ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কার হাতে। কিন্তু ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, ম্যাচের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড় অভিষিক্ত দুনিত ভেল্লালাগে।
হবেন নাই–বা কেন? শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথমবার টি–টোয়েন্টি খেলতে নেমে ভেল্লালাগে ৪ ওভার বল করে দিয়েছেন মাত্র ৯ রান, ১৬টি ডট, কোনো বাউন্ডারি খাননি, নিয়েছেন ৩ উইকেট। তাও যেনতেন উইকেট নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং লাইন আপের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই তাঁর শিকার। এমন পারফরম্যান্সকে নির্দ্বিধায় স্বপ্নের অভিষেক বলা যায়।
ভেল্লালাগের সঙ্গে তিকশানা–আসালাঙ্কাও বল হাতে জ্বলে উঠেছেন। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিধ্বস্ত করে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজে সমতা এনেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। ডাম্বুলায় আজ টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬২ রান করেছিল লঙ্কানরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্যারিবীয়রা ২৩ বল বাকি থাকতে অলআউট হয় মাত্র ৮৯ রানে।
ডাম্বুলাতেই গত রোববার সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ ৭৩ রানে হেরে যাওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার একই ভেন্যুতে শেষ ম্যাচটা রূপ নিল সিরিজ নির্ধারণীতে।
আগের ম্যাচে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া ব্রান্ডন কিং ও এভিন লুইসকে আজ ৪ ওভারের মধ্যেই হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে কিংকে উইকেটকিপার কুশল মেন্ডিস স্টাম্পড করলে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে প্রথম উইকেটের দেখা পান ভেল্লালাগে। চতুর্থ ওভারে লুইসকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন মহীশ তিকশানা। পাওয়ারপ্লেতে রোস্টন চেজকেও ফেরান বাঁহাতি স্পিনার ভেল্লালাগে।
শুরুর বিপর্যয় আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভেল্লালাগে–তিকশানার পর আসালাঙ্কার ঘূর্ণিতে এক পর্যায়ে ৪০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ও আলজারি জোসেফ যা একটু লড়েছেন। নবম উইকেটে এ দুজনের ২৩ রানের জুটিই দলীয় সর্বোচ্চ।
তবে তা টি–টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচাতে পারেনি। আজকের ৮৯ রানের আগে লঙ্কানদের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের দলীয় সর্বনিম্ন ছিল ১০১, ওভালে ২০০৯ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।
এর আগে পাতুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস শ্রীলঙ্কাকে দারুণ শুরু এনে দেন। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে তোলেন ৮০ রান। দশম ওভারের শেষ বলে কুশল মেন্ডিস ব্যক্তিগত ২৬ রানে আউট হলে জুটি ভাঙে।
তবে আরেক ওপেনার নিশাঙ্কা টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১২তম ফিফটি তুলে নেন। সঙ্গে কুশল পেরেরার ২৪ ও কামিন্দু মেন্ডিসের ১৯ রানের সুবাদে অপেক্ষাকৃত মন্থর উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৬২/৫
(নিশাঙ্কা ৫৪, কুশল মেন্ডিস ২৬, কুশল পেরেরা ২৪; শেফার্ড ২/২৩, স্প্রিঙ্গার ১/২৪, আলজারি জোসেফ ১/৩৩, শামার জোসেফ ১/৩৫)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.১ ওভারে ৮৯ অলআউট
(পাওয়েল ২০, আলজারি জোসেফ ১৬, রাদারফোর্ড ১৪; ভেল্লালাগে ৩/৯, আসালাঙ্কা ২/৬, তিকশানা ২/৭, হাসারাঙ্গা ২/৩২, পাতিরানা ১/১২)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: পাতুম নিশাঙ্কা।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১–১ সমতা।