এ নিয়ে চারবার বিপিএলের ফাইনালে উঠে চারবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। এবার তাদের সামনে হ্যাটট্রিক শিরোপার হাতছানি।
২০২২ সালের ফাইনালে কুমিল্লার কাছেই হেরে রানার্সআপ হওয়া ফরচুন বরিশালের এটি দ্বিতীয় ফাইনাল। তবে ‘ফরচুন বরিশাল’ নামে না হলেও বিপিএলে বরিশাল দল ফাইনাল খেলেছে আরও দুবার। ২০১২ সালের প্রথম বিপিএলে বরিশাল বার্নার্স নামে ফাইনাল খেলে তারা হেরেছিল চ্যাম্পিয়ন ঢাকা গ্ল্যাডিয়টর্সের কাছে। ‘বরিশাল বুলস’ নামে বরিশাল ফাইনাল খেলেছে ২০১৫ বিপিএলেও। বিপিএলের সেটি তৃতীয় আসর এবং সেবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় টুর্নামেন্টের সফলতম দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
আজ আরেকটি কুমিল্লা–বরিশাল ফাইনালের আগে তাই প্রশ্নটা আসেই—কুমিল্লার পাঁচে পাঁচ, নাকি বরিশালের প্রথম? উত্তর জানা যাবে আজ রাতেই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ দশম বিপিএলের ফাইনাল শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।
পরশু রাতে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলে ক্লান্ত ফরচুন বরিশাল কালকের দিনটা কাটিয়েছে বিশ্রামে। তবে সকালে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন এবং সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন দলের সহ–অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
মিরাজ এর আগে দুবার বিপিএলে ফাইনাল খেললেও ট্রফি ছুঁয়ে দেখতে পারেননি। এবার সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চান, ‘কখনো বিপিএলে ট্রফি জিতিনি। এর আগে দুবার ফাইনাল খেলেছি, এটা নিয়ে তৃতীয় হবে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলব। সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে, কুমিল্লাও চায়। মাঠে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।’
বিপিএলে কুমিল্লা আর বরিশালই দর্শকপ্রিয় দলগুলোর মধ্যে এগিয়ে। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায় ভরে যাবে, সে আভাস মিলেছে কালই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম এবং ইনডোর স্টেডিয়ামের টিকিট বুথে ভিড় লেগেছিল টিকিটপ্রত্যাশীদের।
মিরাজও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ফাইনালের আশাই করছেন, ‘এর আগেও বরিশাল-কুমিল্লা ফাইনাল হয়েছে, সেবার বরিশাল ১ রানে হেরেছে। আশা করছি, এবারও ভালো একটা ম্যাচ হবে, সবাই উপভোগ করবে।’ প্রতিপক্ষ হিসেবে কুমিল্লার প্রতিও আছে তাঁর সমীহ, ‘কুমিল্লা সব সময়ই অনেক বড় দল। প্রতিপক্ষ হিসেবে চ্যালেঞ্জিং হবে। ভালো খেলাই হবে। কারণ, আমাদের দলও অনেক শক্তিশালী। আমাদের দলেও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, বিদেশি যারা আছে, তারাও খুব ভালো খেলোয়াড়।’
ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন ও সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল অধিনায়ক তামিমের মতো ছিলেন না কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাসও। তামিম অবশ্য কাল সন্ধ্যায় তাঁর ফেসবুক পেজে এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, আগের রাতে ম্যাচ শেষে সব আনুষ্ঠানিকতা সারতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল বলেই সকালে তাঁর পক্ষে আহসান মঞ্জিলের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাসের না যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যাটা পাওয়া গেছে দলের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কাছ থেকে। গতকাল বিকেলে মিরপুরে অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘কাল (আজ) ফাইনাল খেলা। এখন আমার অধিনায়ককে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাবেন আড়াই ঘণ্টা জার্নি করে, আবার সে আড়াই ঘণ্টা-তিন ঘণ্টা জার্নি করে এখানে আসবে! তার তো ট্রফি দেখার চেয়ে ট্রফিটা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতিটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
সালাউদ্দিন অবশ্য টিম হোটেল থেকে পুরান ঢাকার আহসান মঞ্জিলের দূরত্বের প্রসঙ্গও এনেছেন। দুই দল যেহেতু বনানীর একই হোটেলে আছে, অনুষ্ঠানটা অত দূরে আয়োজন না করে হোটেলের কাছাকাছি কোনো ‘আইকনিক’ জায়গায় করলে দুই অধিনায়কই তাতে অংশ নিতে পারতেন বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে সকালে কুমিল্লার প্রতিনিধি হয়ে আহসান মঞ্জিলে গিয়েছিলেন দলের তরুণ ব্যাটসম্যান জাকের আলী। মিরাজের মতো তিনিও আশাবাদী শিরোপা জয়ের ব্যাপারে। তবে ফাইনাল মানেই তাঁর কাছে ট্রফি জয় নয়, ‘ফাইনালে উঠলেই যে ট্রফি পেয়ে যাব, এমন কিছু নয়। পারফর্ম করেই কুমিল্লা প্রতিবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। যদি চ্যাম্পিয়ন হতে হয়, এবারও ফাইনালে আমাদের ভালো পারফর্ম করতে হবে। তবে আমরা জানি, কীভাবে বড় ম্যাচে পারফর্ম করতে হয়।’