‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ ধোনির কাছে সহজ, পান্ডিয়ার কাছে কঠিন
আইপিএলে চালু হয়েছে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম। চাইলে ম্যাচের ভেতরে একজন করে খেলোয়াড় বদলাতে পারে দুই দল। গতকাল উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই–গুজরাট দুই দলই ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ মাঠে নামিয়েছে। তবে ম্যাচ জেতানোর মতো প্রভাব তাঁরা ফেলতে পারেননি। উল্টো চেন্নাইয়ের হয়ে বদলি নামা খেলোয়াড়ই দলের হয়ে সবচেয়ে বাজে বোলিং করেন।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে জিতেছে গুজরাট। আগে ব্যাট করে চেন্নাই সুপার কিংস তুলেছিল ৭ উইকেটে ১৭৮ রান। জবাবে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় গুজরাট টাইটানস। ম্যাচে প্রথম ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামায় চেন্নাই। ৩৭ বছর বয়সী আম্বাতি রাইডু ব্যাটিং করার পর ফিল্ডিংয়ে তাঁর জায়গায় ডানহাতি পেসার তুষার দেশপান্ডেকে নামায় ধোনির দল। মুম্বাইয়ের স্থানীয় ক্রিকেটে খেলা তুষারই আইপিএলের প্রথম ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার।
গুজরাটের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ছিলেন সাই সুদর্শন। ফিল্ডিংয়ের সময় কেইন উইলিয়ামসন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে রান তাড়ায় তিন নম্বরে সুদর্শনকে খেলায় গুজরাট। দুই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের মধ্যে যা একটু ‘কাজে লেগেছেন’ সুদর্শনই।
দ্বিতীয় উইকেটে শুবমান গিলের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটিতে সঙ্গ দেন। খেলেন ১৭ বলে ২২ রানের ইনিংস। বিপরীতে চেন্নাইয়ের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার তুষার ৩.২ ওভার বল করে দিয়েছেন ৫১ রান, গড়ে ১৫.৩০ রান করে। ম্যাচের শেষ ওভারে ৮ রান আটকানোর দায়িত্ব ছিল তুষারের হাতে। প্রথম দুই বৈধ ডেলিভারিতেই রানটা তাঁর কাছ থেকে বের করে নেয় গুজরাট।
প্রথম ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের কার্যকারিতা যেমন ভিন্ন, এ বিষয়ে দুই অধিনায়কের ভাবনাও আলাদা। চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির মতে খেলোয়াড় বদলানোর সুযোগ অধিনায়কের কাজ সহজ করে দিচ্ছে। বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক টসের সময় নিজের ভাবনা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারটা থাকাটা বিশেষ সুবিধা। সিদ্ধান্ত নেওয়াও কিছুটা সহজ; কারণ, যেকোনো সময় এটা ব্যবহার করা যায়।’
গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার অবশ্য সহজ লাগছে না। ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম বরং কঠিনই মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। টসের পর একাদশ চূড়ান্ত করার সুযোগ থাকায় দলগুলো শুরুর একাদশে ব্যাটসম্যান বা বোলার বেশি নিচ্ছে। এরপর ব্যাটিং বা বোলিংয়ের প্রয়োজনে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার চূড়ান্ত করছে।
উদ্বোধনী ম্যাচেই যেমন গুজরাটের বোলিং লাইন আপে পেসারই ছিলেন ছয়জনই। বেশি পেসার হয়ে যাওয়ায় সবাইকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি, কাউকে আবার সঠিক সময়ে বোলিংও দেওয়া যায়নি।
যেমন গত আসরে ১১ উইকেট নেওয়া যশ দয়ালকে মাত্র এক ওভার করাতে পেরেছেন হার্দিক, আলজারি জোসেফকে প্রথম ১৩ ওভারের মধ্যে কাজে লাগাতে পেরেছেন মাত্র একবার, আবার বিজয় শঙ্করের হাতে বলই তুলে দিতে পারেননি। বোলারদের ব্যবহারে এই এলোমেলো অবস্থাকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন গুজরাট অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে হার্দিক বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, ইমপ্যাক্ট নিয়ম আমার কাজটা বেশ কঠিন করে তুলেছে। হাতে এখন অনেক সুযোগ। সঠিকটা বাছাই করতে হয়। এ কারণে কেউ কেউ বোলিং কম করেছে। আমাকে মনের কথা শুনে বোলিং বাছাই করতে হয়েছে। যেখানে যেটা ভালো অনুভব করেছি, সেটাই করেছি।’