বারবার কেন ট্রটই আসেন
আজ তো সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা উঠেই গেল। যার সারমর্ম—তিন দিনই আপনি কেন? দলে কি আর কেউ নেই সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো!
উত্তরে আফগানিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কোচ যা বললেন, সেটা মনে করিয়ে দিল ডেভ হোয়াটমোরের কথা।
ডেভ হোয়াটমোর যখন কোচ ছিলেন, বাংলাদেশ দলের অবস্থা এখনকার মতো ছিল না। বিদেশ সফরে তো ছিল খুবই ভঙ্গুর অবস্থা। মাঠের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনেও মুখ লুকানোর জায়গা থাকত না।
বিদেশি সাংবাদিকেরা এমন সব প্রশ্ন করতেন, যেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ক্রিকেটীয় সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিত। বাজে দিনগুলোতে বুক পেতে সেই প্রশ্নের তিরগুলো নিতে সংবাদ সম্মেলনে চলে আসতেন হোয়াটমোর। ভাবখানা যেন এ রকম—যত তির আছে আমাকে মারো, খেলোয়াড়েরা নিরাপদে থাক!
মিরপুরে আজ ট্রটও অনেকটা সেভাবেই আগলালেন তাঁর ক্রিকেটারদের। টেস্টে এখন পর্যন্ত হওয়া তিন দিনই তাঁর সংবাদ সম্মেলনে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রট বলেছেন, ‘আমি মনে করি, কোচ হিসেবে আমার কাজই হলো সামনে থেকে সবকিছু ব্যাখ্যা করা, বিশেষ করে পরিস্থিতি যখন আপনার অনুকূলে থাকে না।’
অবশ্য আফগান ক্রিকেটারদের ইংরেজিতে দুর্বলতাও বারবার ট্রটের সংবাদ সম্মেলনে আসার একটা কারণ। কোচও সেটাকে একটা কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে এসব ক্ষেত্রে সঙ্গে দোভাষী রেখে কাজ চালানোর রীতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আছে। আফগানিস্তানও চাইলে সেই পথে যেতে পারত। কিন্তু ট্রট ভাবলেন, ‘আমিই যাই...।’
খারাপ খেললে সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নগুলো অনেকটা সমালোচনার মতোই শোনায়। খেলোয়াড়দের জন্য যেটা হয় কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো। ‘ওরা হয়তো জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে অতটা আত্মবিশ্বাসী নয়। কারণ, আপনারা তো খুব চালাক (হাসি)। হয়তো ওরা প্রশ্নটাই বুঝবে না। নার্ভাস থাকবে, তা ছাড়া ওরা একটু লাজুকও’—বলেছেন ট্রট।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে এ রকম কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যেতেই হবে। ট্রটও তাঁর খেলোয়াড়দের সেটাই বলেন, ‘আমি চেষ্টা করি উৎসাহ দিতে...ওরা যেন আসে। কিন্তু যেটা বললাম, আমার মনে হয় ওরা একটু লাজুক এবং একটু নার্ভাসও। তবে আশা করি ভবিষ্যতে ওরা আসবে।’
আফগানিস্তানের এই দলটা বয়সে বেশ তরুণ, কিছুটা অনভিজ্ঞও। নইলে সংবাদ সম্মেলন সামলানোর মতো ক্রিকেটার তাদেরও আছে। ট্রট সেটাই মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, ‘রশিদ, নবী, মুজিবের মতো খেলোয়াড়েরা এ রকম সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে অভ্যস্ত। এই দলের ক্রিকেটারদের জন্য হয়তো ব্যাপারটা নতুন। আমিও তাদেরকে খেলাতেই বেশি মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিই।’