মৃত্যুশয্যায়ও ‘গ্রন্থাগারের নীরবতা’ মনে পড়বে কামিন্সের
বিশ্বকাপ জয়ের পর যত দিন গড়াচ্ছে, ততই যেন এর রূপ-রস ধরা পড়ছে প্যাট কামিন্সের কাছে। দুই হারে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়া টানা আট ম্যাচ জিতে উঠেছিল ফাইনালে। ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটে হারায় কামিন্সের দল।
বিশ্বকাপ শেষে অস্ট্রেলিয়া দলের কয়েকজন খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ভারতে রয়ে গেছেন। আর অন্যদের নিয়ে দেশে ফিরে গেছেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়াকে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া এই অধিনায়ক বলেছেন, বিশ্বকাপ থেকে তিনি এমন কিছু নিয়ে গেছেন, যা মৃত্যুশয্যায় শুয়েও তাঁর মনে পড়বে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে লাখো মানুষের চিৎকার-উল্লাসে ভরা গ্যালারিতে গ্রন্থাগারের নীরবতা নেমে আসা।
ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে কামিন্সকে ভারতের দর্শকদের নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলেছিলেন, দর্শকের গর্জন তিনি থামিয়ে দিতে চান। ম্যাচে ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল। সেদিন ফাইনাল দেখতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ছিলেন ৯২ হাজারের বেশি দর্শক। আগে ব্যাট করতে নামা ভারতের হয়ে মুহুর্মুহু উল্লাস করে চলেছিলেন তাঁরা। চার-ছয় তো বটেই, ভারতের একেকটি রানে গ্যালারির যেকোনো একটি প্রান্ত উল্লসিত হয়ে উঠলেও সেটি ছিল কামিন্সদের জন্য অন্যতম প্রতিপক্ষ।
এমন হইচইপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে ম্যাচের ২৯তম ওভারে নিস্তব্ধতা নামিয়ে আনেন কামিন্স। তাঁর শর্ট লেংথের বল আলতো করে খেলতে চেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। তবে বল যে বেশি উঠবে, ভাবতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে বল গিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেয়। ৬৩ বলে ৫৪ রান করা কোহলির অমন আউটে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্যালারি। সুনসান সেই মুহূর্তটি উঠে এসেছে কামিন্সের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য এইজের সাক্ষাৎকারে কামিন্সকে জিজ্ঞেস করা হয়, ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে ফাইনালের কোন মুহূর্তটা তিনি মনে করতে পারবেন?
জবাবে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক কোহলির উইকেটের কথা বলেন। ওই মুহূর্তের বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘উইকেটটা পেয়ে আমি খুবই উৎফুল্ল ছিলাম। তারপর সবাই যখন গোল হয়ে দাঁড়ালাম, স্টিভেন স্মিথ বলল, “এসো, সবাই এক সেকেন্ড দর্শকদের শব্দ শুনি।” মুহূর্তের জন্য আমরা চুপ করে গেলাম। মনে হলো গ্রন্থাগারের নীরবতার মধ্যে আছি। চারপাশে হাজার হাজার ভারতীয় দর্শক। কিন্তু একেবারে নিস্তব্ধ। এই মুহূর্তের স্বাদটা আমি অনেক দিন অনুভব করব।’