‘কে না কে’ ভেবে ম্যাককালামের ফোনই ধরেননি ইংল্যান্ড দলে ডাক পাওয়া এই স্পিনার
ভারতের বিপক্ষে আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড দলে ডাক পেয়েছেন ২০ বছর বয়সী অফ স্পিনার শোয়েব বশির। তাঁর ডাক পাওয়া যেমন বড় চমক, ঠিক তেমনি এটি চমক ছিল বশিরের নিজের কাছেও। প্রথমে ‘কে না কে’ ভেবে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কলই রিসিভ করেননি তিনি!
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের জন্য ১১ ডিসেম্বর ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। সেখানে ডাক পেয়েছেন সমারসেটের অফ স্পিনার। ফোন করে সে সুখবরটাই ম্যাককালাম দিতে চেয়েছিলেন বশিরকে। ইংল্যান্ডের কোচ নিউজিল্যান্ডে ছিলেন বলে তাঁর ডায়ালিং কোডটাও আলাদা ছিল। টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বশির বলেছেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, “কে এটা?” যে কেউই হতে পারে।’
ফোনে না পেয়ে ম্যাককালাম এরপর হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠান বশিরকে। সে ঘটনা বর্ণনা করে বশির বলেন, ‘কেউ খোঁচাচ্ছে, এমনটি ভাবিনি। আসলে তেমন কিছু ভাবতেই পারিনি শুরুতে। এরপর খেয়াল হয়েছে, “আরে এটা তো বাজ (ম্যাককালামের ডাক নাম)।”’
যখন সত্যিই বুঝেছেন, ইংল্যান্ড টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন, আনন্দে এরপর কেঁদেও দিয়েছেন তিনি। সেই উচ্ছ্বাসটা বশিরের কথাতেই স্পষ্ট, ‘সত্যি বলতে কি, এখন ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না। দু-তিন দিন হয়ে গেছে, (তবে) এটা এতটাই বিশেষ কিছু। এমন সুযোগ পেয়ে অনেক ভালো লাগছে—খবরটা একেবারেই পাগলাটে।’
ক্যারিয়ারে বশির এখনো পর্যন্ত খেলেছেন মাত্র ছয়টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই তিনি এখন কেমন, এর চেয়েও দলে ডাক পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় হয়ে এসেছে তিনি কী হতে পারেন—সেটি। ভারতের কন্ডিশনে ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার একজন অফ স্পিনারকে কাজে লাগাতে চায় ইংল্যান্ড। এর আগে পাকিস্তান সফরেও খেলানো হয়েছিল লেগ স্পিনার রেহান আহমেদকে।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইংল্যান্ড লায়নের হয়ে সফর শেষ করে ফিরেছেন বশির। আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে সে সফরে তিনি ৪২ রানে নেন ৬ উইকেট। সে সফরে ছিলেন গ্রায়েম সোয়ান ও অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফও। বশিরকে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে তাঁদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তা বলাই যায়।
ভারতে সুযোগ পেলে ভালো কিছু করতে পারবেন, বশিরের আশা সেটিও, ‘আমার অফ স্পিনার আছে, আন্ডার-কাটার আছে, সাইড-স্পিনার আছে, আর্ম বলও আছে। এখন ক্যারম বল নিয়ে কাজ করছি। ফলে কয়েকটি (অস্ত্র) আছে, আমার মনে হয় ভারতে ভালোভাবেই কাজে দেবে সেটি।’
মুসলিম বশিরের ভরসা তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাসও। তাঁর মতে, ‘আমার মনে হয় ধর্মের কারণেই আমি এখানে। আমি বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা আপনার জন্য সবকিছুর পরিকল্পনা করে রাখেন। যেটিই ভালো, তা তিনি আপনাকে দেবেন, যা ভালো নয়, তা দূরে সরিয়ে রাখবেন। কিন্তু তিনি ভালো কিছুও দূরে সরিয়ে দিতে পারেন।’