চরিত্র বদলে টি–টোয়েন্টিতে লিটনের সর্বোচ্চ
হঠাৎ কী হলো লিটন দাসের? ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে কোনো ফিফটি নেই। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের চার ইনিংসের ৩টিতেই থিতু হয়ে আউট। সর্বশেষ ইনিংসে ৭৩ রানের ইনিংসটি ছাড়া সেই সিরিজে উল্লেখযোগ্য রান নেই। এরপর তো যোগ হলো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের রানখরা।
তিন ম্যাচে লিটনের স্কোর ছিল ৭, ০, ০। তিন ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৭ রান। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এর চেয়ে খারাপ করেছিলেন একবারই। ২০১৯ সালের নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ইনিংসেই করেছিলেন ১ রান করে। টানা দুই শূন্যের কারণে কেউ হয়তো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিকেই লিটনের সবচেয়ে বাজে বলে রায় দিতে পারেন।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও ব্যর্থ, করেছেন ১২ ও ৯। তখন থেকেই ফিসফাস শুরু, গত দুই বছর ধরে যন্ত্রের মতো রান করে যাওয়া লিটন হুট করে রানখরায় ভুগছেন কেন? ওই সময়টা যে সাময়িক ছিল, তার প্রমাণ দিয়ে আজ আবার স্বরূপে দেখা দিয়েছেন লিটন। খেলেছেন ৭৩ রানের এক ইনিংস।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটেই খেলা হচ্ছে আজ। একদিনের ব্যবধানে একই উইকেটে ম্যাচ। এটা যতটা কারণ, তার চেয়ে বড় কারণ সম্ভবত সাম্প্রতিক বাজে ফর্ম।
যে কারণে লিটন ইনিংসের শুরুটা করেছেন মন্থর গতিতে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে দেখেশুনে খেলেছেন, রান করেছেন মাত্র ২০ বলে ২১। এরপরই অবশ্য আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকেন। পরের ২০ বলেই করে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। যাতে ছিল ৮টি চার।
টি-টোয়েন্টিতে লিটনের নবম ফিফটি। ক্রিস জর্ডানের বলে ক্যাচ তুলে আউট হওয়ার আগে লিটন ফিফটিকে নিয়ে যান তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসে। ৫৭ বল খেলে ৭৩ রানের ইনিংসে চার ছিল ১০টি। স্ট্রাইক রেট ১২৮।
ছন্দে ফিরতেই কি না, আজ লিটন তাঁর চেনা ছন্দ থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাটিং করেছেন। তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের মন্থরতম ফিফটি ছিল এটি। এর আগে ৫০–এর বেশি রান করা ইনিংসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৩। সেটি ২০২০ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেদিন ৪৫ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। গত বছর ১৩৬ স্ট্রাইক রেটে আরও একটি ফিফটি করেছিলেন। সেটিও মিরপুরেই, প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান।
এ ছাড়া লিটনের সব কটি ফিফটিতে স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০ এর ওপরে। লিটনই গত বিপিএলের সময় এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে বলছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে আমার যতগুলো ৫০–এর স্কোর আছে, যেগুলো দলকে জেতাতে সাহায্য করেছে, খেলার মোমেন্টাম বদলে দিয়েছে, সবই কিন্তু কম বলে। আমি খুব বেশি বল নিয়ে ইনিংস খেলিনি। আমার ক্যারেক্টারটাই এমন। আমি অ্যাটাকিং খেলতে পছন্দ করি। কখনোই এমন হয় না যে আমি ৪০ বলে ৪০ করি, আমি যদি ৪০ বল খেলি, তাহলে ৬০ হয়ে যায়। আমি যেভাবে এতদিন সফল হয়েছি, সে ধারবাহিকতাই বজায় রাখতে চাই।’
এই ইনিংসটা সেদিক থেকে হয়তো একটু ব্যতিক্রমই। তবে এই সিরিজে লিটনের সর্বশেষ ৬টি ইনিংসের কথা মনে রাখলে ‘সেটি কেন’—তা অনুমান করা মোটেই কঠিন কিছু নয়।