শুবমান গিল সেঞ্চুরির পর ফিরেছিলেন, চারে এসেছিলেন বিরাট কোহলি। তবে ব্যাটিংয়ের ধরনই বলছিল, চেতেশ্বর পূজারার সেঞ্চুরির জন্যই অপেক্ষা করছে ভারত। ইনিংসের ৬২তম ওভারের চতুর্থ বলে তাইজুল ইসলামকে ওয়াইড লং অন দিয়ে চার মেরে সে সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন পূজারা, ২০১৯ সালের পর এই প্রথমবার। এরপরই ২ উইকেটে ২৫৮ রানের স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে দেন ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে বাংলাদেশের সামনে এখন ৫১৩ রানের অসম্ভব এক লক্ষ্য। তৃতীয় দিনই তাই আবার ব্যাটিংয়ে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
পিঠের ব্যথায় ইবাদত মাঠে নেই, কাঁধের ব্যথায় বোলিং করতে পারছেন না সাকিব। চা-বিরতির পর প্রথম ওভারেই টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এলেন লিটন দাস। করলেন টানা ২ ওভার। অবশ্য দ্বিতীয়টিতে তাঁকে ছক্কা মারেন গিল। পরে বোলিংয়ে আসেন নাজমুল হোসেনও। ভারত ইনিংস ঘোষণা করবে, সে অপেক্ষাতেই যেন বোলিং করছিল বাংলাদেশ।
তবে লিড বাড়ানোর সঙ্গে ছিল ব্যক্তিগত অর্জনের হাতছানিও। সেটি প্রথমে কাজে লাগালেন শুবমান গিল। মিরাজকে রিভার্স সুইপে চার মেরে ৯৯ রানে গেলেন, এরপর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে আরেকটি চারে পৌঁছে গেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে। তাঁর লেগেছে ১৪৭ বল। মাইলফলকে যাওয়ার পরই মিরাজকে ছয় মেরেছিলেন, তাঁকেই আবার তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে বদলি ফিল্ডার মাহমুদুল হাসানের হাতে ধরা পড়েন।
পরের মাইলফলকটি ছিল পূজারার। মিরাজকে চার মেরে ম্যাচে দিতীয় ফিফটি পেয়ে যান তিনিও। ৮৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর পরের ফিফটিটি পেতে পূজারার লেগেছে মাত্র ৪৩ বল। প্রথম ইনিংসে ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা পূজারা সেটি পেয়ে গেলেন ঠিক পরের ইনিংসেই।
প্রথম ইনিংসে ২৫৪ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম ১৫ ওভারে তোলে ৩৬ রান। মধ্যাহ্নবিরতির পর অবশ্য গতি বাড়ায় তারা। প্রথম ৭ ওভারে আসে ৫টি চার। বাংলাদেশ এরপর পেয়ে যায় ব্রেকথ্রুও। খালেদ আহমেদ শর্ট বলের পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলেন, লেগ সাইডের বাইরের লাইন থেকে হুক করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে তাইজুলের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন রাহুল। তাতেই ভাঙে ৭০ রানের জুটি, এ বছর যেটি ওপেনিংয়ে ভারতের সর্বোচ্চ।
গিলের বিপক্ষে নেওয়া দুটি রিভিউ বিফলে যায় সে সেশনে বাংলাদেশের। মিরাজের বলটি লেগ স্টাম্প মিস করে যেত বলে দেখিয়েছে বল ট্র্যাকিং। আর পরে ইয়াসির আলীর বলে রিভিউটি কাজে আসেনি ডিআরএস সিস্টেম কাজ করছিল না বলে। এর আগে প্রথম সেশনে একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচেছিলেন গিল।
সকালে কুলদীপ যাদবের ক্যারিয়ার-সেরা বোলিংয়ের পর ১৫০ রানেই প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ, এ মাঠে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। তৃতীয় দিন সকালে বাংলাদেশের শেষ দুই উইকেট জুটি টিকেছে ৪৮ মিনিট ও ১১.৫ ওভার। এ দিন বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে ১৭ রান।
দিনের পঞ্চম ওভারে কুলদীপ যাদবের লেগসাইডের বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হন ইবাদত। মিরাজের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৪২ রান, ৮৩ বলে। রান ও বলের হিসেবে বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ জুটি সেটিই। ইবাদতের উইকেটটিই ছিল কুলদীপের ইনিংসে পঞ্চম উইকেট। শেষ পর্যন্ত এ বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বোলিং শেষ করেন ৪০ রানে ৫ উইকেটের ক্যারিয়ার-সেরা ফিগার নিয়ে। খালেদের সঙ্গে মিরাজের জুটি এরপর ৭ ওভার টিকলেও ওঠে মাত্র ৬ রান। অক্ষর প্যাটেলকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন ৮২ বল খেলে ২৫ রান করা মিরাজ।