সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ২৩৬ রান
প্রথম দুই ম্যাচের মতো আজও টস পক্ষে আসেনি নাজমুল হোসেনের। আগে বোলিং করতে হয়েছে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসের ইচ্ছায়। তবে ম্যাচের মাঝপথে এ নিয়ে খুব বেশি আক্ষেপ থাকার কথা নয় বাংলাদেশ অধিনায়কের। জানিত লিয়ানাগের সেঞ্চুরির পরও তাসকিন আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমান-মেহেদী হাসান মিরাজরা শ্রীলঙ্কাকে আটকে দিয়েছেন আড়াই শর ভেতরেই।
চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ২৩৫ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ১-১ সমতায় থাকা সিরিজ জিতে নিতে বাংলাদেশের দরকার ২৩৬ রান। এবারের আগে দুই দলের খেলা ৯ সিরিজের বাংলাদেশ জিতেছিল মাত্র একটিতে।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটিতে বাংলাদেশ নামে দ্বিতীয় ওয়ানডের দলে তিন পরিবর্তন নিয়ে। দল থেকে বাদ পড়া লিটন দাসের জায়গায় এনামুল হক, চোটে ছিটকে যাওয়া তানজিম হাসানের জায়গায় মোস্তাফিজুর রহমান আর তাইজুল ইসলামের জায়গা নেন রিশাদ হোসেন।
সকালে বাংলাদেশ প্রথম সাফল্য পায় দ্বিতীয় ওভারেই। তাসকিন আহমেদের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে এলবিডব্লু হন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা পাতুম নিশাঙ্কা। আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবোরোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করলে অবশ্য নিশাঙ্কা বেঁচে যেতেন, বলের গতিপথ ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। তাসকিন তাঁর পরের ওভারে ফেরান আরেক ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দোকেও। লেংথে পড়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আভিস্কা।
১৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কা তৃতীয় উইকেটে মনোযোগ দেয় টিকে থাকার দিকে। সাদিরা সামারাবিক্রমা ও কুশল মেন্ডিসের জুটি সে লক্ষ্যে কিছুটা সফলও হয়। তবে ১১তম ওভারে প্রথম বদলি বোলার হিসেবে মোস্তাফিজ আক্রমণে আসতেই আবার উইকেট। তানজিমের জায়গায় খেলা এই বাঁহাতি পেসারের বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন সামারাবিক্রমা (১৫ বলে ১৪)।
মোস্তাফিজের মতো বোলিং আক্রমণে এসে উইকেট তুলে নেন রিশাদও। তা-ও প্রথম বলেই। একপ্রান্ত আগলে রাখা কুশল রিশাদের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। থামে ৫১ বলে ৩ চারে খেলা ২৯ রানের ইনিংস। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে রিশাদের এটি প্রথম উইকেট। এর আগে গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেললেও উইকেটশূন্য ছিলেন।
৭৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কা ইনিংসের বাকিটা টানেন জানিত লিয়ানাগে। এক পাশে কেউ থিতু হতে না পারলেও নিজের প্রান্ত ধরে রাখেন ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত। পঞ্চম উইকেটে চারিত আসালঙ্কার সঙ্গে ৪১ আর অষ্টম উইকেটে মহীশ তিকশানার সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার রান ২০০ পার করিয়ে দেন লিয়ানাগে।
৬৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করা এই ডানহাতি সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান ১০১ বলে। ৯ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। লিয়ানাগে শেষ পর্যন্ত ১০২ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন, যে ইনিংসে ১১ চারের সঙ্গে ছিল ২টি ছয়।
ম্যাচের শেষদিকে বাংলাদেশকে আঘাত করেছে একের পর এক চোট। বোলিংয়ের মাঝে স্ট্রেচারে করে উঠে গেছেন মোস্তাফিজ। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়েছেন সৌম্য। আর শেষে এসে ক্যাচ নিতে গিয়ে এনামুলের সঙ্গে সংঘর্ষের পর স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়েছেন বদলি ফিল্ডার জাকের আলীও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৩৫ (নিশাঙ্কা ১, ফার্নান্ডো ৪, কুশল ২৯, সামারাবিক্রমা ১৪, আসালাঙ্কা ৩৭, লিয়ানাগে ১০১*, ভেল্লালাগে ১, হাসারাঙ্গা ১১, তিকশানা ১৫, মাদুশান ৩, কুমারা ১; শরীফুল ১০-০-৫৫-০, তাসকিন ১০-১-৪২-৩, মোস্তাফিজ ৯-১-৩৯-২, সৌম্য ২-০-১০-১, মিরাজ ১০-১-৩৮-২, রিশাদ ৯-০-৫-১)।