বাংলাদেশের স্বস্তি নাকি শঙ্কার সিরিজ
স্বস্তিতে ফেরার সম্ভাবনা, নাকি যোগ হবে হতাশার নতুন সংস্করণ? শারজায় আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ দিয়ে প্রায় আট মাস পর প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ দল। তার আগে ওরকম প্রশ্নের কারণ, টেস্ট এবং টি–টোয়েন্টিতে নাজমুল হোসেনের দলের অতি সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সটা ঠিক আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মতো নয়।
ওয়ানডেতে দুই দলের অতীত বাংলাদেশকে আশাবাদী করতেই পারে। আফগানদের বিপক্ষে ১৬টি ওয়ানডে খেলে ১০টিতেই জয়। সর্বশেষ তিন ওয়ানডেতেও জয় বাংলাদেশেরই। তা ছাড়া সব মিলিয়েই ওয়ানডেতে বাংলাদেশ আছে সাফল্যের ধারাবাহিকতায়। গত মার্চে ঘরের মাঠে খেলা সর্বশেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২–১ ম্যাচে সিরিজ জয়ের আগে গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় আছে নেপিয়ারে।
তবে আজ থেকে শুরু তিন ওয়ানডের সিরিজটা তো আর শুধু বাংলাদেশই খেলবে না, খেলবে আফগানিস্তানও। বাংলাদেশের বিপক্ষে অতীতটা এক পাশে সরিয়ে রাখলে ওয়ানডেতে তারাও আছে দারুণ অবস্থায়। এই শারজার মাঠেই গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২–১–এ সিরিজ জয় হাশমতউল্লাহ শহীদির দলকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে এটি তাদের প্রথম সিরিজ জয়। এর আগে এ বছরের মার্চে ‘ঘরের মাঠ’ শারজাতেই সিরিজ জিতেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও।
কাজেই সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা আফগানদেরকে সাদা বলের ক্রিকেটের কোনো সংস্করণেই সমীহ না করার কোনো কারণ নেই। তার ওপর রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীদের স্পিন আর ফজলহক ফারুকির গতির সঙ্গে এবার যোগ হয়েছেন ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সেদিকউল্লাহ আতাল।
আফগানিস্তানের হয়ে পাঁচটি টি–টোয়েন্টি খেলে ফেললেও এই বাঁহাতি ওপেনার আছেন ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায়। সুযোগ পেলে অভিষেকটা রঙিন করতে তাঁর ব্যাট মোটামুটি তেতেই আছে।
ইমার্জিং এশিয়া কাপে খেলা সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসে সেদিকউল্লাহর রান ৮৩, ৯৫*, ৫২, ৮৩ ও ৫৫*। অপরাজিত ৯৫ রানের ইনিংসটি খেলেছেন আবার বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে। আফগানিস্তান ‘এ’ দলকে ইমার্জিং এশিয়া কাপের শিরোপা এনে দিয়ে সেদিকউল্লাহ হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও। ১৯ সদস্যের আফগান স্কোয়াডে আরও দুই নতুন মুখ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দরবিশ রাসুলি ও পেসার বিলাল সামি।
‘এ’ দলের সাফল্যের রূপকারকে নিয়ে আফগানিস্তান যখন ওয়ানডের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার স্বপ্নে মশগুল, তখন বাংলাদেশ দল মাঠ এবং মাঠের বাইরে নানা রকম নেতিবাচকতায় জর্জরিত। মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২–০তে টেস্ট সিরিজ জয় প্রায় ভুলে যাওয়ার উপক্রম এরপরের ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের ব্যর্থতায়।
সংস্করণ যদিও ভিন্ন, খেলবেন তো প্রায় একই খেলোয়াড়েরাই! এই সিরিজের আগে অধিনায়কত্ব নিয়েও একটা বিতর্ক ছিল। নাজমুল অবশ্য ছাড়ি–ছাড়ি করেও শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক আছেন। ওদিকে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে এটি হবে ফিল সিমন্সের প্রথম অ্যাওয়ে সিরিজ, তা–ও এমন এক দলের বিপক্ষে, একসময় তিনি যাদের কোচ ছিলেন।
সব মিলিয়ে কোচ–খেলোয়াড় সবার জন্যই শারজার এই তিনটি ম্যাচ হয়ে যাচ্ছে পরীক্ষার মতো। সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য আসলেই স্বস্তির হবে, নাকি বাড়াবে শঙ্কা!