যে কারণে হেরেও ম্যাচসেরা নুরুল
দুজনের সেঞ্চুরিতে দুই রকমের অনুভূতি। সহজ রান তাড়ায় প্রাইম ব্যাংককে ৯ উইকেটের জয় এনে দিতে তিন অঙ্কে পৌঁছেছেন মোহাম্মদ নাঈম। সেঞ্চুরি করে মোহামেডানের বিপক্ষে ধানমন্ডি ক্লাবকে জেতাতে না পারলেও ম্যাচসেরা হয়েছেন নুরুল। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াইয়ে গাজী গ্রুপকে হারিয়েছে আবাহনী।
দল হারলেও ম্যাচসেরা নুরুল
ম্যাচ শেষে ধানমন্ডি ক্লাবের অধিনায়ক হিসেবে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে আসতে হলো নুরুল হাসানকে। আসার পর তাঁকে দেওয়া হয়েছে ম্যাচসেরার পুরস্কারও। তাতে অবশ্য খুব একটা খুশি হওয়ার কথা নয় নুরুলের। মোহামেডানের কাছে তাঁর দল ধানমন্ডি ক্লাব যে হেরে গেছে ২৩ রানে।
মিরপুর শেরেবাংলায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা রয়েসয়ে ব্যাট করতে থাকেন মোহামেডানের দুই ওপেনার। ১৪.৪ ওভারে যখন রনি তালুকদার ও তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে, তখন দলের রান মাত্র ৪৬। তামিম ৫৩ বলে ২৬ ও রনি ৬৪ বলে ৩৯ রান করে আউট হয়ে যান।
তিনে খেলতে নেমে মাহিদুল ইসলামও ৭৭ বলে করেন মাত্র ৪৪ রান। মোহামেডানের সংগ্রহকে একটা সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যান মূলত তাওহিদ হৃদয়। ৪৭ বলে ৫ চারে ৫৩ রান করেন তিনি। ধানমন্ডির হয়ে ৩ উইকেট পান কামরুল ইসলাম।
রান তাড়ায় নেমে ৭৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ধানমন্ডি ক্লাব। যদিও ১৬ বলে ৩১ রানের ঝড়ো শুরু করেছিলেন ওপেনার হাবিবুর রহমান। দলের বিপর্যয়ের সময়ে আরও একবার দাঁড়িয়ে যান নুরুল। ‘লেজের’ ব্যাটসম্যানদের নিয়ে চলতে থাকে তাঁর লড়াই।
কখনো মাসুম খান, কখনো এনামুল হক আবার কখনো হাসান মুরাদকে নিয়ে এগিয়ে যান নুরুল। ৫৫ বলে ফিফটিও তুলে নেন। নবম উইকেটে হাসান মুরাদকে নিয়ে যোগ করেন ২১ রান। এরপর শেষ সঙ্গী কামরুলকে নিয়ে জয়ের জন্য শেষ চেষ্টা করার বিকল্প ছিল না নুরুলের।
৪৪তম ওভারের প্রথম দুই বলেই সাইফউদ্দিনকে ছক্কা মেরে তা করেও ছিলেন নুরুল। দ্বিতীয় ছক্কায় লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। কিন্তু তৃতীয় বলেও ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তাওহিদ হৃদয়ের হাতে। ৪৩.৩ ওভারে ১৯৩ রানে অলআউট হয় ধানমন্ডি ক্লাব।
শীর্ষ দুইয়ের লড়াইয়ে আবাহনীর হাসি
বিকেএসপিতে আজ মুখোমুখি হয়েছিল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে থাকা আবাহনী ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। এই ম্যাচে গাজী গ্রুপকে ২ উইকেট হারিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আবাহনী। ৭ ম্যাচে ৬ জয় তাদের, ৫ জয় পাওয়া গাজী গ্রুপ এখনো দুইয়েই আছে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৯৯ রান করতে পারে গাজী গ্রুপ। দলটির হয়ে ৭৬ বলে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন ওপেনার এনামুল হক। ৫২ বলে ৪২ রান আসে ওয়াসী সিদ্দিকীর ব্যাটেও। আবাহনীর হয়ে এদিন বল হাতে নায়ক হন মুমিনুল হক। ৬.১ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি।
রান তাড়া করতে নেমে ১৬ রানেই দুই ওপেনার জিসান আলম ও পারভেজ হোসেনকে হারিয়ে ফেলে আবাহনী। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ১৩১ রানের জুটিতে ম্যাচ অনেকটা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। মিঠুন ৭৭ বলে ৭৬ রান করে আউট হলে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে আবাহনী৷ এক বল পরই ৬৩ বলে ৪৩ রান করে আউট হয়ে যান নাজমুলও। তাঁদের ফেরান আবু হাশিম।
১৪৭/২ থেকে ১৯৮/৮—৫১ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে হারের শঙ্কায় পড়েছিল আবাহনী। এই সময়ে ২৫ বলে ২৪ রান করে ব্যাট হাতেও অবদান রাখেন মুমিনুল। শেষ পর্যন্ত মাহফুজুর রহমান ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ৩৫ ওভারেই দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন।
নাঈম সেঞ্চুরিতে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক
টানা দুই হারের পর এবার টানা দুই জয় পেল প্রাইম ব্যাংক। আজ বিকেএপিতে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমের সেঞ্চুরিতে শাইনপুকুরকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে তারা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ১৫৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় শাইনপুকুর। দলটির ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ৬৮ বলে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন ফারজান আহমেদ, ৫৯ বলে ২৯ রান করেন শাহরিয়ার সাকিব। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে বল হাতে ৯.৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এটিই ছিল তাঁর প্রথম ম্যাচ। এ ছাড়া ৩ উইকেট পান স্পিনার নাজমুল ইসলাম।
লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ১২০ রানের উদ্বোধনী জুটি পেয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। ৪৮ বলে ৪৭ রান করে শাহিন আলমের বলে সাব্বির হোসেন ক্যাচ তুলে দিলে এই জুটি ভেঙে যায়। তবে সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন মোহাম্মদ নাঈম। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দশম সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটসম্যান ৭ ম্যাচে ৪৫৯ রান করে এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তিনে নামার শাহাদাত হোসেন অপরাজিত ছিলেন ১১ রানে। প্রাইম ব্যাংক লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মাত্র ২০.১ ওভারেই।