পোলার্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়া কি সম্ভব কারও পক্ষে
রংপুর রাইডার্সের হয়ে সবশেষ ম্যাচেও খেলেছেন ২৪ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ম্যাচজেতানো ইনিংস। কদিন আগে ৪১ পূর্ণ করেছেন, এ বয়সেও শোয়েব মালিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের ছাপ রেখে চলেছেন। রংপুরের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই গড়ে ফেলেছেন তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৫০০তম টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ড। ম্যাচসংখ্যায় শোয়েবের আগে থাকা দুজন কাইরন পোলার্ড ও ডোয়াইন ব্রাভো—টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পরিচিত নাম তাঁরাও।
এখন পর্যন্ত ৪০০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে, কেউ অবসরের ঘোষণাও দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে বিদায় বলবেন কে?
সর্বোচ্চ ম্যাচসংখ্যায় পোলার্ড-ব্রাভো-মালিকের পরই থাকা ক্রিস গেইল বেশ কিছুদিন ধরেই খেলার বাইরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তির বয়সও হয়ে গেছে ৪৩। ৪৬৩ ম্যাচ খেলা গেইল ৫০০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁতে পারবেন কি না, সেটা বেশ অনিশ্চিতই এখন। কমপক্ষে ৪০০ ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়দের তালিকায় সবচেয়ে বয়স্ক এখন গেইলই।
৪০০ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের তালিকায় গেইল-শোয়েব-ব্রাভোর পর সবচেয়ে বেশি বয়স অস্ট্রেলিয়ার ড্যান ক্রিস্টিয়ানের। এখন পর্যন্ত এ তালিকায় আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনিই। বিগ ব্যাশের এ মৌসুমের শেষেই অবসরে যাওয়ার কথা ছিল, ফলে ২ ফেব্রুয়ারি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটিও খেলে ফেলেছেন তিনি।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ম্যাচ
তালিকায় সবার ওপরে থাকা পোলার্ডের বয়স ৩৫। ২০০৬ সালে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক করা সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৬১৪টি টি-টোয়েন্টি। তবে আইপিএল থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তার ওপর এখন যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের টি-টোয়েন্টি লিগে খেলছেন, আইসিসির সহযোগী দেশ বলে সে লিগের ম্যাচগুলোর স্বীকৃতি নেই। ফলে পোলার্ডের এ লিগের ম্যাচগুলোর রেকর্ড যুক্তও হবে না।
একই অবস্থা ডোয়াইন ব্রাভোরও। আইপিএল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন, সামনে কাজ করবেন চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং কোচ হিসেবে। আরব আমিরাতের লিগে খেললেও ক্যারিয়ারের নতুন একটি ধাপে এরই মধ্যে ঢুকে গেছেন ক্যারিবীয় এ অলরাউন্ডার। ৫৫৬ ম্যাচ খেলা ব্রাভোর বয়সও হয়ে গেছে ৩৯।
এ তালিকায় থাকা ইংল্যান্ডের রবি বোপারার বয়স ৩৭। আইপিএল, পিএসএলের মতো ওপরের সারির লিগগুলোয় নিয়মিত না হলেও ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট বা হানড্রেডে নিয়মিত খেলছেন, লংকা প্রিমিয়ার লিগের মতো টুর্নামেন্টেও দেখা যাচ্ছে তাঁকে।
বয়সের দিক দিয়ে বাকিরা আছেন কাছাকাছিই। সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে রাসেল—দুজনেরই বয়স ৩৪। নারাইন খেলেছেন ৪৩৫টি ম্যাচ, রাসেল ৪৩৪টি। ৫০০ ম্যাচ তো বটেই, ৬০০ ম্যাচও তাঁদের নাগালেই থাকার কথা। দুজনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখন অনিশ্চিত, তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোয় তাঁদের ‘হটকেক’-ই বলতে হবে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো নিয়মিত এ তালিকার দুটি নাম—ডেভিড মিলার ও রোহিত শর্মা। তবে ২৫ বছর বয়সী রোহিত এখন ভারতের তিন সংস্করণেরই অধিনায়ক। তার ওপর ভারতীয় ক্রিকেটাররা আইপিএলের বাইরে বিদেশের কোনো লিগেও খেলতে পারেন না। ৪০৭টি ম্যাচ খেলা ভারত অধিনায়কের তাই সংখ্যা খুব বেশি বাড়ার কথাও নয়।
মিলার অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটই খেলেন, টেস্টে অভিষেকই হয়নি তাঁর। এ তালিকায় টেস্ট না খেলা একমাত্র ক্রিকেটার তিনিই। তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সীও মিলার, ৩৪-ও পূর্ণ করেননি তিনি। প্রায় ১৫ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৪১৭টি ম্যাচ খেলা মিলার যেতে পারেন অনেক দূরই।
৪০০ ম্যাচ খেলার সবচেয়ে কাছাকাছি আছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৩৯৩টি ম্যাচ। তবে কদিন পরই ৩৬ পূর্ণ করবেন সাকিব।