বললেন শামীম: ‘আমি হলাম ফিনিশার, আমার কাজই হলো মারা’
শামীম হোসেন আজ যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, বাংলাদেশ তখন ঘোরতর সংকটে। ১৪.২ ওভারে ৭২ রান তুলতেই নেই ৬ উইকেট। বাংলাদেশের ১০০ হয় কি না—তখন শঙ্কা এ নিয়েই।
তবে শামীম ভাবলেন নিজের মতো করেই। খেললেন নিজের সহজাত খেলাটাই। ১৭ বলে করলেন ৩৫ রান। তাতে বাংলাদেশের ১০০ তো হলোই, ইনিংস শেষ হলো ৭ উইকেটে ১২৯ রান তুলে। এরপর বোলাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০২ রানে থামিয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতিয়ে দিলেন। তবে বিপর্যয়ের মুখে পাল্টা আক্রমণে খেলা ইনিংসটির জন্য ম্যাচসেরা হলেন শামীমই।
আমি হলাম ফিনিশার, আমার কাজই হলো মারা। শেষ কয়েক মাসে পরিশ্রম তো কম করিনি।
প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে ফেরা শামীমের ২টি করে চার-ছক্কায় সাজানো ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ২০৫.৮৮। সেন্ট ভিনসেন্টে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ২০০-এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ১৩ বলে ২৭ রান করেছিলেন শামীম।
প্রত্যাবর্তনে আলো ছড়াতে থাকা শামীম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নেওয়ার পর বললেন তিনি শুধু নিজের খেলাটাই খেলেছেন, ‘কত দিন পর জাতীয় দলে ফিরেছি, তাই খুব ভালো লাগছে। আমি হলাম ফিনিশার, আমার কাজই হলো মারা। শেষ কয়েক মাসে পরিশ্রম তো কম করিনি।’
পরপর দুই ম্যাচে ২০০ ছাড়ানো স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা শামীমকেই তো চায় বাংলাদেশ। বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে বড় শট খেলার সামর্থ্যই তো ২০২১ সালে তাঁকে প্রথমবার জাতীয় দলে ঢুকিয়েছিল।
বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথম দুই ম্যাচে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছিলেন শামীম। সেই বছরে জিম্বাবুয়ে সফরের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক তাঁর। প্রথম ম্যাচে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, রান তাড়া করা বাংলাদেশ ৬৮ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলেছে ৬ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতে ৩ চার ও ২ ছক্কায় শামীম ১৩ বলে করেন ২৯ রান। ওই ম্যাচে দলকে জেতাতে পারেননি, তবে পরের ম্যাচেই বাংলাদেশ জেতে শামীম-ঝড়েই।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটায় ১৯৪ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। শামীম যখন উইকেটে আসেন, ৬ উইকেট হাতে থাকা বাংলাদেশের ২৬ বলে দরকার ৪৪ রান। ১৫ বলেই ৩১ রান করে শামীম যখন দলকে জিতিয়ে ফিরছেন, বাংলাদেশের হাতে ছিল আরও ৪ বল।
সেই শামীমের এরপর যেন কী হলো! গত বছরের নিউজিল্যান্ড সফরের পর তো বাদই পড়ে গেলেন দল থেকে। এরপর ফিরলেন এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। আর ফিরেই দারুণ দুটি ইনিংস খেললেন।
এবার শামীম পথ না হারালেই হয়।