দুই মাস পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তার আগে আগামী মাসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এখনো শাহিন আফ্রিদিদের জন্য কোচই নিয়োগ দিতে পারেনি। ম্যাথু হেইডেন, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার থেকে শুরু করে জাস্টিন ল্যাঙ্গার, মাইক হেসনের সঙ্গে পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয়েছে। এমনকি কখনো কোনো জাতীয় দলকে কোচিং না করানো শেন ওয়াটসনকে বড় অঙ্কের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোচ এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি পিসিবি।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এই কোচ খোঁজাখুঁজির প্রক্রিয়ায় বিরক্ত আকিব জাভেদ। পাকিস্তানের এই সাবেক ফাস্ট বোলার ও বোলিং কোচ মনে করেন, পিসিবি যোগ্যতা অনুসারে কোচ খোঁজে না। একজনকে খুঁজে নিয়ে সে অনুসারে যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে। এ বিষয়ে পিসিবির পেশাদারত্বের ঘাটতি দেখেন তিনি।
১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য আকিব পাকিস্তানের ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের বোলিং কোচ ছিলেন। প্রধান কোচ ছিলেন ২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাকিস্তান দলের। মাসখানেক ধরে পিসিবি যখন নতুন প্রধান কোচ খুঁজছে, এর মধ্যেই গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন আকিব। পিসিবির নতুন চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি বিদেশি কাউকে প্রধান কোচের দায়িত্ব দিতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল ওয়াটসন। পিএসএলে কোয়েটা গ্লাডিয়েটরসকে কোচিং করাতে যাওয়া এই অস্ট্রেলীয়কে বছরে ২০ লাখ মার্কিন ডলার বেতনও দিতে রাজি ছিল পিসিবি। কিন্তু ওয়াটসন শেষ পর্যন্ত রাজি হননি।
কোচ হিসেবে আইপিএলে সহকারি কোচ আর পিএসএলে প্রধান কোচ ছাড়া কোনো আন্তর্জাতিক দল সামলানোর অভিজ্ঞতা নেই ওয়াটসনের। তবু তাঁর জন্য পিসিবির রেকর্ড অঙ্কের বেতনে রাজি হয়ে যাওয়া নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। আকিব এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ক্রিকেটপাকিস্তানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিসিবির দীর্ঘদিনের কোচ খোঁজার পদ্ধতি নিয়ে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, ‘আমি ঈর্ষাকাতর হয়ে বলছি না, মন থেকেই বলছি। আপনি যদি গত ১০-১২ বছরের দিকে তাকান, মিকি আর্থার ছাড়া আর কোনো পেশাদার কোচই নিয়োগ দেয়নি পিসিবি। সারা বিশ্বে যখন কোচ নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, তখন প্রধান মানদণ্ড থাকে কোচিংয়ে লেভেল থ্রি প্লাস যোগ্যতা। এর সঙ্গে চার-পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিজ্ঞতা।’
কিন্তু পিসিবির কোচ খোঁজার পদ্ধতি ভিন্ন উল্লেখ করে আকিবের মন্তব্য, ‘পিসিবি আগে ব্যক্তি খুঁজে বের করে। এরপর ওই ব্যক্তি অনুসারে কোচ চেয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করে। যখন আপনি বিজ্ঞাপন ঠিকঠাক রাখবেন না, তখন যেকেউই আবেদন করতে পারে। তাহলে কোচ পদে আবেদনের মানদণ্ডটা আসলে কী?’
বিশ্বকাপের পর মিকি আর্থার ও গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্নকে সরিয়ে মোহাম্মদ হাফিজকে ক্রিকেট ডিরেক্টর কাম প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত মাসে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কী যোগ্যতার ভিত্তিতে কোচ নিয়োগ দেওয়া হবে, পিসিবির আগে এটা ঠিক করা দরকার বলে পরামর্শ দিয়েছেন আকিব, ‘আমি সব সময়ই বলে এসেছি, আগে মানদণ্ড তৈরি করুন, এরপর সেটা অনুসারে কোচের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। কোনো যোগ্যতা ছাড়া, অভিজ্ঞতা ছাড়া, যে এক দিনও কোচিং করায়নি, এমন একজনকে আপনি প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দিচ্ছেন। আমি সমালোচনা করছি না। বলতে চাচ্ছি, কাজটা আপনাদের পেশাদারত্বের সঙ্গে করা উচিত।’