বাইরের কথায় কান দেন না ওয়ার্নার
টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজ খেলতে নেমেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচে সিরিজের শেষ টেস্ট সিডনিতে। এই সিডনিতেই নিজের শহরে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলতে চান ডেভিড ওয়ার্নার। তবে সেই টেস্টে ওয়ার্নারের জায়গাই নিশ্চিত নয়। পার্থ টেস্টে পারফর্ম করেই পরের টেস্টগুলোয় দলে জায়গা করে নিতে হবে তাঁকে, এর সঙ্গে সাবেক সতীর্থ মিচেল জনসনের সমালোচনা তো আছেই। তবে পার্থে প্রথম টেস্টে মাঠে নামার আগে অবশ্য ওয়ার্নার বলেছেন, তিনি বাইরের কথায় কান দেন না।
এই টেস্ট শুরুর আগে টেস্টে ওয়ার্নারের রান ছিল ৮৪৮৭। গড় ৪৪.৪৩। শতক ২৫টি। যদিও সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছে না ওয়ার্নারের। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর থেকে টেস্টে ওয়ার্নারের গড় মাত্র ২৮। ২০২০ সালের পর টেস্টে শতক মাত্র একটি।অন্যদিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে এই জায়গা নেওয়ার জন্য নির্বাচকদের দরজায় কড়া নাড়ছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট, মার্কাস হ্যারিস ও ম্যাট রেনশ।
এমন পরিস্থিতিতে জনসন আবার সামনে এনেছিলেন ২০১৮ সালের বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারি। জনসন বলেছিলেন, ‘আমরা এখন ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেউ কী বলতে পারবেন, কেন? কেন ফর্মের সঙ্গে লড়াই করা একজন ওপেনার নিজেই নিজের অবসরের তারিখ ঠিক করে? অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কেন্দ্রে থাকা একজন খেলোয়াড়কে কেনই-বা নায়কোচিত বিদায় দিচ্ছি আমরা?’
এত কিছুর পর তিনি চাপে আছেন কি না, এমন প্রশ্নে ওয়ার্নার আজ পার্থ টেস্ট শুরুর আগে ফক্স স্পোর্টসে বলেছেন, ‘এমনটা দীর্ঘ সময়ের জন্য চলছে। যখন আমি খেলার বাইরে থাকি, মাঠের বাইরে থাকি, তখন হয় আমি পরিবারের সঙ্গে থাকি, নয়তো গলফ খেলে অথবা কাছের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাই। ব্যাপারটা এমনই। আমি এখানে এসেছি খেলাটাকে উপভোগ করতে, যেটাকে আমি ভালোবাসি। আমি এখনো আমার বন্ধুদের সঙ্গে খেলা প্রথম দুই ম্যাচের কথা মনে করতে পারি, হাউজিং কমিশনে দেয়ালের বিপরীতে টেপ টেনিস বল দিয়ে। এখানে ফেরা, আরেকটি ঘরের মাঠে সিরিজ খেলা দুর্দান্ত কিছু এবং তারা এখনো আমার এই যাত্রার সঙ্গে আছে। এটাই আমার সঙ্গে ভালো যায়। আমি বাইরের কথায় কান দিই না।’
টেস্ট ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওয়ার্নার বলেছেন, ‘নাথান লায়নের মতো নিজেকে যদি ৫ বছর সময় দিতে পারতাম (হাসি)! আসলে এই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার আগেই ভেবেছি, কতগুলো টেস্ট আমি খেলব। পেছনে তাকিয়ে, মানুষ যদি আমার মন্তব্যগুলো দেখে, আদর্শ দৃশ্যপট ছিল অস্ট্রেলিয়ায় শেষ করা। কিন্তু এর জন্য আপনার রান করতে হবে, পারফর্ম করতে হবে। ইংল্যান্ডে যদি রান না পেতাম লর্ডসেই হতো আমার শেষ টেস্ট।’
ওয়ার্নার যোগ করেন, ‘কিন্তু আমরা জয়ের ধারা বজায় রাখত পেরেছিলাম, তাই নির্বাচকেরা আমার প্রতি ও দলের প্রতি ভরসা রেখেছিল। আসলে এটা এমন একটা বিষয়, যেখানে আপনার পারফর্ম করতেই হবে। আমি চেয়েছি গণমাধ্যমের মনোযোগ দল, অ্যাশেজ ও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে থাকুক। আমাকে নিয়ে এত কথায় আমি ক্লান্ত। এটা শুধু আমার বিষয় নয়, পুরো দলের বিষয়। যদি আমরা জয় পেতে থাকি, সফলতা পাই , আমি আমার কাজটা করি, এমনটা থাকুক না।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থে প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস এরই মধ্যে দুর্দান্তভাবে শুরু করেছেন ওয়ার্নার। এরই মধ্যে তুলে নিয়েছে ঝোড়ো অর্ধশতক। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিনা উইকেটে ১১৭ রান তুলে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ৭২ রানে অপরাজিত ওয়ার্নার। অন্য প্রান্তে ৩৭ রানে অপরাজিত উসমান খাজা।