বিশ্বকাপ-জ্বরে ভুগছে অস্ট্রেলিয়া। বলাই যায় এটি। ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসের সেরা অর্জন সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে আবার তাদের প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লড়াই হবে, আর কথার লড়াই হবে না—এমন হয় নাকি! সে আলোচনাই আরেকটু উসকে দিলেন যেন অস্ট্রেলিয়া ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। আগামীকালের সেমিফাইনালের আগে সবশেষ অ্যাশেজের প্রসঙ্গ টেনে ইংল্যান্ডকে একটা খোঁচা দিয়েছেন তিনি।
ওয়ার্নার টুইটারে লিখেছেন, ‘মাটিল্ডাদের আগেভাগে শুভকামনা। ইংলিশরা কিন্তু বল বদলাতে বলতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে!’
হাসির ইমোজি দিয়ে এ টুইটে আবার ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সমর্থকগোষ্ঠী বার্মি আর্মিকেও মেনশন করেছেন ওয়ার্নার।বল বদলানোর ব্যাপারটি অ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট ওভালের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে উসমান খাজার হেলমেটে বল লাগার পর সেটি বদলান আম্পায়াররা। তবে যে বল দেওয়া হয়, সেটি তুলনামূলক নতুন বলে দাবি অস্ট্রেলীয়দের। এ পরিবর্তিত বল নিয়ে বিতর্ক চলেছে বেশ কিছু দিন।
ওপেনার উসমান খাজা, সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংরা মুখ খুলেছিলেন। পরে এ নিয়ে কথা বলেন কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। পরিবর্তিত বলটি ইংল্যান্ডকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে, এমন দাবি তাঁদের। এমনকি বলটি নাকি চার-পাঁচ বছর আগের, এমন কথাও ওঠে।
ইংল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচ যে ডিউক বল দিয়ে খেলা হয়, তার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক এ নিয়ে তদন্ত করবেন, এমন খবরও আসে। যদিও পরে সেটি অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, এমন তদন্তের এখতিয়ার তাঁর নেই, তিনি এমন বলেনওনি।
তবে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও সিরিজ জিততে না পারা অস্ট্রেলিয়াকে যে বলবদলের ব্যাপারটি তাড়া করে ফিরেছে, সেটি স্পষ্টই। ওয়ার্নারের সাম্প্রতিক টুইটও সেটিই বলে। অবশ্য টেস্ট ম্যাচে এক সময়ে একটি বলে খেলা হলেও ফুটবলে সেটি হয় না, ওয়ার্নারের সেটি জানার কথা।
বার্মি আর্মির সঙ্গেও ওয়ার্নারের আলাদা ইতিহাস আছে। ইংলিশ সমর্থকগোষ্ঠীর খোঁচা ক্যারিয়ারে কম সহ্য করেননি ওয়ার্নার। বিশেষ করে, কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর বার্মি আর্মির ‘বিশেষ লক্ষ্যে’ পরিণত হন তিনি। অবশ্য ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজের শেষ টেস্ট ইনিংসে ব্যাটিং করে ফেরার পথে ওভালের অভিবাদনও পেয়েছিলেন।
এখন বার্মি আর্মি ওয়ার্নারের এ টুইট কীভাবে নেয়, দেখার বিষয় সেটিই। কিন্তু বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের জ্বর যে দুই দেশকেই ছুঁয়ে গেছে, সেটিও বোঝা যাচ্ছে ভালোভাবেই।
সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় আগামীকালের ম্যাচে ফেবারিট হওয়ার কথা ইংল্যান্ডেরই। সবশেষ ইউরোর চ্যাম্পিয়নরা র্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ছয় ধাপ এগিয়ে। তবে ফ্রান্সকে অবিশ্বাস্য টাইব্রেকারে হারিয়ে আসা অস্ট্রেলিয়াও আত্মবিশ্বাসে উত্তুঙ্গ। স্বাগতিক সমর্থকদেরও একপক্ষীয়ভাবেই পাশে পাবে তারা।
কিন্তু আত্মবিশ্বাস কমছে না ইংল্যান্ডেরও। মিডফিল্ডার কিরা ওয়ালশ যেমন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিতে চান তাঁরা, ‘আপনার পাশে দর্শকেরা থাকলে সেটি বাড়তি প্রেরণা দেয়। তবে যখন এর বিপক্ষে খেলবেন, তখন দর্শকদের আপনি স্তব্ধ করে দিতে পারবেন। এ ব্যাপারটিও ভালো লাগার।’
আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায় শুরু হবে এ সেমিফাইনাল। এর আগে আজ মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি স্পেন ও সুইডেন। অকল্যান্ডে এ ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটায়।