ভারতের চুক্তিতে নেই কিষান-আইয়ার, পান্ডিয়া কীভাবে আছেন
এক্সে (সাবেক টুইটার) সরাসরিই হার্দিক পান্ডিয়ার নাম নিয়েছেন ইরফান পাঠান। বিসিসিআইয়ের নির্দেশনার পরও রাজ্য দলের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে না খেলায় ঈশান কিষান ও শ্রেয়াস আইয়ারকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে না খেলেও চুক্তিতে আছেন পান্ডিয়া। বিসিসিআই যে চিন্তা থেকে কিষান–আইয়ারকে ‘শাস্তি’ দিয়েছে, সেটি সবার ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত না হলে লক্ষ্য অর্জিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার।
পাঠান আসলে সেটিই তুলে ধরেছেন, যা নিয়ে তিন দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলছেন ভারতের অনেক ক্রিকেট অনুরাগী। জাতীয় দলের খেলায় না থাকলে সব ফিট ক্রিকেটারদের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে খেলতে হবে বলে জোরালো বার্তা দিতে চাচ্ছে বিসিসিআই। কিন্তু কারও বেলায় শাস্তি, আর কারও বেলায় চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
৩০ বছর বয়সী পান্ডিয়া গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে গিয়েছিলেন। এরপর অনুশীলনে ফিরলেও রঞ্জি ট্রফির দলে যোগ দেননি তিনি। গত মাসে প্রকাশিত এক ভিডিওতে পান্ডিয়াকে তাঁর আইপিএল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের সতীর্থ কিষানের সঙ্গে অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছিল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কিষান ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আইয়ার ২০২৩ সালজুড়ে ভারতের হয়ে তিন সংস্করণে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে পান্ডিয়া খেলেছেন শুধু ৫০ ওভার ও ২০ ওভারের ক্রিকেট।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, রঞ্জিতে না খেলার দায়ে দুই ব্যাটসম্যানকে চুক্তিতে না রাখা হলে পান্ডিয়াও–বা কীভাবে জায়গা পান—এমন প্রশ্ন উঠেছিল বিসিসিআইয়ের ভেতরেও।
পান্ডিয়া বোর্ডকে আশ্বস্ত করেছেন, জাতীয় দলের খেলায় না থাকলে সৈয়দ মুশতাক আলী টি–টোয়েন্টি এবং বিজয় হাজারে ট্রফিতে তিনি অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া ফিটনেস যাচাইয়ের অংশ হিসেবে নিয়মিতভাবে ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে উপস্থিতও থেকেছেন তিনি।
পান্ডিয়াকে ‘গ্রেড এ’ চুক্তিতে রাখা নিয়ে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমরা পান্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। সে জানিয়েছে ঘরোয়া সাদা বল ক্রিকেটে খেলবে। আর বিসিসিআইয়ের চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণ বলছে, পান্ডিয়া এখন লাল বলের টুর্নামেন্টে বোলিং করার অবস্থায় নেই। যে কারণে ওর ক্ষেত্রে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার সুযোগ নেই। তবে ভারতীয় দলের সঙ্গে না থাকলে সাদা বলের টুর্নামেন্ট খেলতে হবে তাঁকে। যদি না খেলে, তাহলে চুক্তি হারিয়ে ফেলবে।’
২০১৭ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ১১টি টেস্ট খেলেছেন পান্ডিয়া। যার সর্বশেষটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে।
রোহিত–কোহলিকেও রঞ্জিতে খেলতে হবে
রঞ্জিতে না খেলার শাস্তি হিসেবে কিষান–আইয়ারকে চুক্তিতে না রাখার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে মনে করেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের এই ক্রিকেটার পিটিআইকে বলেন, রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলিরও রঞ্জিতে খেলা উচিত, ‘এটা ভালো সিদ্ধান্ত। সবারই রঞ্জিতে খেলা উচিত। তবে এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আইপিএলকে। এটাও ভালো। বিনোদন আছে। কিন্তু সত্যিকারের ক্রিকেট পাঁচ দিনেরটাই। যখনই আপনার সময় থাকবে, এমনকি রোহিত শর্মা বা বিরাট কোহলি হলেও, আপনাকে রাজ্য দলের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা উচিত।’
২০১১ সালে টেস্ট অভিষেকের পর এ পর্যন্ত রঞ্জিতে মাত্র একটি ম্যাচই (২০১২) খেলেছেন কোহলি। আর রোহিতের সর্বশেষ ম্যাচটি ২০১৫ সালে। আজাদের মতে শাস্তি সবার ক্ষেত্রেই সমান হওয়া উচিত, ‘রাজ্য দলই আপনাকে খেলোয়াড় হিসেবে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়। প্রথমে তারাই দলে নেয়, এরপর জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। শুধু দুইজনকে শাস্তি দিলেই হবে না, সবাইকেই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সবাইকে একই আয়নায় দেখতে হবে।’