আমির তাঁকে ফেরানোর কৃতিত্ব দিলেন শাহিন আফ্রিদিকে
পাকিস্তান ক্রিকেট প্রশাসনে পালাবদলের সর্বশেষ অধ্যায় শেষে অবসর ভেঙে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন মোহাম্মদ আমির। ইচ্ছা প্রকাশের পর পাকিস্তান প্রথম যে দল দিয়েছে, সেখানেই অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাঁকে। প্রায় সাড়ে ৪ বছর পর অবসর ভেঙে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন আমির গত পরশু। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে বল হাতে নেওয়া হয়নি এই ফাস্ট বোলারের। ২ বল হওয়ার পর ম্যাচটি যে ভেসে গেছে বৃষ্টিতে।
সেই ম্যাচের পর সেভাবে তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে কথাও বলা হয়নি আমিরের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ফেরা নিয়ে আমির কথা বলেছেন গতকাল প্রকাশিত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে। সেখানে আমির তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরানোর কৃতিত্ব পিসিবি ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে দিয়েছেন গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া শাহিন শাহ আফ্রিদিকেও।
ইউটিউবের ভিডিওতে আমির বলেছেন, ‘(আমাকে ফেরানোর) কৃতিত্ব পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ও শাহিনের। তারা আমার ওপর আস্থা রেখে ফিরিয়েছে। তাদের আস্থা পূরণের একটা চাপ আমি অনুভব করছি।’ সেই চাপ কতটা, এটা বোঝাতে গিয়ে আমির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ সিরিজটিকে তুলনা করেছেন নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের অভিষেক সিরিজের সঙ্গে, ‘আমি প্রায় চার বছর পর ফিরছি। আপনি যখন নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন, মুহূর্তটা অন্য রকম। সত্যি বলতে কি, এটা আমার কাছে অভিষেক সিরিজের মতো লাগছে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমিরের আবির্ভাব ২০০৯ সালে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ইংল্যান্ডের কাছে পাকিস্তানের হেরে যাওয়া সেই ম্যাচে আমির ৪ ওভার বোলিং করে ৩১ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। তরুণ আমির সব মিলিয়ে সেই বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ খেলে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। পাকিস্তানও জিতেছিল শিরোপা। তাঁর টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক সে বছরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আবির্ভাবেই প্রতিভার ঝলক দেখানো আমির ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে নিষিদ্ধ হন, জেলও খাটেন।
সাজা ও নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ করে আমির আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। পরের বছর পাকিস্তানের হয়ে জেতেন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের ওপর অভিমান করে ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছিলেন আমির। আরেকটি আইসিসির ইভেন্ট দুয়ারে দাঁড়িয়ে, এ বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে অবসর ভেঙে আবার পাকিস্তান দলে ফিরেছেন এই ফাস্ট বোলার। তাহলে কি আমিরকে নিয়ে এবারও ট্রফি জিতবে পাকিস্তান?
আমির আরেকটি ট্রফি জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। আর তাঁকে যে অল্প সময়ের জন্যই দলে ফেরানো হয়েছে, ইউটিউব ভিডিওতে তিনি সেটাই বলেছেন, ‘আমি প্রথম আসি ২০০৯ সালে এবং পাকিস্তান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর আমি ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলি, আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। পিসিবি ম্যানেজমেন্ট আমাকে অল্প সময়ের জন্য, মানে বিশ্বকাপের জন্য ফিরিয়েছে।’
কেন তাঁকে বিশ্বকাপের জন্য ফেরানো হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিলেন আমির, ‘সাম্প্রতিক টুর্নামেন্টগুলোয় পাকিস্তান দল সেমিফাইনাল ও ফাইনালে খেলেছে। একটা লাইন আছে (টুর্নামেন্ট জেতা), এটা আমাদের অতিক্রম করতে হবে। এই অর্জন যদি হয়েই যায়, তাহলে সেই দলে থাকার জন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করব।’ কিন্তু বিশ্বকাপের মতো একটি টুর্নামেন্ট খেলার মতো ফিট কি আছেন ৩২ বছর বয়সী আমির? এটা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি, ‘আমি মনে করি, ২০১৯ সালের তুলনায় এবার আমার ফিটনেস ভালো। ফিট না থাকলে আপনি যতই দক্ষতাসম্পন্ন হোন না কেন, মাঠে নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন না। এখন আমার যা ফিটনেস আছে, আমি বিশ্বাস করি, দলের জন্য দারুণ কিছু করতে পারব।’