হেড-ওয়ার্নার ঝড়ে নিউজিল্যান্ডের সামনে অস্ট্রেলিয়ার রানের পাহাড়
মাঝের ওভারগুলোয় রান একটু কম হবে, এটা জানত বলেই হয়তো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ধর্মশালায় নিজেদের ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা পাল্টে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। দলটির ব্যাটসম্যানরা লক্ষ্য বানিয়েছে ইনিংসের প্রথম ও শেষ ১০ ওভারকে।
এ পরিকল্পনায় সফলও হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ১০ ওভারে তারা কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলেছে ১১৮ রান। শেষ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে নিয়েছে ৯৬ রান। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের সামনে রানের পাহাড় তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। অলআউট হওয়ার আগে ৪৯.২ ওভারে করেছে ৩৮৮ রান।
রাজসিক ফেরা বলতে যা বোঝায়, এ ম্যাচে সেটাই হয়েছে ট্রাভিস হেডের। হাতের চোট সারিয়ে আজই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন। ফিরেই ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসনদের দম্ভ গুঁড়িয়ে অর্ধশতক পেয়েছেন মাত্র ২৫ বলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা ট্রাভিস হেডের এই অর্ধশতক এবারের বিশ্বকাপে যৌথভাবে দ্রুততম। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৫ বলে অর্ধশতক করেছিলেন শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম অর্ধশতক গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। ২০১৫ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২১ বলে অর্ধশতক করেছিলেন তিনি। ২৫ বলে অর্ধশতক আছে অ্যালেক্স ক্যারিরও। ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন ক্যারি।
শুধু যে হেড ঝড় তুলেছেন তা নয়, তাঁর সঙ্গী ডেভিড ওয়ার্নারও রীতিমতো বোল্ট-হেনরিদের উড়িয়ে দিয়েছেন। এই বাঁহাতি ওপেনার অর্ধশতক করেছেন মাত্র ২৮ বলে। এই দুই ওপেনার মিলে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বাউন্ডারি মেরেছেন ২১টি, যার মধ্যে ১০টি ছয় ও ১১টি চার। ওয়ার্নার-হেডের সামনে নিউজিল্যান্ড পেসারদের নতুন বলেই নাকল বল, কাটার, ইয়র্কার করতে দেখা গেছে।
অস্ট্রেলিয়া আজ প্রথম পাওয়ার প্লেতে রান তুলেছে ১১৮। প্রথম ১০ ওভারে রান তোলার রেকর্ডে যা যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে ১১৯ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দুজনের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৬৫ বলে ৫ চার ও ৬ ছয়ে ওয়ার্নার ৮১ রান করে আউট হয়ে ফেরেন। গ্লেন ফিলিপসের বলে ওয়ার্নার ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় ১৯.১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ১৭৫। সেই সময় মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়ার রান হয়তো ৪০০–এর বেশি হবে। ৮ বল ও ১ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া শেষ ৪ উইকেট হারানোয় শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ৪৯তম ওভারে এই ৪ উইকেটের ৩টিই নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।
আজ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতকটি করেন হেড। ১০ চার ও ৭ ছয়ে ৬৭ বলে ১০৯ রান করা হেড ফিরেছেন ফিলিপসের বলে বোল্ড হয়ে। হেডের ইনিংসটিতে ‘অবদান’ আছে নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতেরও। ৭০ রানে তাঁর দেওয়া ফিরতি ক্যাচ ছেড়েছেন মিচেল স্যান্টনার, ৭৫ রানে হেড দ্বিতীয়বার ‘জীবন’ পান রাচিন রবীন্দ্রের বলে, ক্যাচ ছেড়েছেন ফিলিপস। পরে লাবুশেন ও জশ ইংলিসের ক্যাচও ছেড়েছে কিউই ফিল্ডাররা।
এরপর ফিরে গেছেন স্টিভ স্মিথ (১৭ বলে ১৮), মিচেল মার্শ (৫১ বলে ৩৬), মারনাস লাবুশেন (২৬ বলে ১৮), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২৪ বলে ৪১), ইংলিস (২৮ বলে ৩৮), কামিন্স (১৪ বলে ৩৭), মিচেল স্টার্ক (১), অ্যাডাম জাম্পা (০)।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সেরা বোলিং করেছেন ফিলিপস। ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বোল্ট ৩ উইকেট নিয়েছেন ৭৭ রানে। এ ছাড়া মিচেল স্যান্টনার ২ উইকেট নিয়েছেন ৮০ রান দিয়ে।