বছর বয়সী স্পিনার শোয়েব বশির। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটার ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় ইংল্যান্ডে ফিরে গেছেন। হায়দরাবাদে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে যে তাঁর খেলা হচ্ছে না, সেটা নিশ্চিত। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ইংল্যান্ড দল বশিরকে ছাড়াই গত রোববার ভারতে পৌঁছেছে। বশির আবুধাবিতে থেকে গিয়েছিলেন, ভারতের মাটিতে সিরিজ সামনে রেখে সেখানে কিছুদিন অনুশীলন করেছে ইংল্যান্ড দল। মঙ্গলবার সেখান থেকে তাঁর হায়দরাবাদে পৌঁছানোর প্রত্যাশায় ছিলেন সতীর্থরা। কিন্তু আরও দেরি হওয়ায় আবুধাবি থেকে ইংল্যান্ডে ফিরে গেছেন বশির।
ইংল্যান্ডের সারেতে জন্ম নেওয়া এই অফ স্পিনার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। কিন্তু পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হওয়ায় ভারতের ভিসা পেতে দেরি হচ্ছে। সমস্যাটা নতুন কিছু নয়। উপমহাদেশের দুই প্রতিবেশী দেশের বৈরী রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণেই বশির এখনো যেতে পারেননি ভারতে।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খাজাও গত বছর বশিরের মতো সমস্যায় পড়েছিলেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে জন্ম নেওয়া খাজা সতীর্থদের সঙ্গে ভারতে পা রাখতে পারেননি; দেরিতে পৌঁছেছিলেন। গত বিশ্বকাপও স্মরণ করা যায়। ভারতে গত অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের ভিসা মঞ্জুর হয়েছিল দেশ ছাড়ার আগের দিন। এ কারণে দুবাইয়ে প্রাক্–মৌসুম অনুশীলন বাতিল করতে হয়েছিল পাকিস্তানকে।
গত ১১ ডিসেম্বর ভারত সফরে ইংল্যান্ডের স্কোয়াড ঘোষণার পর ভিসার জন্য দ্রুতই খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের এই স্কোয়াডে ১৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার রেহান আহমেদও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। কিন্তু সর্বশেষ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলে স্ট্যান্ডবাই থাকায় রেহানের ভিসা–সম্পর্কিত কাগজপত্রের কাজ তখনই সেরে রাখা হয়েছিল। তাই এবারের সফরে তাঁর ভারতে যেতে সমস্যা হয়নি।
ক্রিকেট–বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, বশির এ সপ্তাহের মধ্যেই ভারতে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস এ নিয়ে কিছুটা বিরক্ত। তাঁর ভাষায়, ‘বিশেষ করে অধিনায়ক হিসেবে এটা হতাশার।’
স্টোকস এরপর বলেছেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে স্কোয়াড ঘোষণা করেছি। আর বশির এখন সেখানে (ভারত) যেতে ভিসা পাচ্ছে না। তার জন্য আমি আরও বেশি হতাশ। ইংল্যান্ড দলে প্রথম সুযোগ পেয়ে এমন অভিজ্ঞতা কারও ক্ষেত্রেই কাম্য নয়। তার জন্য খারাপ লাগছে।’ ইংল্যান্ড অধিনায়ক এখানেই থামেননি। নিজের হতাশাটা স্টোকস প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়া প্রথম ক্রিকেটার সে নয়। আমি এমন অনেকের সঙ্গে খেলেছি, যারা এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এটা হতাশার, যে খেলোয়াড়কে আমরা দলে নিয়েছি, ভিসা সমস্যায় তাকে এখনো পাইনি। বিশেষ করে সে একজন তরুণ ক্রিকেটার, সত্যিই খুব খারাপ লাগছে তার জন্য। এটা দুর্ভাগ্যজনক এবং হতাশার।’
গত নভেম্বরে ইংল্যান্ড লায়নসের অনুশীলন ক্যাম্পে নজর কাড়েন বশির। নিজের ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতা কাজে লাগাতে পারেন স্পিন বোলিংয়ে। আরব আমিরাতে ১০ দিনের অনুশীলন ক্যাম্পেও বেশ ভালো বোলিং করেন বশির। হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে স্পিনবান্ধব উইকেটই প্রত্যাশিত এবং সেখানে বশিরকে অভিষেক করানোর ভাবনা ছিল ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্টের।
কিন্তু ভিসা সমস্যার কারণে সেটি আর হচ্ছে না। স্টোকস বলেছেন, ‘এখানে থাকতে না পারার কারণে তাকে বাদ দিতে হচ্ছে। মূল দল নিয়ে আমরা কী করব, সেটা আগেই ভেবে আমরা এখানে আসিনি। ভারতে উইকেট দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ, কেমন আচরণ করবে, সেটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বশির না থাকায় খেলতে পারছে না।’
ভারত সফরে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ড।