শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে দেখা গেল অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৪০.৪ ওভারে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ’ আউট হন মুশফিকুর রহিম।
কাইল জেমিসনের করা সেই ওভারের চতুর্থ বলটি ব্যাকফুটে খেলেছিলেন ৩৫ রানে ব্যাট করা মুশফিক। বল ব্যাটে লেগে মাটিতে পড়ে বাউন্স খেয়েছিল। মুশফিক ইচ্ছাকৃতভাবে বলটি ডান হাত দিয়ে ধরেন। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা এতে আউটের আবেদন করেন। তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হলেন মুশফিক।
ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হলেন মুশফিক। টেস্টে এই আউট হলেন দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে। ১৯৫১ সালে ওভাল টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম এভাবে আউট হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ওপেনার লেন হাটন।
মুশফিক বলটি খেলার পর তা মাটিতে পরে স্টাম্পের ধারেকাছেও ছিল না। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বলটি হাত দিয়ে ধরার খেসারত দিতে হলো টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে। তখন ধারাভাষ্যে ছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিনের সতীর্থের এই আউট সম্পর্কে তামিম ব্যাখ্যা দেন, অনুশীলনে অভ্যাসের কারণে এটি হতে পারে। অনুশীলনে অনেক সময় অবচেতন মনেই ব্যাটসম্যান ডিফেন্স করে বল হাত দিয়ে ধরে বোলারকে ফেরত দেন।
ক্রিকেটের আইনে ৩৭.১.২ ধারায় এই আউট সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘বল খেলার মধ্যে থাকতে ব্যাটসম্যান যদি যে হাতে ব্যাট ধরা নেই, সেই হাত দিয়ে বল ধরেন, তবে এই আউট হবেন। কিন্তু যদি চোটের হাত থেকে বাঁচতে বল ধরেন তবে তিনি আউট হবেন না।’
এই আইনটি এক সময় ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউট নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউটকে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউটের অর্ন্তভুক্ত করা হয়। এতে ক্রিকেটের আউট ১০টি থেকে ৯টি হয়।
ছেলেদের ওয়ানডেতে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছেন ৮ জন। ১৯৮৭ সালে করাচিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম এভাবে আউট হন পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার রমিজ রাজা। এই সংস্করণে এভাবে আউট হওয়া সর্বশেষ ব্যাটসম্যান শ্রীলঙ্কার দানুস্কা গুনাতিলকা। ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন গুনাতিলকা।
ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম এই আউট হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের জেসন রয়। ২০১৭ সালে টনটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে এভাবে আউট হন রয়। দুই বছর পর মাসকটে কাতারের বিপক্ষে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন মালদ্বীপের হাসান রশিদ।
মেয়েদের ওয়ানডেতে একজনই ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছেন। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই আউট হয়েছিলেন ভারতের তিরুশ কামিনি। মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুজন এই আউট হয়েছেন। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন ভারতের আঞ্জুয়া পাতিল। গত বছর এপ্রিলে উইন্ডহকে এই আউট হন জিম্বাবুয়ের মেরি-অ্যান মুসোন্দা।