বিশ্বকাপে পাকিস্তান যে বাড়তি সুবিধা পাবে

পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমপিসিবি এক্স

সুনীল গাভাস্কার, ব্রায়ান লারা, ম্যাথু হেইডেন—ক্রিকেটের বড় এই ব্যক্তিত্বরা পাকিস্তানকে এবারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেই দেখছেন না। যদিও রেকর্ড বলছে, এবারের আগে হওয়া আটটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মধ্যে পাকিস্তানই সবচেয়ে বেশি ৬ বার সেমিফাইনাল খেলেছে, যৌথভাবে সর্বোচ্চ তিনবার উঠেছে ফাইনালেও।

বিশ্লেষকেরা যা–ই বলুন, এবার যুক্তরাষ্ট্র–ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে চলা বিশ্বকাপে পাকিস্তানের আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে যথেষ্টই। বিশেষ করে কন্ডিশন–অভ্যস্ততার দিক থেকে পাকিস্তান এত বেশি এগিয়ে আছে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া আর কোনো দল এমন সুবিধাজনক জায়গায় নেই।

আরও পড়ুন

এবারের বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের তিন ভেন্যুতে রাখা হয়েছে ১৬টি ম্যাচ। সবচেয়ে বেশি ৩৯ ম্যাচ রাখা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয়টি ভেন্যুতে। কন্ডিশনের দিক থেকে পাকিস্তানের সুবিধার জায়গাও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলেই। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে থাকা ১৫ জনের মধ্যে ৭ জনেরই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে অন্য কোনো দেশের স্কোয়াডে এত বেশি সিপিএল–অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড় নেই।

পাকিস্তানের যাঁরা সিপিএলে খেলেছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাদ ওয়াসিম আর মোহাম্মদ আমিরদের পারফরম্যান্স বেশ ভালো। ইমাদ এখন পর্যন্ত সিপিএলে খেলেছেন ৫৪ ম্যাচ। এর মধ্যে ৬১ উইকেট নিয়েছেন ৬.২০ ইকোনমি রেটে। সিপিএল খেলা স্পিনারদের মধ্যে এর চেয়ে ভালো ইকোনমি রেট আছে শুধু সুনীল নারাইনের। আর সাড়ে তিন বছর পর পাকিস্তান দলে ফেরা আমির তিন মৌসুমে নিয়েছেন ৪৩ উইকেট, ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন মাত্র ৬.৫০। সিপিএলে অন্তত ৪০ ওভার বোলিং করা পেসারদের মধ্যে এর চেয়ে ভালো ইকোনমি আর কারও নেই।

আমির–ইমাদদের সিপিএলের এ সাফল্য বলে দিচ্ছে, কন্ডিশনটা তাঁদের ভালো জানা। যা ফুটে উঠেছে ইমাদের কথায়ও, ‘সিপিএলে সবচেয়ে ভালো করে যেটা শিখেছি, সেটা হচ্ছে ওখানকার বাতাসের ব্যবহার। ওটা দ্বীপাঞ্চল, অনেক সময়ই বাতাস থাকে। স্কিল কাজে লাগিয়ে এই বাতাস ব্যবহার করা হয়। বাতাসের প্রান্ত থেকে রান আটকানোর চেষ্টা করা যায়। আর ব্যাটিংয়ের সময় অপর পাশ কাজে লাগাতে হয়। বিশ্বকাপে প্রতিটি মাঠেই এই ট্যাকটিক্যাল লড়াইটা চলবে।’

আরও পড়ুন

ক্যারিবিয়ানের উইকেট কেমন চেনা হয়ে গেছে, সেটা বলেছেন আমিরও। বার্বাডোজ রয়্যালস ও জ্যামাইকা তালাওয়াহসের হয়ে খেলা এই পেসার ক্রিকইনফোকে বলেছেন, দিন বা রাত যে সময়ের ম্যাচই হোক, শুরুতে সুইং পাওয়া যায়। পাকিস্তান সুপার এইটে উঠলে তিন ম্যাচের দুটিরই ভেন্যু বার্বাডোজ। ২৯ জুন টুর্নামেন্টের ফাইনালও সেখানেই। আমির জানান, সেখানে রাতের ম্যাচে বড় স্কোরও তাড়া করাটা সহজ হয়ে ওঠে।

সুপার এইটে যাওয়ার আগে পাকিস্তান তাদের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ খেলবে যুক্তরাষ্ট্রে। ভারত ও কানাডার বিপক্ষে নিউইয়র্কে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্লোরিডায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ডালাসে। এখানেও খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে ইমাদের। সে অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমি ডালাস ও মায়ামিতে মেজর লিগ ক্রিকেট খেলেছি। এই উইকেটগুলোও ভালো জানি। এখানেও বাতাসের একটা ভূমিকা থাকে। অনেকটা সিপিএলের মতো কন্ডিশন। আমার মনে হয়, নিউইয়র্ক ও ডালাসে বড় রান হবে।’

ইমাদ অবশ্য ডালাসে পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচে চোটের কারণে খেলতে পারছেন না। তবে কন্ডিশনের অভিজ্ঞতা দলের সঙ্গে নিশ্চয়ই ভাগাভাগি করেছেন। সুপার এইটে উঠলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভেন্যুর ক্ষেত্রে যে সুযোগ কাজে লাগানোর কথা সাতজনেরই।