- ম্যাচ রিপোর্ট
- স্বাগত!
- অভিষেক বহির শাহর
- দুর্দান্ত ইবাদত, জবাব নেই নাসিরের
- জয়ের জন্য দরকার আর ৭ উইকেট
- স্পিন নাকি পেস?
- রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেন রহমত
- শরীফুলের বলে ফিরলেন আফসার
- শরীফুলের শিকার অভিষিক্ত বহির
- শরীফুল ইন অ্যাকশন
- ইবাদতের জায়গায় তাইজুল
- ম্যাচের প্রথম আফগান-ছক্কা
- প্রসঙ্গ তাসকিন
- করিম ব তাসকিন
- প্রথম সেশনে আসবে ফল?
- আফগানিস্তানের ১০০
- পেসারদের টেস্ট
- সফল মিরাজ, রইল বাকি দুই
- তাসকিনের চতুর্থ
- ২ বলে দুবার ‘জয়বঞ্চিত’ বাংলাদেশ
- ৫৪৬ রানে জিতল বাংলাদেশ
- বলছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক
- ম্যাচসেরা নাজমুল হোসেন
- খুশি অধিনায়ক লিটন
ম্যাচ রিপোর্ট
স্বাগত!
বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট। আফগানিস্তানের প্রয়োজন আরও ৬১৭ রান। ম্যাচটি হয়তো গতকালই শেষ করার চেষ্টাটা করতে পারত বাংলাদেশ। তবে ব্যাটসম্যানদের সুযোগ করে দেওয়ার দিকেই আগ্রহ ছিল তাদের। আজ কি আফগানিস্তানের ৮ উইকেট নিতে পারবে স্বাগতিকেরা?
মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম আলো লাইভে আপনাকে স্বাগত!
অভিষেক বহির শাহর
তাসকিন আহমেদের বাউন্সারে আঘাত পেয়ে উঠে যাওয়া আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি এ টেস্টে আর খেলবেন না। তাঁর কনকাশন বদলি হিসেবে ব্যাটিং করবেন বহির শাহ। অভিষেক হচ্ছে তাঁর। টেস্টের চতুর্থ দিন এসে অভিষেক ক্যাপ পেয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান।
দুর্দান্ত ইবাদত, জবাব নেই নাসিরের
দুর্দান্ত লাইন। দুর্দান্ত লেংথ। ইবাদত হোসেনের দুর্দান্ত এ ডেলিভারিতে তেমন কিছু করার ছিল না নাসির জামালের। অফ স্টাম্পে গুডলেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে শুধু খোঁচাই দিতে পারলেন নাসির। দিনের ১৫তম বলে প্রথম আঘাত করলেন ইবাদত। আফগানিস্তান তৃতীয় উইকেট হারাল ৪৮ রানে।
স্পিন নাকি পেস?
রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেন রহমত
শরীফুল ইসলামের বাউন্সারে পরাস্তই হয়েছিলেন রহমত শাহ। এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ নিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম, আম্পায়ার ক্রিস বাউন আউটও দেন। তবে রহমত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, শেষ পর্যন্ত তাঁর রিভিউ কাজে এসেছে। বলটি রহমতের ব্যাট বা গ্লাভসে নয়, লেগেছিল আর্ম গার্ডে।
এ উইকেটের বাউন্স প্রথম ইনিংসেও ভুগিয়েছে আফগানিস্তান ব্যাটসম্যানদের। ঝামেলা করছে আবার। ইবাদত-শরীফুলদের লাইনও বেশ ভালো। কতক্ষণ লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে আফগানিস্তান, প্রশ্ন সেটিই।
শরীফুলের বলে ফিরলেন আফসার
আগের ওভারে রহমত শাহর বিপক্ষে দুটি আবেদন ছিল ইবাদত হোসেনের বলে—এলবিডব্লিউর পর কট বিহাইন্ডের। একটিও সফল হয়নি। পরের ওভারে শরীফুলের বলে ফিরতে হলো আফসার জাজাইকে। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলটিতে আবারও ছিল বাড়তি বাউন্স। এজড হয়েছেন আফসার, ক্যাচ গেছে তৃতীয় স্লিপ থেকে একটু সরে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে। আফসার ফিরেছেন ১২ বলে ৬ রান করে, আফগানিস্তান চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে ৬৫ রানে। অভিষিক্ত বহির শাহ এসেছেন রহমতকে সঙ্গ দিতে।
শরীফুলের শিকার অভিষিক্ত বহির
দিনের খেলার হয়েছে ৯.৫ ওভার। ওভারগুলো করেছেন দুই পেসার শরীফুল ও ইবাদত। এ সময়ে এসেছে তিনটি চার, এর মধ্যে দুটিই এসেছে সর্বশেষ ২ ওভারে। ইবাদত শর্ট লেংথের ডেলিভারিতে জায়গা দিয়েছিলেন বহির শাহকে, অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান তাতে কাট করেছেন অনায়াসে। পরের ওভারে শরীফুল ফুললেংথে করলেও জায়গা দিয়েছেন রহমতকে।
এরপর ওভার দ্য উইকেট থেকে এসেছেন শরীফুল, লেংথ ঠিক করে এনেছেন। আবারও ছিল বাড়তি বাউন্স, আবারও ভড়কে গেছেন আরেকজন আফগানিস্তান ব্যাটসম্যান—বহির শাহ। তাঁর ক্যাচ উঠেছে স্লিপে, তৃতীয় স্লিপে সামনে ঝুঁকে দারুণভাবে সেটি নিয়েছেন তাইজুল।
যে মুহূর্তে আলগা বল মেলার আভাস ছিল, তখনোই আরেকটি উইকেট। এক ঘণ্টা শেষ না হতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলল আফগানিস্তান।
শরীফুল ইন অ্যাকশন
ইবাদতের জায়গায় তাইজুল
ইবাদত হোসেন আলগা বল করেছিলেন। টানা ৫ ওভার করার পর ক্লান্ত, এমন ইঙ্গিত ছিল তাতে। ইবাদতকে পরের ওভারে সরিয়ে আনা হয়েছে তাইজুল ইসলামকে। শরীফুলও আগের ওভারে আলগা বল করেছিলেন, তবে উইকেট পাওয়াতে তাঁকে ধরে রাখলেন লিটন দাস।
ম্যাচের প্রথম আফগান-ছক্কা
তাইজুল ইসলাম ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। সুযোগ দেখলেন করিম জানাত, টেনে লং অনের ওপর দিয়ে মারলেন ছক্কা। ম্যাচে আফগানিস্তানের এটি প্রথম ছক্কা। বাকি ৫ উইকেট, ওই ছক্কার পর আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৫৭১ রান। সামনেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করবেন আফগান ব্যাটসম্যানরা?
