সেমিফাইনালে বারবার ব্যর্থ কোহলি আজ কি পারবেন
বিরাট কোহলি। নামটাই যথেষ্ট। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪৯ শতকের মালিককে তো আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। চলতি বিশ্বকাপেও সাফল্যগাথার গল্পই লিখেছেন। এখন পর্যন্ত করেছেন দুটি শতক, পাঁচটি অর্ধশতক।
৯৯ গড়ে ৫৯৪ রান তুলে এখন পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক কোহলিই। সফল এই কোহলিকেই এবার একটা পরীক্ষার সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে। ভাবতে পারেন, এ বয়সে এসে কোহলি আর কী পরীক্ষা দেবেন? প্রমাণের কিছু বাকি আছে নাকি!
একটা পরীক্ষা বাকি আছে। যে পরীক্ষায় আগের তিন দফাতেই ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় এই তারকা। সেটা হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পরীক্ষা। এর আগে কোহলি তিনবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছেন। তিনবারই কোহলি আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। মিল আছে আরও এক জায়গায়। তিনবারই কোহলি আউট হয়েছেন এক বাঁহাতি পেসারের বলে। আজ সেমিফাইনালে সেই তিনজনের একজনের বিপক্ষেই মাঠে নামতে হবে ভারতের সাবেক অধিনায়ককে।
কোহলি প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ঘরের মাঠে, ২০১১ সালে। সেবার সেমিফাইনালে পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৯ রান করেন কোহলি। সেই ম্যাচে কোহলির ব্যর্থতা দলের ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। পাকিস্তানকে ২৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায় ভারত। আর ফাইনালে তারা হারায় শ্রীলঙ্কাকে।
২০১৫ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে ওঠে কোহলির ভারত। এই ম্যাচে কোহলি ফেরেন মিচেল জনসনের বাউন্সারে। করেন মাত্র ১৩ বলে ১ রান। সেই সেমিফাইনালে ৯৫ রানে হেরে যায় ভারত। ৩২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৩৩ রান করতে পারে ভারত।
পরের বিশ্বকাপেও একই গল্প। এবার কোহলি শিকার হন ট্রেন্ট বোল্টের। বাঁহাতি এই পেসারের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে তিনি করেন মাত্র ১ রান। বৃষ্টিবিঘ্নিত দুই দিনে গড়ানো সেমিফাইনালে কোহলির দল হারে ১৮ রানে। সেবার অধিনায়ক হওয়ায় দায়িত্বটাও একটু বেশি ছিল ভারতীয় তারকার। যেটা তিনি করতে পারেননি।
এবারও ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। কোহলির প্রতিপক্ষ বোল্ট। কোহলি কি পারবেন বোল্ট–বাধা সামলাতে? সব সামলে কি পারবেন সেমিফাইনাল পরীক্ষায় ভালো মার্ক পেয়ে পাস করতে? কোহলি হয়তো এবারই এই পরীক্ষায় উতরে যেতে চাইবেন। কারণ, এটাই হতে পারে ৩৫ বছর বয়সী কোহলির শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
শুধু ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালই নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নকআউট ম্যাচে কোহলির সেরাটা দেখা গেছে খুব কম সময়েই। ৭৯ শতকের মালিক কোহলি এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নকআউট ম্যাচে শতকের দেখা পাননি। আজ ওয়াংখেড়েতে হয়তো সেই খরা ঘোচাতে চাইবেন কোহলি। আর যেটা করতে পারলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০টি শতক করার রেকর্ড গড়বেন এই তারকা।
এমন কিছু করতে কোহলি এক জায়গা থেকে অনুপ্রেরণাও নিতে পারেন। সেটা ঘরের মাঠ ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল। সেই ম্যাচটাও হয়েছিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই সেমিফাইনালে ৪৭ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কোহলি। যদিও এমন ইনিংস খেলার পরও সেমিফাইনালে হেরে যায় ভারত। সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে দারুণ কিছু করতে পারবেন কোহলি?