এবারও কি পাকিস্তান–আফগানিস্তান ‘আগুনে’ ম্যাচ
২০২১ সালে তালেবানরা আবার ক্ষমতা আসার পর পাকিস্তান–আফগানিস্তানের রাজনৈতিক দূরত্ব বেড়েছে। ইসলামাবাদ সম্প্রতি পাকিস্তানে বসবাসরত কয়েক হাজার আফগান অভিবাসীকে উচ্ছেদ পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে।
দুই দেশের সরকারের শীতল সম্পর্কের ছাপ দেখা যাচ্ছে ক্রিকেটেও। বিশেষ করে গত দুই বছরে বাবর আজম–শাহিন আফ্রিদিদের সঙ্গে রশিদ খান–মোহাম্মদ নবীদের দ্বৈরথ চোখে পড়ার মতো। আফগান ফাস্ট বোলার ফরিদ মালিক ও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আসিফ আলী গত বছর শারজাহে প্রায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
নাসিম শাহ ও ফজলহক ফারুকির মধ্যেও দেখা গেছে ঝাঁজালো দ্বৈরথ। ম্যাচের সময় গ্যালারিতেও দুই দলের সমর্থকদের বচসায় জড়াতে দেখা গেছে একাধিকবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথার লড়াই তো আছেই।
ক্রিকেটে নতুন দ্বৈরথ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া পাকিস্তান–আফগানিস্তান লড়াই আবারও মাঠে গড়াচ্ছে। আগামীকাল চেন্নাইয়ে হাশমতউল্লাহ শহীদিদের মুখোমুখি হচ্ছেন বাবররা।
আজ আফগানিস্তান কোচ জোনাথন ট্রটের সংবাদ সম্মেলনে উঠেছিল পাকিস্তান–আফগানিস্তান দ্বৈরথের প্রসঙ্গ। এ নিয়ে সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এটা এমন এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, যা ওদের (আফগান খেলোয়াড়দের) মধ্যে আলোড়ন তোলে। এটা এমন এক দ্বৈরথ, যা অতীতেও কখনো কখনো খুব আবেগপূর্ণ ছিল।’
৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম অঘটনের জন্ম দিলেও ওই একমাত্র জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান আছে তলানিতে।
তবে কাল পাকিস্তানকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদী ট্রট, ‘আমরা ওদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলেছি। ওরাও ভালো খেলেছে। খুবই রোমাঞ্চকর ম্যাচ হয়েছে। আশা করি, আগামীকাল এতটা উত্তেজনা ছড়াবে না এবং আমরা অনেক বড় ব্যবধানে জিতব। তবে ম্যাচটা যে উত্তেজনাপূর্ণ হবে, সেটাও আমি আমি নিশ্চিত। কারণ, এটাই দ্বৈরথের ধরন।’
মাঠের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবলেও পাকিস্তান–আফগানিস্তান একে অন্যকে সমীহ করে বলে মনে করেন ৪২ বছর বয়সী এই ইংলিশ কোচ, ‘আমার মনে হয়, দুই দলই জেতার জন্য মরিয়া। তবে তারা একে অপরকে সম্মান করে।’
চেন্নাইয়ের পিচ স্পিনারদের সহায়তা করে থাকে। পাকিস্তান দলে আছেন শাদাব খান, মোহাম্মদ নেওয়াজদের মতো স্পিনার। ইফতিখার আহমেদও অফ স্পিনে ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারেন। অথচ স্পিন–সহায়ক চেন্নাইয়ে বাবরদের ম্যাচ না রাখার অনুরোধ জানিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
তবে পিসিবির সেই অনুরোধ রাখেনি আইসিসি। বিষয়টি সম্পর্কে ট্রট অবগত নন জানিয়ে আরও বলেছেন, ‘ওরা (পাকিস্তান) ভেন্যু পরিবর্তন করতে চেয়েছিল কি না, আমার জানা নেই। তবে আমি মনে করি, ওদের দলে ভালো স্পিনার আছে।’
আফগানিস্তানের স্পিনত্রয়ী রশিদ খান, মুজিব উর রেহমান ও মোহাম্মদ নবী পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের জন্য হুমকি হতে পারেন। দিল্লিতে ইংল্যান্ড–বধের দিন তিনজনেই নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। ট্রট মনে করেন, পাকিস্তানকে হারাতে হলে বাকিদেরও ভালো করতে হবে, ‘জিততে হলে শুধু স্পিনার নয়, অন্যদেরও ভালো করতে হবে। এটা সবার কাজ।’
ওয়ানডেতে আগের ৭ দেখাতেই জিতেছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে দুই দল একবারই মুখোমুখি হয়েছিল, ২০১৯ সালে। জয়ের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হারতেই হয়েছে আফগানদের। তবে ট্রট অতীত নিয়ে ভাবতে চান না, ‘আমরা প্রতিপক্ষকে সব সময় শুরু থেকে চাপে রাখতে চাই। আগামীকালের ম্যাচেও সেই চেষ্টা থাকবে। (পাকিস্তানের বিপক্ষে) আগের ম্যাচগুলোতে কী হয়েছে, সেটা নিয়ে ভাবছি না।’