গিলের ফিফটির পর সুন্দরের ‘সুন্দর’ বোলিংয়ে এগিয়ে গেল ভারত
প্রথম ম্যাচটা জিতে শুবমান গিল-ওয়াশিংটন সুন্দরদের কি তাহলে একটু বেশিই তাতিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে? পরের দুই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে যে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারল না জিম্বাবুইয়ানরা।
হারারেতে গত শনিবার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে ১৩ রানে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল সিকান্দার রাজার দল। পরদিন দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের ১০০ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতা আনে সফরকারীরা।
একই মাঠে আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক গিলের ফিফটি ও সুন্দরের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে ২৩ রানে হারিয়ে দিল ভারত। ৫ ম্যাচের সিরিজে টি–টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এগিয়ে গেল ২-১ ব্যবধানে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ১৮২ রান তুলেছিল ভারত। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জিম্বাবুয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানের বেশি করতে পারেননি।
অফ স্পিনার সুন্দর ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটিই সুন্দরের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও তাঁর হাতে উঠেছে।
জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়া ভারতের এই দলকে টি–টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলা হলেও তা আসলে সার্থকতা পেয়েছে আজ থেকে। বার্বাডোজ থেকে দেশে ফিরে রাজসিক সংবর্ধনায় অংশ নিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে বিশ্বকাপজয়ী দলের কেউই ছিলেন না। আজ তৃতীয় ম্যাচের একাদশে ঢুকেছেন বিশ্বকাপের মূল দলে থাকা ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল, উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান সঞ্জু স্যামসন ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শিবম দুবে। তাঁদের জায়গা দিতে সরে যেতে হয়েছে সাই সুদর্শন, রিয়াগ পরাগ ও ধ্রুব জুরেলকে। এ ম্যাচের একাদশে ভারত আরেকটি পরিবর্তন এনেছে। ডানহাতি পেসার মুকেশ কুমারের জায়গায় খেলেছেন বাঁহাতি পেসার খলিল আহমেদ।
জয়সোয়াল ফেরায় আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অভিষেক শর্মাকে আজ তিনে ব্যাট করতে হয়েছে। অভিষেক এ ম্যাচে খুব একটা ভালো করতে না পারলেও অধিনায়ক গিলের সঙ্গে ভারতকে দারুণ শুরু এনে দেন জয়সোয়াল। পাওয়ার প্লেতে ভারত বিনা উইকেটে তুলে ফেলে ৫৫ রান। নবম ওভারে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা জয়সোয়ালকে আউট করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও ততক্ষণে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ভারত।
নিজের তৃতীয় ওভারে অভিষেককেও ফেরান রাজা। এরপর রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে নিয়ে ৭২ রানের জুটি গড়েন গিল। তিনি পেয়ে যান আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা। গায়কোয়াড়ও ফিফটির পথেই ছিলেন। হয়নি মাত্র ১ রানের জন্য। তবে তাঁর ২৮ বলে ৪৯ ও শেষ দিকে স্যামসনের ক্যামিওতে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য পেয়ে যায় ভারত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। সপ্তম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দর ২ উইকেট নিলে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে পড়ে স্বাগতিকেরা। ষষ্ঠ উইকেটে ডিওন মায়ার্স ও ক্লাইভ মাদান্দের ৭৭ রানের জুটি গড়ে শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। বৃথা গেছে মায়ার্সের প্রথম টি–টোয়েন্টি ফিফটিটাও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২০ ওভারে ১৮২/৪
(গিল ৬৬, গায়কোয়াড় ৪৯, জয়সোয়াল ৩৬, স্যামসন ১২*, অভিষেক ১০, রিংকু ১*; রাজা ২/২৪, মুজারাবানি ২/২৫)।
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৫৯/৬
(মায়ার্স ৬৫*, মাদান্দে ৩৭, মাসাকাদজা ১৮*, রাজা ১৫, মারুমানি ১৩; সুন্দর ৩/১৫, আবেশ ২/৩৯, খলিল ১/১৫)।
ফল: ভারত ২৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ওয়াশিংটন সুন্দর।
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে।