ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ: সম্ভাবনা জাগলেও অঘটন ছাড়াই শেষ প্রথম রাউন্ড
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মোহামেডানের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল সিটি ক্লাব। ৩ নম্বর মাঠে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে বেশ চাপে ফেলেছিল রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। তবে ঠিক অঘটন ঘটাতে পারেনি তারা। সিটি ক্লাবকে ৪৩ রানে হারিয়ে লিগ শুরু করেছে মোহামেডান, টাইগার্সের বিপক্ষে গাজী গ্রুপ জিতেছে ৩ উইকেটে। দিনের অন্য ম্যাচে মিরপুরে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ফলে প্রথম রাউন্ড শেষ হলো অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দলগুলোর জয়েই।
শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আল–আমিন হোসেন ও শহীদুল ইসলামের তোপে ব্রাদার্স আটকে যায় ২০২ রানেই। চারে নামা মাহমুদুল হাসান করেন সর্বোচ্চ ৪২ রান। ১৫৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পরও ব্রাদার্স ২০০ পেরোয় অধিনায়ক মনির হাসানের ৩৭ রানের সঙ্গে নাঈম ইসলাম জুনিয়র (১৮) ও আবু জায়েদের (২৯) লড়াইয়ে। রূপগঞ্জের আল-আমিন ও শহীদুল নেন ৩টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় সাদমান ইসলাম ও তৌফিক ইসলামের ওপেনিং জুটিতেই ৯৪ রান তুলে ফেলে রূপগঞ্জ। দুজন খেলেন বিপরীতমুখী ইনিংস—তৌফিক ৬৬ রান করেন মাত্র ৪২ বলে, সাদমান ৬৭ রান করতে খেলেন ৮৮ বল। দুজন দ্রুত ফিরলেও রূপগঞ্জের সমস্যা হতে দেননি মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। ১৪ ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় তাদের।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মোহামেডানকে ২৪০ রানে আটকে দিয়েছিল সিটি ক্লাব। শুরুতে ইমরুল কায়েসকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৩৭ রান যোগ করেন রনি তালুকদার ও মাহিদুল ইসলাম। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগালেও দুজনই থামেন ৬০-এর ঘরেই। রনি (১০৮ বলে ৭১) আউট হওয়ার পরের ওভারেই ফেরেন মাহিদুলও (৮৮ বলে ৬৭)। মোহামেডানের মিডল অর্ডারে এরপর সে অর্থে কোনো জুটি বড় হয়নি। সিটির পেসার মেহেদী হাসান ৩৫ রানে নেন ৪ উইকেট।
রান তাড়ায় ৩৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে সিটি ক্লাব চাপে পড়ে শুরুতেই। ১২০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর রাফসান আল মাহমুদ ও মইনুল ইসলাম গড়েন ৬৭ রানের জুটি। ৫৬ রান করা রাফসান বোল্ড হলে সে জুটি ভাঙে, সিটি ক্লাব এরপর আর টিকতে পারেনি বেশিক্ষণ। ৪৬.২ ওভারে ১৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা।
অন্য ম্যাচে গাজী গ্রুপকে অবশ্য পথ দেখিয়েছে সাতে নামা মঈন খানের ৩২ বলে ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। রূপগঞ্জ টাইগার্সের দেওয়া ২৫৯ রানের লক্ষ্যে ১৬২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। আল-আমিন জুনিয়রের সঙ্গে এরপর ৫৭ রানের জুটি গড়েন মঈন। আল-আমিন জয় থেকে ৪০ রান দূরে থামলেও নবম ব্যাটসম্যান শেখ পারভেজকে (১২ বলে ১৮*) নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন মঈন। এর আগে টাইগার্সের ২৫৮ রানের ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ওপেনার আবদুল্লাহ আল-মামুনের ৬১ রান। মামুনের পর সাত ব্যাটসম্যানের সবাই ১৫ পেরোলেও কেউ ৪০ রানও ছুঁতে পারেননি।
প্রিমিয়ার লিগ সংক্ষিপ্ত স্কোর
টাইগার্স-গাজী গ্রুপ
রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৫৮/৭ (মামুন ৬১, শামসুর ৩৬, গালিব ৩৪; মঈন ২/৩৩, আনিসুল ২/৫৯, হুসনা ১/৩১)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪৮.৫ ওভারে ২৬০/৭ (আল-আমিন ৫৯, মঈন ৪৩*, হাবিবুর ৩৩; নাবিল ৩/৪৬, মামুন ১/২৯, সোহাগ ১/৩৫)
ফল: গাজী গ্রুপ ৩ উইকেটে জয়ী
ব্রাদার্স-রূপগঞ্জ
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৭.২ ওভারে ২০২ (মাহমুদুল ৪২, মনির ৩৭, আবু জায়েদ ২৯; শহীদুল ৩/৩৫, আল-আমিন ৩/৪৩, রিজওয়ান ২/২৯)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৩৬ ওভারে ২০৪/৪ (সাদমান ৬৭, তৌফিক ৬৬, আমিনুল ২১; রাহাতুল ৩/৪০, মনির ১/৩৮)
ফল: রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে জয়ী
মোহামেডান-সিটি
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৯.৩ ওভারে ২৪০ (রনি ৭১, মাহিদুল ৬৭, রুবেল ৩৩; মেহেদী ৪/৩৫, রাফসান ২/২৫, সনজিত ২/৫৫)
সিটি ক্লাব: ৪৬.২ ওভারে ১৯৭ (রাফসান ৫৬, শাহরিয়ার ৩৮, মঈনুল ৩৬; মুশফিক ৪/৪৩, আরিফুল ৩/২২, নাঈম ২/৩২)
ফল: মোহামেডান ৪৩ রানে জয়ী