পাকিস্তানের ‘হাইব্রিড মডেলে’ রাজি নয় ভারত, সিদ্ধান্ত এসিসি সভায়
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলের এশিয়া কাপে রাজি নয় ভারতীয় বোর্ড বিসিসিআই। ভারত চায় এশিয়া কাপ হোক একটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে, পাকিস্তান ও অন্য একটি দেশ মিলিয়ে দুই ধাপে নয়।
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বিসিসিআই সচিব জয় শাহ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানদের কাছে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেছেন। রোববার আহমেদাবাদে এশিয়ার তিন বোর্ডপ্রধানের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মিলিত হন জয় শাহ। বিসিসিআইয়ের এই কর্তা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলেরও (এসিসি) সভাপতি। ভারত পাকিস্তানে খেলতে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এশিয়া কাপ নিয়ে যে অচলাবস্থার শুরু, হাইব্রিড মডেলেও বিসিসিআইয়ের অসম্মতি প্রকাশের মাধ্যমে তা আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় এসিসির নির্বাহী বোর্ড। এ জন্য প্রেসিডেন্ট জয় শাহকে সভা আহ্বান করতে হবে উল্লেখ করে এসিসি বোর্ডের এক সদস্য সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান পিসিবিকে বলেছে, তাদের পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে আপত্তি নেই। কিন্তু হাইব্রিড মডেলে আগ্রহী নয় ভারত। এখন অচলাবস্থা ভাঙতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এসিসি নির্বাহী বোর্ডের সভায়, যেটা প্রেসিডেন্ট জয় শাহকে আহ্বান করতে হবে।’
শনিবার বিসিসিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভা শেষে জয় শাহও বলেছিলেন, এশিয়া কাপের ভেন্যু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে এসিসি সভায়। এসিসি নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদেশ ২৫টি। এর মধ্যে ৫টি আইসিসির পূর্ণ সদস্য তথা টেস্ট মর্যাদার, ৩টি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মর্যাদার আর বাকি ১৭টি শুধু টি-টোয়েন্টি মর্যাদার।
এর মধ্যে এশিয়া কাপ খেলবে টেস্ট খেলুড়ে পাঁচটি দেশ ও নেপাল। এখন হাইব্রিড মডেলের এশিয়া কাপের ভেন্যু নিয়ে সবার ভোটের কী অর্থ, এমন প্রশ্ন তুলেছেন এসিসি বোর্ডের ওই সদস্য, ‘এখানে একটা মাঝামাঝি সমাধান দরকার। কারণ, হাইব্রিড মডেল নিয়ে ভোটাভুটি করা যায় না। টুর্নামেন্ট খেলবে ৬টি দেশ, বাকি ১৯ দেশের ভেন্যু নিয়ে মতামত দেওয়ার কী অর্থ? যেখানে তাদের অংশগ্রহণ বা স্বার্থ নেই, সেখানে তারা কীসের ভিত্তিতে, কী ভোট দেবে?’
এসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩ এশিয়া কাপের আয়োজন করার কথা পিসিবির। তবে ভারত সরকার রাজি নয় কারণ দেখিয়ে বিসিসিআই পাকিস্তানে খেলতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গত বছরই জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে দুই বোর্ডের মধ্যে পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্কও চলে।
বিসিসিআইকে অনড় দেখে একপর্যায়ে কিছুটা নমনীয় হয় পিসিবি। টুর্নামেন্টের প্রথম ৬ ম্যাচ পাকিস্তান ও পরের ৭ ম্যাচ অন্য ভেন্যুতে আয়োজন করতে হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। এই মডেল অনুযায়ী ভারত ছাড়া অন্য চারটি দেশ পাকিস্তানে গিয়ে কমপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে, ভারতের সব ম্যাচ হবে দ্বিতীয় ভেন্যুতে।
গত বৃহস্পতিবার বিসিসিআই’র একটি সূত্রের বরাতে পাকিস্তানের দ্য নিউজ বলেছিল, হাইব্রিড মডেলে রাজি হয়েছেন জয় শাহ। যদিও চার দিন পর পিটিআইয়ের খবর বলছে উল্টোটা, যা এশিয়া কাপ নিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়িয়েছে।
ওয়ানডে সংস্করণের এশিয়া কাপের জন্য ১ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর সময় বরাদ্দ করা আছে।