শ্রীলঙ্কার নাটকীয় ধস, কুলদীপ-রাহুলে সিরিজ ভারতের
১০২ থেকে ১৫২—৫০ রান তুলতে শ্রীলঙ্কা হারিয়েছিল ৬ উইকেট। পরে ভারত ৫৩ রান তুলতে হারায় ৪ উইকেট। তবে পার্থক্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ধসের ওই মাত্রাই। নাটকীয় ধস থেকে বেরিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ২১৫ রান পর্যন্ত যাওয়া শ্রীলঙ্কা কলকাতায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আটকাতে পারেনি ভারতকে। ৮৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়া ও লোকেশ রাহুলের ৭৫ রানের জুটি পথ দেখিয়েছে ভারতকে। ৪০ বল ও ৪ উইকেট বাকি রেখে পাওয়া জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে রোহিত শর্মার দল।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা আভিস্কা ফার্নান্ডোকে হারায় ষষ্ঠ ওভারে, চার চারে ১৭ বলে ২০ রান করার পর মোহাম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। অভিষিক্ত নুয়ানিদু ফার্নান্ডো ও কুশল মেন্ডিসের ৬৬ বলে ৭৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি শ্রীলঙ্কাকে সে চাপ থেকে বের করে আনে ভালোভাবেই। এ ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরা কুলদীপ যাদবের বলে এরপর এলবিডব্লিউ হন ৩৪ বলে সমান রান করা মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার ধসের শুরুও তাতেই।
ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (০) ও দাসুন শানাকা (২) বোল্ড হন দুই অঙ্কের আগেই-ধনাঞ্জয়া অক্ষর প্যাটেলের বলে, শানাকা কুলদীপের শিকার। এ দুজনের মাঝে রানআউট হয়ে ফেরেন নুয়ানিদু। ঘরোয়াতে মিডল অর্ডারে খেললেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে এসে ওপেন করতে হয় নুয়ানিদুকে, শুরুতে রান করতে ভুগলেও সেটি পুষিয়ে ফিফটির দেখাও পান। চারিত আসালাঙ্কার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কাল হয় তাঁর, তাতে অবশ্য অবদান আছে মিডউইকেটে শুবমান গিলের দারুণ ফিল্ডিংয়েরও। নুয়ানিদু ফেরার পরের ওভারে কুলদীপকে ফিরতি ক্যাচ দেন চরিত আসালাঙ্কা।
১২৬ রানে ৬ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা ২০০ পার হয় ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিথ ভেল্লালাগে, চামিকা করুনারত্নে ও কাসুন রাজিথার অবদানে। তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৪ বলে ৩২ রান করেন ভেল্লালাগে। শ্রীলঙ্কার শেষ ৪ উইকেট ভাগ করে নেন দুই পেসার সিরাজ ও উমরান মালিক। ১০.২ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
রান তাড়ায় রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল দ্রুতগতির শুরুই করেন। অবশ্য ২১ বলে ১৭ রান করেই থামেন রোহিত, চামিকা করুনারত্নের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। লাহিরু কুমারার বলে আলগা শটে ক্যাচ তুলে তাঁকে অনুসরণ করেন ১২ বলে ২১ রান করা গিলও। কুমারার দ্বিতীয় শিকার আগের দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পাওয়া বিরাট কোহলি, লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলটি তাঁর ব্যাট ছুয়ে আঘাত করে স্টাম্পে, স্তব্ধ করে দেয় ইডেন গার্ডেনসকে। অন্য প্রান্তে ভালো খেলতে থাকা শ্রেয়াস আইয়ার ৩৩ বলে ২৮ রান করে কাসুন রাজিতার বলে হন এলবিডব্লিউ।
৮৬ রানে ভারতের ৪ উইকেট তুলে নেওয়ার পর যদি কোনো আশা জেগেও ওঠে শ্রীলঙ্কার, তা শেষ করে দেন রাহুল ও পান্ডিয়া। পর্যাপ্ত বল আছে বলে দুজনই করেন সতর্ক ব্যাটিং। করুনারত্নের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৩৬ রান করতে ৫৩ বল খেলেন পান্ডিয়া। ২১ বলে ২১ রান করা অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে রাহুলের ৩০ রানের জুটিতে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় ভারত। অক্ষর ফেরার পর অবশ্য আরেকবার আশা তৈরি হয়েছিল শ্রীলঙ্কার, তবে কুলদীপের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে জয় নিশ্চিত করেন রাহুল। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৩ বলে ৬৪ রানে।