সাকিব, নুরুল ও এনামুলের জরিমানা
শুনানির প্রয়োজনই পড়েনি। সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান—দুজনই মেনে নিয়েছেন মাঠে তাঁদের আচরণ ঠিক ছিল না। জানা গেছে, খেলা শেষে ম্যাচ রেফারির পাঠানো সিওসি ফর্মে (কোড অব কনডাক্ট ভঙ্গের ফর্ম) স্বীকারোক্তিমূলক সই করায় খুব বড় শাস্তি পেতে হয়নি কাউকেই।
আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে দুই অধিনায়ককেই শুধু জরিমানা করেছেন ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ। জরিমানা করা হয়েছে এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করা বরিশাল ওপেনার এনামুল হককেও। জরিমানা হিসেবে সাকিব, এনামুল ও নুরুলের ম্যাচপ্রতি পারিশ্রমিক থেকে ১৫ শতাংশ করে কেটে নেওয়া হবে। একটি করে ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছেন তিন খেলোয়াড়।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ বিপিএলের প্রথম ম্যাচে বরিশালের ইনিংসের শুরুতেই ঘটনার সূত্রপাত। রংপুরের করা ১৫৮ রানের জবাব দিতে নামেন বরিশালের দুই ওপেনার চতুরঙ্গা ডি সিলভা ও এনামুল হক। চতুরঙ্গা ডি সিলভা স্ট্রাইকে, রংপুরের বোলার রকিবুল হাসান বোলিং প্রান্তে। কিন্তু স্ট্রাইকে বাঁহাতি চতুরঙ্গাকে দেখে রংপুর অধিনায়ক নুরুল বোলার পাল্টে বল তুলে দেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের হাতে।
এ পরিবর্তন দেখে অন্য প্রান্তে থাকা বরিশালের আরেক ওপেনার এনামুল স্ট্রাইকে আসেন। তখন রংপুর আরও একবার বোলার পাল্টে ফেলে। ডানহাতি এনামুলের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার রকিবুলকে বোলিং দিতে চাচ্ছিলেন নুরুল।
নিয়ম অনুযায়ী আগে বোলিং প্রান্তে বোলার বল হাতে নেবেন, তারপরই ব্যাটসম্যানরা ঠিক করবেন কে স্ট্রাইকে থাকবেন কে নন–স্ট্রাইকে থাকবেন। কাজেই নুরুলের বোলার পরিবর্তনে বরিশাল ওপেনাররা স্ট্রাইক বদলাতে চাইতেই পারেন। সেটা বাধাপ্রাপ্ত হওয়াতে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব।
কিন্তু মাঝমাঠে ওই নাটক চলার সময় তিনি যেভাবে ডাগআউট থেকে দৌড়ে মাঠে ঢোকেন, সেটি মোটেও ক্রিকেটীয় আচরণ ছিল না। এরপর মাঠে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কেও জড়িয়েছেন। মাঠে ঢুকতে হলে যেকোনো খেলোয়াড়কেই আম্পায়ারের অনুমতি নিতে হয়। সাকিব সেটাও নেননি।
সাকিব পরে মাঠ ছাড়লে বাঁহাতি চতুরঙ্গাকে বাঁহাতি রকিবুলকে দিয়েই বোলিং করানো হয়। তবে সে ওভারে রকিবুলের বলেই আউট হয়ে যান চতুরঙ্গা।
বরিশালের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ পরে বলেছেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী কোন বোলার বল করবেন, তা ঠিক হওয়ার পর ব্যাটসম্যানরা কে স্ট্রাইক নেবেন তা ঠিক হয়। এ ক্ষেত্রে শেখ মেহেদীকে বল করতে আসতে দেখে চতুরঙ্গা ডি সিলভার বদলে এনামুল হক বিজয়কে স্ট্রাইকে চাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু আম্পায়ার সেটার অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না, এই নিয়ে কথা বলতেই মাঠে প্রবেশ করেন তিনি।’
এবারের বিপিএলে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর ঘটনা সাকিবের এটাই প্রথম নয়। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ম্যাচেও সিলেটের পেসার রেজাউর রহমানের বাউন্সারে ওয়াইড দেওয়ার দাবিতে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমানের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
মাথার অনেক ওপর দিয়ে যাওয়া বলটি পরবর্তী সময়ে ‘ওয়ান বাউন্স’ দেওয়া হয়। সাকিব তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। আম্পায়ারের সঙ্গে এ নিয়ে তর্ক করেই যাচ্ছিলেন। পরে তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে আনেন সিলেটের উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম।