হাবিবুলের বিশ্বাস, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিততে পারেন সাকিবরা
দুপুর থেকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের ‘ম্যাচ সিনারিও’ অনুশীলন দেখছিলেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার। সঙ্গে ছিলেন আরেক নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক। বিকেলের দিকে ড্রেসিংরুমের সামনে থাকা ক্রিকেটার ও কোচদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন দুজন।
মাঠে তখন ব্যাটিং করছিলেন মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেন। কিছুক্ষণ পর সেদিকে এক চোখ রেখে সাংবাদিকদের সঙ্গে আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে কথা বললেন হাবিবুল।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠে হারানোর সম্ভব কি না, তা নিয়ে কথা বললেন হাবিবুল। সাবেক এই অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস, ইংল্যান্ডকে হারানো খুবই সম্ভব, ‘আমরা তো বড় বড় দলকে হারাচ্ছিই। শুধু বাংলাদেশে নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাদের হারিয়েছি। আমরা যতগুলো সিরিজ জিতেছি, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকারটা সেরা। কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের কন্ডিশনে হারানো খুবই কঠিন। আমরা ৫০ ওভারে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছি, সবার সঙ্গেই। ভারতও অনেক শক্তিশালী দল নিয়ে এসেছিল। তাদেরকেও তো হারালাম।’
অতীত সাফল্যের কথা মনে করে হাবিবুল যোগ করেন, ‘ইংল্যান্ডকে হারানো যাবে না, এমন কোনো কথা নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সহজ বলে কোনো দল নেই। ইংল্যান্ডও ভালো দল। কিন্তু আমরা যে ধারাবাহিকতায় খেলছি, সেটা ধরে রাখতে পারলে সিরিজ জয়ের ভালো সম্ভাবনাই থাকবে।’
বাংলাদেশ দল ঘরের মাঠে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে ২০১৬ সালে, এই ইংল্যান্ডের কাছেই। এরপর ঘরের মাঠে ১৩টি ওয়ানডে সিরিজের একটিতেও হারেনি। সেই ইংল্যান্ড দল এবার বাংলাদেশে এসেছে সাদা বলের ক্রিকেটে রাজা হয়ে। তবে হাবিবুল ইংল্যান্ডের চেয়েও ভারতকে কঠিন প্রতিপক্ষ মনে করেন। রোহিত শর্মার দলকে যখন হারানো গেছে, ইংল্যান্ডকেও সম্ভব।
হাবিবুলের কথা, ‘দেখুন, উপমহাদেশের কন্ডিশন অনুযায়ী ভারত কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ছিল। আমি কোনো দলকেই খুব বেশি এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখব না। ইংল্যান্ড অবশ্যই ভিন্ন ধারার ক্রিকেট খেলছে, তিন সংস্করণেই। অন্য দল যেমন ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা—সবাই ভালো দল। জিততে হলে আমাদের সবাইকেই ভালো খেলে জিততে হবে। এমন নয় যে ইংল্যান্ড দলে আমাদের ভিন্ন কিছু করতে হবে। আমরা যা ভালো করছি, সেটাই যদি ধারাবাহিকভাবে করতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় না আমাদের আলাদাভাবে কিছু করতে হবে।’
ভালো ব্যাটিং উইকেটে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যেকোনো বোলিং আক্রমণকে দুমড়েমুচড়ে দিতে পারে। সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলের নবম আসরে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। ইংল্যান্ড সিরিজে উইকেটের আচরণ কেমন হতে পারে, তা নিয়ে একটা ধারণা দিয়েছেন হাবিবুল, ‘কোন দলের সঙ্গে খেলছি, সেটার ওপর নির্ভর করে উইকেট কেমন হবে। ভারতের সঙ্গে যেমন উইকেটে খেলব, ইংল্যান্ডের সঙ্গে একই উইকেটে না–ও খেলতে পারি।’
তবে হাবিবুলের বিশ্বাস, বাংলাদেশ দল এখন সব ধরনের উইকেটে ভালো ওয়ানডে খেলার সামর্থ্য রাখে। ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৪ সদস্যের দলের সমন্বয়টাও নাকি সেভাবে সাজানো, ‘আমার মনে হয় না উইকেটের খুব বেশি সাহায্য নিতে হবে। একটু আগেই বললাম, আমরা কিন্তু বাইরে গিয়েই জিতে এসেছি। সেখানে আমাদের মতো করে উইকেট বানানো হয়নি। এমন নয় যে আমাদের জিততে হলে ওই রকম উইকেটই বানাতে হবে। আমাদের দলে ৪ জন পেসার আছে, ৩ জন স্পিনার আছে। যেটা ম্যানেজমেন্টের মনে হয় প্রতিপক্ষ বুঝে অবশ্যই সেভাবে স্ট্র্যাটেজি হবে। সবাই তাই করে।’
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ব্যাপারেও কথা বলেছেন হাবিবুল। তাঁর ধারণা, বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কে জানাশোনা থাকায় দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ শুরু করলেও দলের সঙ্গে মিশে যেতে সমস্যা হচ্ছে না এই শ্রীলঙ্কানের, ‘কোচরা সবাই পেশাদার। চন্ডিকা কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে জানে। অন্য কেউ এলে একদম নতুন করে শুরু করতে হতো। ওই রকম নয়। সেদিক থেকে সে এক ধাপ এগিয়ে আছে। সে দলটা সম্পর্কে জানে। সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে। পরিবেশ সম্পর্কে জানে। সেদিক থেকে ওই সময়টা স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের থেকে একটু কম লাগবে। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাস করি, বিষয়টা মূলত খেলোয়াড়দের। তারা কেমন পারফর্ম করছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। ভালো কিছুই হবে। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সবাই সবার দায়িত্বটা বোঝে।’