ব্রড–অ্যান্ডারসন: এক হাজার উইকেট নট আউট
স্টুয়ার্ট ব্রডের আগের দুটি বলই ছিল শর্ট লেন্থের, গতি যথাক্রমে ঘণ্টায় ১৪০.১ ও ১৪১.৪ কিলোমিটার। একটিকে জায়গা বানিয়ে পুল শটে স্কয়ার লেগ দিয়ে অন্যটিকে টপ–এজডের সাহায্যে ছয় বানিয়ে সীমানার ওপারে পাঠালেন নিল ওয়াগনার।
আগের দিন ‘নাইট ওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা নিউজিল্যান্ডের এই বোলার তখন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান। পরের ডেলিভারিতেই গতি কমিয়ে দিলেন ব্রড, ফেললেন ফুল লেন্থে। এবার টাইমিংয়ে গড়বড় ওয়াগনারের। আগেভাগে ফ্লিক করতে গিয়ে বল তুলে দিলেন আকাশে। ওলি রবিনসনের ক্যাচ হয়ে ওয়াগনার যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন, ব্রডের মুখে ফুটে উঠল ‘ব্যাটসম্যান–বোলারের’ চিরন্তন লড়াই–জয়ের উচ্ছ্বাস!
আজ মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম সেশনে ব্রডের ওই উচ্ছ্বাস শুধু ওয়াগনারের সঙ্গে লড়াই জেতার নয়, বিরল এক কীর্তি গড়ারও। এই উইকেটটির মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে জিমি অ্যান্ডারসন–ব্রড জুটির উইকেটসংখ্যা হাজার ছুঁয়েছে। ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে জুটি হিসেবে এর আগে এক হাজার উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল শুধু গ্লেন ম্যাকগ্রা–শেন ওয়ার্নের।
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বোলিং জুটি একসঙ্গে সহস্র উইকেটের মালিক হয়েছিলেন ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনি টেস্টে। ১৬ বছর পর সেই ইংল্যান্ডেরই দুই পেসার একই রেকর্ডে নাম লেখালেন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী দেশের মাটিতে!
ম্যাকগ্রা–ওয়ার্ন জুটি হাজার উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন ১০৪ টেস্টে। অ্যান্ডারসন–ব্রডদের লাগল ১৩৩ টেস্ট। ম্যাচ সংখ্যায় বেশি লাগলেও একটা জায়গায় দুই ইংলিশ বোলার অনন্য। তাঁরা দুজনই পেসার, পেস জুটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেটও এ দুজনেরই (আলাদাভাবে ১৭৮ টেস্টে অ্যান্ডারসনের উইকেট ৬৭৭, ব্রডের ১৬০ টেস্টে ৫৬৭)। ৯৮
ঝুঁকি না নিয়ে বলে দেওয়া যায়, অ্যান্ডারসন–ব্রডের এই কীর্তি টিকে থাকবে বেশ কয়েক বছর। কারণ, এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের জুটি বেশ পেছনে–অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়নের যৌথ শিকার সংখ্যা ৫৮০।
ম্যাকগ্রা–ওয়ার্নরা থেমেছেন ১০০১ উইকেট নিয়ে। আজ নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ওয়াগনারকে ফিরিয়ে ব্রড এক হাজারতম উইকেট এনে দেওয়ার পর ড্যারিল মিচেলকে আউট করে সেটিও ছুঁয়ে ফেলেছেন অ্যান্ডারসন। এখন নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তিদের পেরিয়ে যাওয়ার পালা তাঁদের।
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ইংল্যান্ড নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৭৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে। উইকেটে রয়েছেন ওলি পোপ ও ‘নাইটওয়াচম্যান’ স্টুয়ার্ট ব্রড।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০৬ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। সেঞ্চুরি তুলে নেন টম ব্লান্ডল (১৩৮)। ৭৭ রান ডেভন কনওয়ের। অ্যান্ডারসন ৩টি, ওলি রবিনসন ৪টি ও ১টি করে উইকেট ব্রড এবং স্টোকসের। ৯৮ রানের লিড নিয়েছে ইংল্যান্ড। ৯ উইকেটে ৩২৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল বেন স্টোকসের দল।