পুরোনো কোচ ফিরিয়ে আনাকে ‘চপেটাঘাত’ বললেন মিসবাহ
পাকিস্তান জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরছেন সাবেক প্রধান কোচ মিকি আর্থার। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে ‘টিম ডিরেক্টর’ পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে প্রধান কোচ পদে কাউকে না রাখায় আর্থারই থাকবেন কোচিং স্টাফদের নেতৃত্বে।
বিষয়টি মানতে পারছেন না মিসবাহ–উল–হক। সাবেক অধিনায়ক ও কোচ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আর্থারকে ফিরিয়ে আনা পাকিস্তান ক্রিকেট–ব্যবস্থার জন্য চপেটাঘাত।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান কোচ ছিলেন আর্থার। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডের কাউন্টি দল ডার্বিশায়ারের দায়িত্বে আছেন। গত ডিসেম্বরে নাজাম শেঠি পিসিবি প্রধানের চেয়ারে ফিরে আর্থারকে কোচ পদে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকান এই কোচ ডার্বিশায়ার ছাড়তে রাজি হননি। এর পর সাবেক ইংল্যান্ড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারও নিজের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দেন।
তবে পিসিবির নজর ছিল আর্থারের দিকেই। এর পর দল পরিচালনায় নতুন এক কাঠামো দাঁড় করিয়েছে পিসিবি, যেখানে টিম ডিরেক্টরই সর্বেসর্বা। প্রধান কোচ বলে কিছু নেই, টিম ডিরেক্টরের অনুপস্থিতিতে দল সামলাবেন সহকারীরা। ‘অদ্ভুতুড়ে’ এই ব্যবস্থায় ডার্বিশায়ারের কোচ হিসেবেও কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন আর্থার। এর ফলে কিছু সিরিজে পাকিস্তান দলের সঙ্গে থাকবেন, কিছু সিরিজে থাকবেন না।
এভাবে আর্থারকে পাকিস্তান দলে ফিরিয়ে আনার সমালোচনা করে ক্রিকইনফোকে সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ বলেন, ‘একজন উঁচুমানের পূর্ণকালীন কোচ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না—এটা আমাদের ক্রিকেট–ব্যবস্থার ওপর চপেটাঘাত। সেরাদের কেউ আমাদের দলের দায়িত্ব নিতে না চাওয়াটাও লজ্জাকর ব্যাপার। আমরা এমন একজনকে পাওয়ার জন্য জোরাজুরি করছি, যিনি পাকিস্তানকে দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে দেখছেন।’
২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান দল সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে আর্থারের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় পিসিবি। এর পর প্রধান কোচ এবং নির্বাচকের দায়িত্ব পান মিসবাহ। দল নির্বাচন ও পরিচালনায় প্রবল ক্ষমতা পাওয়া এই সাবেক ক্রিকেটার ২০২১ সালে রমিজ রাজা পিসিবি প্রধান হলে পদত্যাগ করেন।
আর্থারকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ক্রিকেট–ব্যবস্থার দুর্বলতা দেখছেন মিসবাহ, ‘আমাদের নিজস্ব ক্রিকেট–ব্যবস্থাকে দায়ী করব আমি। আমাদের ক্রিকেট–ব্যবস্থায় প্রচুর ফাঁকফোকর আছে, যে কেউ এখানে সুযোগ নিতে পারেন। আমরা নিজেদের লোকদের অসম্মান করি, বদনাম করি। বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা একে অপরকে সম্মান করে না। মিডিয়া ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সাবেক ক্রিকেটাররা নিজেদের ক্রিকেটের অবমূল্যায়ন করেন, স্থূলভাবে আঘাত করেন, যার ফলে এমন একটা ছাপ পড়ে যে আমাদের (দেশি কোচ) সামর্থ্য নেই।’