২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘বাজবল ০, অজিবল ১’

রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তির ম্যাচে জয়ের উল্লাস প্যাট কামিন্সেররয়টার্স

গত এক বছরে ইংল্যান্ডের বাজবল ক্রিকেট বেশ সফলই বলা যায়। অ্যাশেজের আগে ১৩ টেস্টে ১১ জয় সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। তবে একই ধারার ক্রিকেট খেলে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ফল ইংল্যান্ডের পক্ষে আসেনি। শেষ দিনের শেষ ঘণ্টায় ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সিজির শুরুর আগে বাজবল নিয়ে যে আওয়াজ উঠেছিল, প্রথম টেস্টের পর সেটার সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে। অস্ট্রেলিয়ানরা নিজেদের প্রথাগত ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জিতে নিয়েছে, কিন্তু বাজবল খেলে ইংল্যান্ড পারেনি—এটি বোঝাতে মিরর স্পোর্টসের শিরোনাম: ‘বাজবল ০, অজিবল ১’। স্পোর্টসস্টারের শিরোনাম আরও রূঢ়- ‘এ রিয়েল কিক ইন দ্য বাজবলস’।

এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডের হারের কারণ হিসেবে অনেক কারণই আলোচনায় উঠে আসছে। এর মধ্যে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৭৮ ওভার ব্যাট করে চার শ রান তোলার আগেই ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়াটা স্টোকসের ভুল ছিল বলে অনেকের অভিমত। ডেইলি মেইলে এ নিয়ে কিছুটা বিপরীতধর্মী বক্তব্য দিয়েছেন দুই সাবেক ক্রিকেটার নাসের হুসেইন ও ডেভিড লয়েড। লয়েড তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘ইংল্যান্ডের হারের কারণ তিনটি। এই পিচ বোলারদের জন্য সহায়ক ছিল না, মঈনের চোট আর ইনিংস ঘোষণা, যার কারণে অন্তত ৪০টি রান কম হয়েছে।’

হারে অ্যাশেজ শুরু হয়েছে বেন স্টোকসদের
রয়টার্স

সাবেক অধিনায়ক নাসের অবশ্য ইংল্যান্ডের ভুল নিয়ে সমালোচনায় আগ্রহী নন। অ্যাশেজে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা নাসের বলেছেন, ‘ভিন্ন ধারার টেস্ট ক্রিকেটের মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দেওয়া ও খেলাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় ওরা যা করেছে, তার জন্য আমি সমালোচনার পথে হাঁটতে রাজি নই। কিছু একটা প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পরই ছুড়ে ফেলা যায় না।’

আরেক সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন অবশ্য কোথায় ভুল হয়েছে, সেটি নিয়ে চুপ থাকতে রাজি নন। তবে প্রথম ইনিংস আগেভাগে ঘোষণা করে দেওয়া কিংবা বোলারদের যথেষ্ট জ্বলে উঠতে না পারা নয়, ভনের চোখে ইংল্যান্ডের খুঁতটা ছিল ফিল্ডিংয়ে।

নবম উইকেটে ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে ফেরেন কামিন্স–লায়ন
রয়টার্স

এর পরও অবশ্য টেলিগ্রাফে লেখা কলামে স্টোকসদের উৎসাহ জুগিয়েছেন ভন, ‘ম্যাচের বেশির ভাগ সময় ইংল্যান্ড খুব ভালো খেলেছে। এই ম্যাচ থেকে অনেক কিছুই নেওয়ার আছে। আর ইংল্যান্ডের এখনো অ্যাশেজ জেতার সুযোগ আছে। ২০০৫ সালে আমরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে যাওয়ার পরও কিন্তু সিরিজ জিতেছিলাম। আমি জানি, ইংল্যান্ডের এই দলটাও বিশ্বাস করে তারা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে। ইংল্যান্ডের জয়টা ফসকে গেছে একটা জায়গায় তীক্ষ্ণতার অভাবের কারণে। ম্যাচে ৬টা ক্যাচ মিস করেছে।’

আরও পড়ুন

টেলিগ্রাফের প্রধান ক্রিকেট লেখক নিক হল্ট অবশ্য ২০০৫-পরবর্তী উদাহরণ টেনে এনেছেন। একই সঙ্গে স্টোকস-রুটদের সামর্থ্যেও আস্থা রাখছেন, ‘২০০৫ সালের পর আর কোনো অ্যাশেজে প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়া দল ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তবে এটাও সত্যি, যেসব দল ওই অবস্থায় পড়েছিল, তাদের মধ্যে এই ইংল্যান্ড দলই ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য রাখে।’

হল্ট অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার সামর্থ্যকেও বড় করে দেখছেন। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে হওয়া সর্বশেষ অ্যাশেজে ২-২ ড্র করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবারও প্রথম ম্যাচেই জয়।

ইংল্যান্ডের বাজবলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রথাগত ক্রিকেটের লড়াই সামনের চার ম্যাচে বেশ জমজমাটই হয়ে উঠবে বলে ধারণা টেলিগ্রাফ সাংবাদিকের, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার, একই ম্যাচে দুটি দলের ভিন্ন ধারার খেলার কারণে এই সিরিজটা অসাধারণ একটা লড়াইয়ে পরিণত হতে যাচ্ছে। আর আপনি যদি ইংল্যান্ডের পক্ষে বাজি ধরেন, তাহলে তাদের গৌরবজনক ব্যর্থতার বিষয়টিও মেনে নিতে হবে।’

আরও পড়ুন