বাংলাদেশের মেয়েদের দুশ্চিন্তা ব্যাটিং ও ফিটনেস
ব্যাটিং–দুশ্চিন্তা তো ছিলই। নতুন করে বাংলাদেশ নারী দলে যোগ হয়েছে অসুস্থতা। সিরিজের শেষ ম্যাচ থেকে অসুস্থতার কারণে ছিটকে গেছেন স্বর্ণা আক্তার। অধিনায়ক নিগার সুলতানাও অসুস্থ। তবে তাঁর খেলা না–খেলা নির্ভর করছে ম্যাচের আগে ফিটনেস পরীক্ষার ওপর। ভারতীয় নারী দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব জানান দলের কোচ হাশান তিলকরত্নে।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। আগামীকালের সিরিজ–নির্ধারণী ম্যাচের আগে হাশানের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা নারী দলের ব্যাটিং নিয়ে, ‘ব্যাটিংটা বড় দুশ্চিন্তা। ওরা থিতু হয়ে আউট হচ্ছে। ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে থিতু হওয়া। আপনি ভালো শুরু পেয়ে গেলে সেটাকে কাজে লাগাতে চাইবেন।’
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে ২৯ ওভারের পর ৩ উইকেটে ১০৩ রান। ভেবেছিলাম, আমরা সঠিক পথেই আছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে সে সময় আমরা পিংকিকে (ফারজানা হক) হারিয়েছি। আমরা সেখানেই ম্যাচ হেরে গিয়েছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’
ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ নারী দলের ব্যাটিংয়ে সন্তুষ্ট নন কোচ। ব্যাটারদের ডট বল খেলার প্রবণতাও ব্যাটিংয়ে পিছিয়ে পড়ার আরেক কারণ মনে করছেন এই শ্রীলঙ্কান কোচ, ‘সমস্যা হলো, আমরা অনেক ডট বল খেলছি। পাওয়ারপ্লেতে অনেক পিছিয়ে থাকছি। এ নিয়ে কথা হয়েছে। আশা করি, ওরা সামনে ভালো করবে।’
মেয়েদের বড় ইনিংস খেলার ক্ষেত্রে আরেকটি বড় বাধা ফিটনেস। যে কারণে ব্যাটিং–কৌশল ভালো হওয়ার পরও লম্বা ইনিংস খেলতে পারছেন না কেউই, ‘ওরা টেকনিক্যালি সাউন্ড। কিন্তু লম্বা ইনিংস খেলার যে মানসিকতা, সেখানে কাজ করতে হবে। আর ফিটনেসের মান গড়পড়তা মানের চেয়েও কম। আমাদের ফিটনেস ট্রেনার এসেছে ইংল্যান্ড থেকে। সে কাজ করবে। এই সিরিজ শেষে ৬ সপ্তাহের একটা ফিটনেস ক্যাম্প হবে।’
এত কিছুর পরও জয়ের আশা দেখছেন নারী দলের প্রধান কোচ। আর জিততে পারলে প্রথমবারের মতো ভারতকে সিরিজে হারানোর ইতিহাস গড়বে নিগার সুলতানার দল। সেই ইতিহাসের অংশ হতে কে না চাইবে! হাশান যেমন বললেন, ‘মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী, দ্বিতীয় ম্যাচটি আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি। এরপর আমাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। আমরা কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি৷ এখন পারফরম্যান্সের দায়িত্ব ওদের। ক্রিকেটাররা খুব আত্মবিশ্বাসী। আশা করছি, কালকে ভালো পারফরম্যান্স নিয়ে ঘুরে দাঁড়াব।’
হাশানের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসা ফাহিমা খাতুনকেও বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হলো। তিনি ভরা মিরপুরেই ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে চান, ‘বোর্ডের কাছে আমাদের সব সময় চাওয়া ছিল, আমরা মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলব। তারা আমাদের আশা পূরণ করেছে, আমাদের কথা রেখেছে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি জেতার পর আমরা দেখেছি, প্রথম ওয়ানডেতে অনেক দর্শক এসেছে। আমি আশা করব, কালকে যেহেতু সিরিজ–নির্ধারণী ম্যাচ, অনেক দর্শক হবে এবং আমরাও দর্শকদের একটা আশানুরূপ ফল দিতে পারব।’