অন্য প্রান্তে শরীফুলকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অনুমিতভাবেই। এসেছেন তাসকিন আহমেদ।
রহমত ক লিটন ব তাসকিন
তাসকিন আক্রমণে এলেন। ফেরালেন থিতু ব্যাটসম্যান রহমত শাহকে। অফ স্টাম্পের একটু বাইরের সেই লাইন, লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বল। রহমত খোঁচা দিয়েছেন তাতে। আফগানিস্তান হারিয়ে ফেলেছে ষষ্ঠ উইকেট।
প্রসঙ্গ তাসকিন
ক্যারিয়ারে তাসকিন আহমেদের এটি দ্বিতীয় অধ্যায়, তা বলাই যায়। যেখানে তাসকিন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতৃত্বে। তবে চোটের সঙ্গে লড়াইটা তাসকিনের পুরোনোই।
২০২১ সালের এপ্রিলে চার বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেছিলেন তাসকিন। তবে এরপর থেকে বাংলাদেশের ১৭টি টেস্টের মধ্যে ৯টি টেস্টই খেলতে পারেননি এ পেসার।
মাঝে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট মিস করার পর এ টেস্ট দিয়েই ফিরেছেন। প্রথম ইনিংসে ঠিক সেই তাসকিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শরীফুল ও ইবাদত লাইন-লেংথে যেমন ধারাবাহিক ছিলেন, তাসকিন ছিলেন এলোমেলো। ৭ ওভারেই দিয়েছিলেন ৪৮ রান, উইকেটও পাননি। ছিল নো-বলের ঝামেলাও।
দ্বিতীয় ইনিংসে সেখানে তাসকিনের উন্নতি হয়েছে বলতেই হবে। যদিও গতকাল ৪ ওভারেই দিয়েছিলেন ২৮ রান। তবে লাইন-লেংথ ঠিক করতে পেরেছেন, সফলও হয়েছেন। গতকাল আব্দুল মালিককে ফেরানোর পর আজ আক্রমণে এসে প্রথম ওভারেই ফেরালেন রহমতকে।
এ ইনিংসে আরও সাফল্য মিলবে তাসকিনের?
করিম ব তাসকিন
হ্যাঁ, আবার সফল তাসকিন। এবার করিম জানাত হয়েছেন বোল্ড।
ওভার দ্য উইকেট থেকে করা বলটি লেংথ থেকে ঢুকেছে ভেতরের দিকে। করিম নাগালই পাননি সেটির। যদিও ব্যাকফুটে গিয়ে সময় হারিয়েছেন। বলও প্রত্যাশামতো ওঠেনি। তাসকিন পেয়েছেন তৃতীয় উইকেটের দেখা। আফগানিস্তানের বাকি আর ৩ উইকেট।
প্রথম সেশনে আসবে ফল?
আফগানিস্তানের ১০০
দেড় ঘণ্টায় আফগানিস্তান তুলেছে ৫৫ রান, তবে হারিয়েছে ৫ উইকেট। আফগানিস্তান পেরিয়েছে ১০০।
পেসারদের টেস্ট
উইকেট সবুজাভ, এমনকি ম্যাচের আগে ৪ পেসার খেলানোর কথাও উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত খেলছেন তিন জন পেসার। রেকর্ডও গড়লেন তাঁরা। এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের ১৭টি উইকেটের মধ্যে ১৩টিই নিয়েছেন তিন পেসার। দেশের মাটিতে এক ম্যাচে বাংলাদেশের পেসারদের যা সর্বোচ্চ। এর আগে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ ১০টি উইকেট বাংলাদেশের পেসাররা নিয়েছিলেন ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে।
সফল মিরাজ, রইল বাকি দুই
মিরাজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলেন আমির হামজা। হাতের পর হেলমেটে লেগে উঠেছিল ক্যাচ, শর্ট লেগে যেটি নেন মুমিনুল হক। তবে আম্পায়ার পল রাইফেল আউট দেননি। তবে মিরাজ ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, লিটনও নেন রিভিউ। এরপর আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে, হেলমেটের আগে গ্লাভসে লেগেছিল হামজার। মধ্যাহ্নবিরতির মিনিট চারেক আগে পড়ল আফগানিস্তানের অষ্টম উইকেট।
তাসকিনের চতুর্থ
তাসকিন আহমেদের চতুর্থ? ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন ইয়ামিন আহমেদজাই। ফুললেংথে ছিল বল। তবে যেভাবে তুলতে চেয়েছিলেন, সেভাবে পারেননি। মিড অফে থাকা মুশফিক ডানদিকে ঝুঁকে নিয়েছেন ভালো ক্যাচ। ক্যাচ ঠিকঠাক হয়েছে কি না, সে নিয়ে শুরুতে একটু ধোঁয়াশা থাকলেও আহমেদজাই হাঁটা দিয়েছেন। আম্পায়াররাও টেলিভিশন আম্পায়ারের কাছে যাননি। বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন আর ১ উইকেট।
২ বলে দুবার ‘জয়বঞ্চিত’ বাংলাদেশ
তাসকিন আহমেদ সেজদাও দিয়ে ফেলেছিলেন। জহির খানকে কট-বিহাইন্ড দিয়েছিলেন আম্পায়ার, তাসকিন পেয়েছিলেন ৫ উইকেট! তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান জহির। ঠিক পরের বলেই তাসকিনের ফুলটস মিস করে বোল্ড জহির। প্রথম সেশনেই শেষ আফগানিস্তান। মিরপুরে একমাত্র টেস্ট বাংলাদেশ জিতল ৫৪৭ রানে। না, তাসকিনের বলটি কোমরের বেশি উচ্চতায় ছিল বলে ডাকা হয়েছে নো বল। পরপর ২ বলে বেঁচে গেলেন জহির, পরপর ২ বলে জয় পেয়েও পাওয়া হলো না বাংলাদেশের। ৫ উইকেট পেয়েও পেলেন না তাসকিন!
