২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সিডনি থেকে ইমরান খানের ‘একাকিত্ব’ কাটালেন আমের জামাল

সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেন আমের জামালএএফপি

স্বপ্নের অভিষেক? সে তো বটেই। পার্থে প্রথম ইনিংসে পেয়েছিলেন ৬ উইকেট। মেলবোর্নে দুই ইনিংস মিলিয়ে নিলেন ৫ উইকেট। এরপর সিডনিতে আজ তৃতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে তাঁর শিকার ৬ উইকেট। এই হলো ১৭ উইকেট। এর সঙ্গে পার্থে দ্বিতীয় ইনিংসে পাওয়া ১ উইকেট যোগ করলে হয় ১৮। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৩ ম্যাচে এমন পারফরম্যান্সের পর তাকে তো স্বপ্নের অভিষেক বলাই যায়! তবে মুহূর্তটা এখনই ফুরিয়ে যায়নি। সিডনি টেস্টে এখনো কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস বাকি।

আরও পড়ুন

বলা হচ্ছিল আমের জামালের কথা। এবার অস্ট্রেলিয়া সফরে বিস্ময় হয়ে ধরা দিয়েছেন জামাল। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘জিও সুপার’ জানিয়েছে, সিডনি টেস্টে ৬ উইকেট নিয়ে দারুণ রেকর্ড গড়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই পেসার। পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে অভিষেক সিরিজে (৩ ম্যাচ কিংবা তার কম) ১৮ উইকেট নিলেন আমের। শুধু কী তা–ই, সিডনিতে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে ৯৭ বলে ৮২ রানের কার্যকর এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার মধ্য দিয়ে আমের বসলেন কিংবদন্তি ইমরান খানের পাশে।

অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তানের বড় আবিস্কার আমের জামাল
এএফপি

১৯৮৩ সালে ফয়সালাবাদ টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর প্রথম ইনিংসে ১১৭ রান করেছিলেন ইমরান। আমের যেহেতু ৮২ রান করেছেন, তাই হিসাবটা ৮০ রান থেকে শুরু করলে শুধু এই দুজনকেই পাওয়া যায়। কোথায়? পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে ন্যূনতম ৮০ রানের ইনিংস এবং প্রতিপক্ষের ৬ উইকেট পাওয়া ক্রিকেটার এখন দুজন। আগে সেখানে একাই ছিলেন ইমরান, সিডনির কীর্তিতে তাঁর একাকিত্ব কাটালেন জামাল।

মনে হচ্ছে আমি আকাশে উড়ছি। এই পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্ব লাগছে।
আমের জামাল

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সফরকারী দলের কোনো খেলোয়াড়ের এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স খুব বেশি নেই। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এর আগে শুধু দুজন খেলোয়াড় কমপক্ষে ১২৫ রানের পাশাপাশি কমপক্ষে ১৫টি‍ উইকেট নিতে পেরেছেন—ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম এবং পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম।

পেসার হিসেবে দলে ঢুকে অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা জামাল এবার তাঁদের পাশে বসলেন। এই সিরিজে ১৮ উইকেট নিয়ে প্যাট কামিন্সের সঙ্গে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির জায়গাটা ভাগাভাগি করেছেন জামাল। এর পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছেন ১২৫ রান। আজ তৃতীয় দিনে ০ রানে অপরাজিত থাকা আমের আগামীকাল নিশ্চয়ই এই রানসংখ্যা যতটা সম্ভব বাড়ানোর চেষ্টা করবেন।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস গড়ার পর বল উঁচিয়ে দেখাচ্ছেন আমের
এএফপি

জামালকে এই সিরিজে আবিষ্কার বলেই মনে করছেন ভারতের ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ তাঁর পোস্ট, ‘পাকিস্তান সম্ভবত সিরিজটা হারবে। কিন্তু দারুণ দুটি প্রতিভার সন্ধান পেয়েছে—আগা সালমান ও আমের জামাল।’

আরও পড়ুন

জামাল নিজে কী ভাবছেন? অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষে এ নিয়ে কথা বলেছেন পাকিস্তানি পেসার। শুনুন তাঁর মুখেই, ‘মনে হচ্ছে আমি আকাশে উড়ছি। এই পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্ব লাগছে। এখনো মনে আছে, সেসব দিনে (ছোটবেলায়) পাকিস্তান দলের খেলা দেখেছি...এমনকি আমি রান দিলেও সব সময় সেসব স্মৃতি মনে করি। কোচেরা আমাকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন।’

ব্যাটিংয়ের পাকিস্তানের অবস্থা মোটেও সুবিধার না হলেও আশা হারাচ্ছেন না জামাল, ‘২২৭ রানে আমাদের ৭ উইকেট পড়েছিল। আমার মনে হয় ওই জুটিটি আমাদের ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছে। এখন আমরা কিছু রান এগিয়ে আছি, যেটা গুরুত্বপূর্ণ।’

আরও পড়ুন