মঈন চাইলে গোপনে কাজটি করতে পারতেন, আইসিসির সমালোচনায় বললেন হগ
হাত শুকানোর স্প্রে ব্যবহার করায় মঈন আলীকে জরিমানা করা ‘অতিরিক্ত’ হয়ে গেছে বলে মনে করেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার ব্র্যাড হগ। তাঁর মতে, মঈন চাইলে গোপনেই সেটি ব্যবহার করতে পারতেন।
এজবাস্টনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন ঘটে এ ঘটনা। বাউন্ডারি সীমানায় অফ স্পিনার মঈনকে ডান হাতে একটি স্প্রে ব্যবহার করতে দেখা যায়, যেটি মূলত ব্যবহার করা হয় হাত শুকনা রাখার জন্য। তবে পরদিন আইসিসি জানায়, আম্পায়ারকে না জানিয়ে ওই স্প্রে ব্যবহার করে আচরণবিধি ভেঙেছেন অবসর কাটিয়ে ফেরা এ অলরাউন্ডার। এ কারণে ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয় তাঁকে।
২০২১ সালে টেস্ট থেকে অবসরে যাওয়া মঈন এ সংস্করণে ফিরেছেন এ ম্যাচ দিয়েই। ইংল্যান্ড দলের মূল স্পিনার জ্যাক লিচ ছিটকে পড়ায় ডেকে পাঠানো হয় মঈনকে। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে মঈন ৩৩ ওভার বল করেছেন। ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি বোলিং তিনি করেছেন মাত্র পাঁচবার।
অবসরে যাওয়ার পর মাঝে শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটই খেলেছেন মঈন। তার ওপর ইংল্যান্ডে টেস্টে ব্যবহৃত ডিউক বলের সিম অপেক্ষাকৃত উঁচু ও শক্ত, ফলে অফ স্পিনারের জন্য বল গ্রিপ করা একটু কঠিনই। তার ওপর তাঁর দীর্ঘদিন অভ্যাস না থাকা।
মঈনের বল স্পিন করানোর জন্য ব্যবহৃত তর্জনিতে ক্ষতের ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে এরই মধ্যে। এতদিন পর ফেরা মঈনকে প্রথম ইনিংসেই এত ওভার বোলিং করানো ঠিক হলো কি না, সে আলোচনাও আছে। তবে হগ বলছেন, মঈনকে জরিমানা করাটাই বাড়াবাড়ি হয়েছে আইসিসির।
টুইটারে মঈনের আঙুলের ক্ষতের ছবি শেয়ার করে সাবেক এ বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বলেছেন, ‘যখন আপনি জানেন যে মঈন শুধু তার হাতের ফোসকা পড়াটা আরও বাজে যাতে না হয়, এ কারণেই এটি (স্প্রে) ব্যবহার করছে, তখন এ ব্যাপারে ২৫ শতাংশ জরিমানা করা একটু “ওভারস্পিন”-এর মতো।’
এর আগে এমন কারণে জরিমানা দিতে হয়েছিল ভারতের বাঁহাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজাকেও। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নাগপুর টেস্টে আঙুলে মলম ব্যবহার করেছিলেন জাদেজা। তখনো এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল।
জাদেজা বা মঈন, দুজনের ঘটনাই ধরা পড়ে টেলিভিশন ক্যামেরায়। দুই ক্ষেত্রেই ম্যাচ রেফারি জানান, বলের আকৃতি পরিবর্তন করার জন্য এমনটি করেননি তাঁরা। হগ টেনেছেন এ প্রসঙ্গও, ‘সে তো বারবার মাঠ ছেড়ে যেতে পারত স্প্রেটি লুকাতে। কিন্তু সে প্রকাশ্যেই করেছে। আমার মনে হয় আঙুলের প্রতি ন্যায্য কাজটিই করেছে সে।’
জরিমানা দেওয়ার বাইরে এখন পর্যন্ত এজবাস্টন টেস্টটি মঈনের জন্য কেমন কেটেছে, তা নিয়েও আলোচনা থাকতে পারে। প্রথম ইনিংসে ৩৩ ওভারে ১৪৭ রান দিয়েছেন তিনি, তাঁর বলে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা মেরেছেন ৮টি ছক্কা। অ্যাশেজ টেস্টের এক ইনিংসে যেটি সর্বোচ্চ। যদিও মঈন নিয়েছেন ট্রাভিস হেড ও ক্যামেরন গ্রিনের উইকেট। এর আগে মঈন তাঁর প্রতি বেন স্টোকসদের বার্তা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি রান বেশি দিলেও সমস্যা নেই। তাঁর কাজই হবে আক্রমণাত্মক বোলিং করে উইকেট নেওয়া।