সাকিবের ফেরার ম্যাচে খুলনার তিনে তিন
রংপুরের একাদশে আজ ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। তবে আজ যে সাকিব ফিরলেন তিনি অলরাউন্ডার নন। চোখের সমস্যায় ভোগা সাকিব ফিরেছেন যেন একজন বোলার হিসেবে! বরিশালের বিপক্ষে এবারের বিপিএলের প্রথম ম্যাচে ৩ নম্বরে ব্যাট করা সাকিব আজ সিলেটে খুলনার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন ৮ নম্বরে। যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন একটুও স্বচ্ছন্দে ছিলেন না। আউট হয়ে গেছেন মাত্র ১ রান করে।
ব্যাটসম্যান সাকিবের এমন দিনে তাঁর দল রংপুর হেরেছে ২৮ রানে। খুলনার করা ১৬০ রানের জবাবে মোহাম্মদ নবীর লড়াইয়ের পরও রংপুর ১৩২ রানে গুটিয়ে যায়। বিপিএলে এটি খুলনার টানা তৃতীয় জয়। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে তারা। রংপুরের জয় ৩ ম্যাচে একটিতে।
১৬১ রানের জবাবে শেষ দুই ওভারে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ৩৭ রান, হাতে ১ উইকেট। কাজটা অনেক কঠিন, এরপরও রংপুরকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ২৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকা নবী। তবে মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারলেও সেই ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন নবী।
রংপুরের ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আগের ম্যাচের নায়ক বাবর আজমকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন খুলনার পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র। নাসুম আহমেদের বলে ফিরে যান ব্রেন্ডন কিংও। আগের দুই ম্যাচে শূন্য করা কিং করেছেন ১ রান। ওপেনার রনি তালুকদারও নিজের কাজটা করতে পারেননি। উল্টো বল নষ্ট করে দলের চাপ বাড়িয়েছেন। দাসুন শানাকার বলে আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ১৫ রান করেন রনি।
রংপুরকে তবু ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন শামীম হোসেন। যদিও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি তিনি। ২২ বলে ৩০ রান করে মোহাম্মদ নওয়াজের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে পরিণত হন নাহিদুলের ক্যাচে। অধিনায়ক নুরুল হাসান ফেরেন রানআউট হয়ে।
শানাকার বলে সাকিব আউট হন এনামুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এরপরও রংপুরকে আশা দেখাচ্ছিলেন মোহাম্মদ নবী। মেহেদী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের ১৬ ও ১৭তম ওভারে ১৬ রান করে নেন। তবে পরের ওভারেই শানাকার বলে ফেরেন মেহেদী। ব্যাট হাতে ৪০ রান করা শানাকা বলে হাতে ৩ ওভারে ১৬ রানে নেন ৪ উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিং করা খুলনার শুরুটাও ভালো হয়নি। এনামুল হক, মাহমুদুল হাসান ও আফিফ হোসেন—খুলনার ব্যাটিং অর্ডার মূলত এই স্থানীয় ক্রিকেটারদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। রংপুরের বিপক্ষে আজ তিনজনই ব্যাট হাতে ব্যর্থ। অধিনায়ক এনামুল ৭ বলে খেলে আউট শূন্য রানে, ৩ নম্বরে নামা মাহমুদুল করেন ১১ বলে ৭ আর চারে নেমে আফিফ ৬ বলে ৪। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই ব্যর্থ হলে খুলনাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ওপেনার এভিন লুইস। ইনিংসের দশম ওভারে ২৫ বলে ৩৭ রান করে হাসান মাহমুদের বলে আউট হন তিনি। তাঁর এই ইনিংসেই মূলত প্রথম ১০ ওভারে ৬৫ রান তোলে খুলনা।
প্রথম ১০ ওভারে ৬৫ রান করা খুলনা শেষ ১০ ওভারে তোলে ৯৫ রান। খুলনা সেটা করতে পারে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার শানাকা ও পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজের ৫৩ বলে ৭৭ রানের জুটিতে। ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন নওয়াজ। ৩৩ বলে ৪০ রান করেন শানাকা। রংপুরের হয়ে হাসান নেন ২৯ রানে ৩ উইকেট। মেহেদী হাসানের উইকেট ২০ রানে দুটি। ফেরার ম্যাচে কোনো উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচ করেছেন সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৬০/৬ (এনামুল ০, লুইস ৩৭, জয় ৭, আফিফ ৪, শানাকা ৪০, নওয়াজ ৫৫, ওয়াসিম ৭*, হাবিবুর ১*; ওমরজাই ৪-১-৪১-০, মেহেদী ৪-০-২০-২, নবী ১-০-৭-০, হাসান ৪-০-২৯-৩, সাকিব ৪-০-২১-০, রিপন ৩-০-৪১-১)
রংপুর রাইডার্স: ১৮.৪ ওভারে ১৩২ (রনি ১৫, বাবর ২, কিং ১, শামীম ৩০, নাবি ৫০, ওমরজাই ৪, সোহান ১, সাকিব ২, মেহেদি ১২, রিপন ৮, হাসান ০*; নাহিদুল ৩-০-১৬-০, ওয়াসিম ৩.৪-০-৩১-২, নাসুম ৪-০-২৫-১, নওয়াজ ২-০-১৩-২, মুকিদুল ৩-০-২৯-০, শানাকা ৩-০-১৬-৪)
ফল: খুলনা ২৮ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: দাসুন শানাকা