জয়ের সম্ভাবনা আছে বলে বাড়ানো হয়েছে প্রথম সেশন।
৫৪৬ রানে জিতল বাংলাদেশ
তাসকিন ৫ উইকেট পেলেন না। তাঁর বলে আঘাত পেয়ে রিটায়ার্ড আউট হয়ে গেছেন জহির খান। বাংলাদেশ মিরপুর টেস্ট জিতেছে ৫৪৬ রানে। শুধু রানের হিসেবে টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় বৃহত্তম জয় এটি কোনো দলের।
প্রথম সেশনেই জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হওয়াতে খেলা বাড়ানোর কথা ছিল ১৫ মিনিট। তবে আফগানিস্তান সে পর্যন্তও টিকে থাকতে পারল না। চতুর্থ দিন সকালে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা (একজন হয়েছেন রিটায়ার্ড আউট)।
এ দিন আফগানিস্তান যোগ করতে পেরেছে ৭০ রান। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ গতকাল বাউন্সারে আঘাত পেয়ে উঠে যান, আজ তাঁর কনকাশন বদলি হিসেবে অভিষেক হয় বহির শাহর। তবে আফগানিস্তান ম্যাচ বেশি দূর টানতে পারল না।
এ টেস্টে ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন নাজমুল হোসেন, জোড়া সেঞ্চুরি করেন এ বাঁহাতি। ২৬ ইনিংসের সেঞ্চুরি-খরা কাটিয়েছেন মুমিনুল হকও। আর উজ্জ্বল ছিলেন পেসাররা। প্রথম ইনিংসে খাপছাড়া মনে হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণভাবে ছন্দে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ। ইবাদত-শরীফুলরা তো আলো ছড়িয়েছেন দুই ইনিংসেই।
২০১৯ সালে একমাত্র টেস্টে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। এ দেশের ক্রিকেটে সে হারের ক্ষত নানাভাবে বেশ দগদগে হয়ে ওঠে মাঝে মাঝেই, বিশেষ করে বোর্ডের পক্ষ থেকে সে হারের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এবার ফিরতি টেস্টে অন্য এক বাংলাদেশকেই দেখল আফগানিস্তান।
বলছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক
যত খেলব, তত শিখব। যত খেলব, টেস্ট ক্রিকেটে তত উন্নতি হবে।
ম্যাচসেরা নাজমুল হোসেন
যেভাবে দল জিতেছে, আমি ব্যাটিং করেছি, তাতে খুবই খুশি।
খুশি অধিনায়ক লিটন
এই গরমে খেলা সহজ নয়। তবে ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্ব দিতে হবে। এ উইকেটে বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে, সেটি দেখা দুর্দান্ত ছিল।
টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকেই জয় পেলেন লিটন দাস।